ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ষ্টাফ রিপোর্টার,৩০ মার্চ : বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসের সময়েও গুজব থেমে নেই। থানকুনি পাতার রস খেলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হবে না, এ গুজব চাউর হয়েছিল সম্প্রতি। তাই, থানকুনির খোঁজে দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকায় মধ্যরাতে ঘর থেকে বের হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অথচ, করোনো প্রতিরোধে সবার আগে দরকার সচেতনতা।
এভাবে বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য দিয়ে কিংবা ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় মাধ্যম ব্যবহার করে গুজব ছড়িয়ে দেয় স্বার্থান্বেষী মহল। সাধারণ মানুষও যাচাই না করেই তা বিশ্বাস করতে শুরু করেন। একসময়ে তা তারা নিজের ভার্চুয়াল জগতে শেয়ার করেন। এভাবে ফেসবুকের এক পেজ থেকে অন্য পেজে ছড়িয়ে যায়। গুজব ভাসতে থাকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। একসময় তা ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর যখন বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন জাগে, তখনই বিচার-বিশ্লেষণ শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত প্রকৃত সত্য যখন উদঘাটন হয়, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। মাঝখানে সমাজ বা জাতিকে দিতে হয় ভুলের কড়া মাশুল।
এ বিষয়ে সরকার বিভিন্ন সময়ে সতর্কবার্তা দিয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে মূলধারার গণমাধ্যম—টেলিভিশন, পত্রিকা কিংবা অনলাইন নিউজ পোর্টাল। গুজব রোধে সচেতনতার পাশাপাশি মূলধারার গণমাধ্যমে চোখ রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকেও গণমাধ্যমে প্রচারিত নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেশাবাসীকে গুজবে কান না দিয়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান। গত ২৭ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আপনারা কোনো প্রকার গুজবে কান দেবেন না। সঠিক তথ্যের জন্য প্রচলিত গণমাধ্যম তথা টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদপত্রের মাধ্যমে প্রচারিত সরকারি নির্দেশনা মেনে চলুন। প্রয়োজনে সরকার নির্দেশিত হটলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করুন। মতলববাজ, গুজব সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে প্রশাসনকে অবহিত করুন। এ ধরনের গুজব শুধু আমাদের সংকটকে আরো ঘনীভূত করবে।
করোনার থাবায় পত্রিকার সার্কুলেশন নেমে এসেছে এক তৃতীয়াংশে। সম্পাদকরা বলছেন, করোনার মতো মহামারি মোকাবিলায় সাধারণ মানুষের তথ্য শক্তি হিসেবে কাজ করবে পত্রিকা। গুজব আর দুঃসময় কাটিয়ে সুদিন ফিরবেই।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়, তা থেকে যদি পরিত্রাণ পেতে চাই, তাহলে মূলধারার সংবাদমাধ্যম প্রকাশ ও প্রচার অব্যাহত রাখতে হবে। মানুষের কাছে খবর পৌঁছে দিতে হবে।
গণমাধ্যমে ব্যক্তিত্ব ও ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কমের উপদেষ্টা এস আই চৌধুরী বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত কঠিন পরিস্থিতিতে পাঠকসহ সবার অধিক দায়িত্বশীল ও সচেতন হওয়া জরুরি। কারণ, এ ধরনের পরিস্থিতিতে অনেক গুজব ছড়াবে। সবার উচিত মূলধারার গণমাধ্যমের সঙ্গে থাকা। কারণ, মূলধারার গণমাধ্যম পাঠক-শ্রোতা-দর্শক ও দেশের প্রতি দায়বদ্ধ। মূলধারার গণমাধ্যমে জবাবদিহিতা থাকে সব সময়। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে অনেক যাচাই-বাছাই শেষে সংবাদ পরিবেশন করা হয়।