নঈম নিজাম :
আমার বিনোদন রিপোর্টার এলো রুমে। বলল, বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি ছবির কভারেজ চায় একজন। বললাম, সমস্যা কী, ভালোভাবে দিয়ে দাও। ভাবলাম, শ্যাম বেনেগালের ছবিটির কথা বলছে। আমরা এ ছবি নিয়ে বেশ কিছু ভালো রিপোর্ট করে আসছি শুরু থেকে। একটু পরে জানলাম, শ্যাম বেনেগালের ছবি নয়, বঙ্গবন্ধুর ওপর সিনেমার কাহিনি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা। তিনি ছবি করছেন ঢাকাই ছবির দুই পড়তি নায়ক-নায়িকা নিয়ে। হাসব না কাঁদব, বুঝতে পারছি না। চুপসে গেলাম। মহাত্মা গান্ধীর ওপর ছবি নির্মিত হয়েছে ১৯৮২ সালে। ইতিহাসভিত্তিক অসাধারণ একটি ছবি। জন ব্রেইলির চিত্রনাট্য নিয়ে ছবিটি পরিচালনা করেছেন ইংরেজ নির্মাতা রিচার্ড অ্যাটেনব্রো। গান্ধী চরিত্রে অভিনয় করেন ব্রিটিশ অভিনেতা বেন কিংসলি। শক্তিমান একজন অভিনেতা। গান্ধী চরিত্রে অভিনয়ের আগে নিজেকে পরিপূর্ণভাবে তৈরি করেন খাপ খাওয়াতে। ছবির সব অভিনেতা, অভিনেত্রী, নির্মাতা এ উপমহাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য মুখস্থ করেছেন। শিল্পনির্দেশক প্রতিটি চেহারা ও চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন নিবিড়ভাবে। ছবিতে সে সময়ের ইতিহাসও তুলে আনতে পরিচালক ও কাহিনিকারকে ঘাম ঝরাতে হয়েছে। ছবির একটি দৃশ্যে আছে- দুই বাংলায় দাঙ্গার সময় মহাত্মা গান্ধী ভীষণ কষ্ট পান। তিনি দাঙ্গা বন্ধে অনশন শুরু করেন। তাঁর শরীর-মন ভেঙে পড়ে। সবাই ছুটে আসছেন অনুরোধ নিয়ে, গান্ধী কারও কথা শুনছেন না। জওহরলাল নেহরু দাঁড়িয়ে আছেন। এ সময় বাংলার খবর নিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গেলেন দেখা করতে। নেহরু গান্ধীকে বললেন, ‘বাপুজি! কলকাতা থেকে সোরবাউদ্দি এসেছে।’ তিনি চোখ মেলে তাকালেন। গান্ধী ছবিটি সারা দুনিয়ায় গ্রহণযোগ্যতা পায়। আমরা কি আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে তেমন কিছু আশা করতে পারি না? গান্ধীর যাত্রা আফ্রিকা থেকে। ভারত বিভক্তির সময় কলকাতার দাঙ্গা দমনে বঙ্গবন্ধু সাহসী ভূমিকা রাখেন। বেকার হোস্টেল থেকে তাঁর যাত্রা। এরপর অন্যায়-অসংগতির বিরুদ্ধে সারাটা জীবন লড়ে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষমতার পরিবর্তে মুক্তিযুদ্ধ বেছে নেন। দেশটা স্বাধীন করেন। তাই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তৈরি করা ছবিও দুনিয়া কাঁপাতে হবে। আগামী প্রজন্মের সামনে তুলে আনতে হবে সংগ্রামী ইতিহাস। এ কারণেই দরকার বিশ্বমানের নির্মাতা। আমি শ্যাম বেনেগালকে নিয়ে আশাবাদী। বঙ্গবন্ধুকন্যা তাঁকে ছবি নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন। কাজও অনেক দূর এগিয়েছে। শ্যাম বেনেগাল অবশ্যই ভালো কিছু করবেন। তিনি বিশ্বখ্যাত একজন নির্মাতা। অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর টিমে অনেক দক্ষ মানুষ রয়েছেন। তাই শ্যাম বেনেগাল ছাড়া অন্য কারও এখন চলচ্চিত্র করার দরকার নেই। শ্যাম বেনেগালকে ছবিটি করতে দিন। সবার কবি হওয়ার দরকার নেই। প্রয়োজন নেই বঙ্গবন্ধুকে বাংলা ছবির পরিত্যক্ত নায়ক-নায়িকাদের পর্যায়ে টেনে আনার। কারও প্রতি আমার সম্মানের ঘাটতি নেই। কিন্তু বঙ্গবন্ধু আমাদের আবেগ। হৃদয়ের স্পন্দন। এ আবেগ ও স্পন্দন নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি মানতে কষ্ট হয়।
