ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি,০১ এপ্রিল ২০২০ : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পরিচয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গণহারে চাঁদাবাজির সময় সোহেল রানা নামক সিএমপির এক পুলিশ কনস্টেবলসহ তিনজনকে আটক করে গণধোলাই দিয়েছে জনতা। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বড়কুমিরা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে তিন যুবক উপজেলার কুমিরা বাজারে একটি প্রাইভেটকারযোগে উপস্থিত হয়। এরপর তাদের মধ্যে একজন নিজেকে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা তাদেরকে লকডাউনের মধ্যে দোকান খোলার কারণ কি?
এমন প্রশ্ন করে ধমকাতে থাকে। যুবকটির প্যান্টের পাশে পিস্তলের বাক্স থাকায় তাকে সিভিল পুলিশ মনে করে ভয় পেয়ে যায় ব্যবসায়ীরা। এই সুযোগে সে ডাল-চাল মিয়া মাজার রোডস্থ অন্তত ১২-১৫টি দোকান থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা হাতিয়ে নিতে থাকে। এমনকি কয়েকজন দোকানদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোহেল রানা জোর জবরদস্তি তাদের ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা লুটে নিতে থাকে।
এক পর্যায়ে এ খবর আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোর্শেদুল আলম চৌধুরী, ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আলাউদ্দিনসহ স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন এলাকাবাসী তিনজনকেই আটক করে গণধোলাই দিয়েছে।
পরে তাদেরকে আটক রেখে সীতাকুণ্ড থানায় খবর দিলে ওসি মো. ফিরোজ হোসেন মোল্লা, ওসি (তদন্ত) শামীম শেখ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সেখানে ছুটে যান। তারা জনতাকে শান্ত করে এলাকাবাসীকে সাক্ষি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি জানিয়ে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। আটককৃত সোহেল রানা বর্তমানে দামপাড়া পুলিশ লাইনে আছে। তার বাড়ি খাগড়াছড়ি।
কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোর্শেদুল আলম চৌধুরী ও ইউপি সদস্য মো. আলাউদ্দিন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, মো. সোহেল নামক চট্টগ্রাম মেট্টো পলিটন পুলিশের এক কনস্টেবল মো. সোহেল রানা, তার একজন সোর্স ও গাড়ি চালক নিয়ে কুমিরা ডালমিয়া মাজার রোডের বিভিন্ন দোকানিকে লকডাউনের সময় খোলা রাখায় মামলার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা হাতিয়ে নিতে থাকে। যারা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় তাদের ক্যাশ থেকে জোর করে টাকা লুট করতে থাকে তারা। একজন পুলিশ ক্যাশ থেকে নিজ হাতে টাকা লুট করছে শুনে আমাদেরও সন্দেহ হয়।
এর আগে তারা জোড়ামতল বাজারেও চাঁদাবাজি করেছে। আমরা ঘটনাস্থলে আসার আগেই এলাকাবাসীও বিষয়টি সন্দেহ করে তাদেরকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লা ও ওসি তদন্ত শামীম শেখ এসে তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড থানার ওসি ফোন ধরেননি। আর ওসি (তদন্ত) শামীম শেখ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক অফিসার বলেন, সে সিএমপির একজন কনস্টেবল অথচ চাঁদা তুলতে এসেছে সীতাকুণ্ডে। তাও সীতাকুণ্ড থানার অফিসার পরিচয়ে। যদি জনতার হাতে সে আটক না হতো তবে দায় এসে পড়ত সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের ওপর। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।