সেদিন অফিসে একজন এলেন। তাকে পাঠিয়েছেন ছাত্রলীগের একজন সাবেক নেতা। বললেন বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি বড় কাজ করবেন। সরকারি অনুমতি আছে। ৩২ নম্বরের অনুমতি আছে। এখন দরকার স্পন্সর। আমি বললাম, কাজ শেষ করুন ভালোভাবে। দোয়া থাকল। ভালো কিছু হলে কভারেজ দেব। পত্রিকা-টেলিভিশনে ব্যাপক প্রচার করব। আপনার মঙ্গল কামনা করছি। ছেলেটি আমার কথায় খুশি হলো না। বলল, আপনার সঙ্গে ওমুক ভাইয়ের কথা হয়েছে কি? তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। আমি বললাম, ফোনে অবশ্যই কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আপনি কী একটা বড় কাজ করছেন। আমাদের কাছে সবাই কভারেজের জন্যই পাঠায়। আমি তো সেই কথাই বলছি। এবার তরুণ বিস্ময় নিয়ে তাকাল। তারপর বলল, আমার এ কাজে বড় স্পন্সর লাগবে। বললাম, একটা বিজ্ঞাপন দিয়ে দেব কি স্পন্সর লাগবে বলে? ছেলেটি বলল, না, তা নয়। আমি চাই আপনি স্পন্সর ম্যানেজ করে দেবেন। হতাশা নিয়ে আমি তাকালাম। আজকাল শরীর-মন ভালো যাচ্ছে না। চরম হতাশা থেকে বললাম, পত্রিকা অফিস চালাই। স্পন্সর কীভাবে করব? তরুণ থামছে না। বলল, আরে ভাই! পত্রিকা থেকে কেন করবেন! আপনাদের মূল গ্রুপ থেকে করিয়ে দিন। এই সামান্য কাজটুকুর আশা তো করতেই পারি। মেজাজ কিছুটা খারাপ করেই বললাম, দুঃখিত, কিছু করতে পারব না। মন খারাপ করে ছেলেটি চলে গেল। আরেকজন ফোন করলেন কিছুদিন আগে। বললেন ১০০ অ্যাম্বুলেন্স দেবেন মুজিববর্ষ উপলক্ষে। শুনে মনটা ভরে গেল। বললাম, ভালো একটি কাজ করছেন। ভীষণ খুশি হয়েছি শুনে। আমাদের টিভি-পত্রিকায় ভালো কভারেজ হবে। গ্যারান্টি দিচ্ছি। এবার বললেন আসল কথা। আরে ভাই! আপনাদের সামনে রেখেই এই ঘোষণা করেছি। ১০০ অ্যাম্বুলেন্সের একটি আপনি আপনার গ্রুপ থেকে ম্যানেজ করে দিন। বুঝলাম আসল কাহিনি। আমার কাছে কেউ নিউজ চায় না। পরে আমার সহকর্মীরা বললেন, শুধু আপনার কাছেই নয়, এখন সবখানে কিছু লোক ভিড় করছে। তারা ভাবছে, এই তো সুবর্ণ সুযোগ। একটু বাণিজ্য করে নিই। দোহাই লাগে, এই বাণিজ্যচিন্তার লোকগুলোকে থামান। ইতিহাসের মহানায়ককে নিয়ে কেউ সস্তা কিছু করবেন না। মুজিববর্ষের নামে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সস্তা নাটক, সিনেমা, মিউজিক ভিডিও বানাবেন না। ব্যবসা-বাণিজ্য করবেন না। কিছু করতে হলে বিশ্বমানের করুন। ১০০ বছর পরের চিন্তা মাথায় রেখে করুন। বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির জনক। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁকে নিয়ে যা খুশি তা করা যায় না। এর মাঝে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশ দিয়েছেন তাঁর মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সতর্ক করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও। আশা করছি এ সতর্কবার্তায় কাজ হবে। ঘাটে ঘাটে ধান্ধার আশায় থাকা মানুষগুলো অপতৎপরতা বন্ধ করবে।
বর্তমান বাস্তবতায় অতীতের একটি ঘটনা মনে পড়ছে। ১৯৮৯ সালের কথা। আমির হোসেন ভাই ‘এই সময়’ নামের একটি কাগজ বের করতেন। এ কাগজে আমি লিখতাম। ১৫ আগস্টের আগে তিনি আমাকে কিছু টাকা দিলেন। বললেন, একটু টুঙ্গিপাড়ায় যাও। জাতির জনক কেমন আছেন টুঙ্গিপাড়ায় দেখে আসো। ঘুমিয়ে থাকা হিমালয়কে দেখে ফিরে এসে একটা প্রচ্ছদ প্রতিবেদন করে দিও। তাঁর কণ্ঠস্বরে ছিল আবেগ। সন্ধ্যায় ছোট্ট একটা ক্যামেরা নিয়ে গুলিস্তান থেকে উঠলাম গোপালগঞ্জের বাসে। আরিচা ফেরি পার হলাম ঘুমাতে ঘুমাতে। টেকেরহাটে তখনো ব্রিজ হয়নি। ফেরি ছিল। ভোরে ভোরে নামলাম গোপালগঞ্জে। মাঝরাতে ভাত খেয়েছি ফেরিঘাটে টাটকা মাছ দিয়ে। সকালে গোপালগঞ্জ শহরে একটি ছোটখাটো রেস্টুরেন্টে নাশতা সারলাম ভাজি আর পরোটা দিয়ে। তারপর ইঞ্জিনের নৌকায় চড়ে টুঙ্গিপাড়ায়। সাধারণ নৌকাও ছিল। জানলাম, ইঞ্জিনের নৌকা বেশি দিন আগে চালু হয়নি। সবাই পরামর্শ দিল- এ নৌকায় গেলে দিনে দিনে ফিরতে পারবেন। টুঙ্গিপাড়ায় থাকার মতো কিছু নেই। মধুমতির তীরে থামল আমাদের নৌকা। সামান্য পথ। অন্যদের সঙ্গে আমিও উঠলাম ভ্যানে। নামলাম জাতির জনকের বাড়ির সামনে। আমাকে দেখে এগিয়ে এলেন বৈকুণ্ঠনাথ, এ বাড়ির তখনকার কেয়ারটেকার। দারুণ মানুষ, মনে হলো কত দিন থেকে চেনেন। ভীষণ আন্তরিক। পুরো বাড়ি ঘুরে ঘুরে দেখালেন। পুরাতন, নতুন বাড়ি, মধুমতি নদীর তীর কোনো কিছু বাদ নেই। বঙ্গবন্ধু কোথায় থাকতেন, বাড়ি এলে কী করতেন সব বললেন। ছবি তুললাম তাঁর সঙ্গে। জিয়ারত সারলাম আমি। দেখা হলো শেখ শহীদুল ইসলামের বাবার সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে কথা বললাম। এর মাঝে একজনকে নিয়ে এলেন বৈকুণ্ঠনাথ। বললেন, উনার সঙ্গে কথা বলুন। অনেক কিছু পাবেন। তিনি অনেক কিছুর সাক্ষী। সাক্ষাৎকার নিলাম সেই মানুষটির। দাফনের সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর লাশ প্রথম দেখেন। তারপর গোসল করান বাড়িতে থাকা ‘৫৭০’ সাবান দিয়ে। সেই বর্ণনা দেন আমার কাছে। সেনা সদস্যরা তাড়াহুড়া করছিলেন। আগত পুলিশ চুপচাপ। সেনা সদস্যদের ধমক উপেক্ষা করেই শেষ গোসল ভালোভাবে শেষ করেন। এরপর বাড়িতে থাকা সাধারণ কাফনের কাপড় পরান। উপস্থিত কয়েকজনকে নিয়েই জানাজার নামাজ শেষ করে দোয়া করে দাফন সম্পন্ন করেন। আহারে! বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতার দাফন হলো নীরবে। কেউ জানল না, কেউ দেখল না। যাঁর ডাকে সাড়ে ৭ কোটি মানুষ যুদ্ধে অংশ নেয়, তাঁর দাফন হলো সাদামাটা!
বৈকুণ্ঠনাথের কাছে জানতে চাইলাম মানুষজন কেমন আসে মাজার জিয়ারতে। তিনি বললেন, বর্ষাকালে তেমন কেউ আসে না। নেত্রী এলে অনেক ভিড় হয়। তবে বিভিন্ন দিবসে বিশেষ করে ১৫ আগস্ট স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আসেন। আশপাশ জেলার মানুষও আসে। ’৮১ সালে নেত্রী দেশে ফেরার পরই সবকিছু স্বাভাবিক হয়। এর আগের পরিস্থিতি ভালো ছিল না। একটা ভয় কাজ করত সবার মাঝে। তবে সে সময়ও গোপনে কিছু মানুষ আসত। চুপচাপ মাজার জিয়ারত করত। চোখের পানি মুছত। আর কাঁদতে কাঁদতে চলে যেত। অনেক দিন সবকিছু ছিল সরকারি লোকজনের পাহারায়। অযত্নে, অবহেলায় পড়ে ছিল সবকিছু। পরে পরিবারের সদস্যরাই সবকিছু স্বাভাবিক করেন। দুপুরে আমি রিকশাভ্যানে চড়ে খেতে গেলাম পাটগাতী বাজারে। তাজা মাছ দিয়ে ভাত খেলাম। তারপর ফিরে এলাম বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে। বৈকুণ্ঠদা আমাকে বিকালের ইঞ্জিনচালিত নৌকায় তুলে দেন গোপালগঞ্জের পথে। মধুমতি নদী পানিতে থৈথৈ। এ নদীর সঙ্গে মিশে আছে বঙ্গবন্ধুর অনেক স্মৃতি। এখানেই তাঁর জীবনের শুরু। এখানে এসেই মিশে গেছেন আবার। একটি অবহেলিত, বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে জাগিয়েছেন তিনি। সেই লড়াইয়ে জিতলেন। দেশটা স্বাধীন করলেন। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির স্বপ্ন বাস্তবায়নের চূড়ান্ত মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুকে আর বাঁচতে দেওয়া হলো না। নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডের পর খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে ঢাকায় রাখার সাহস পায়নি। তাই ধানমন্ডি থেকে টুঙ্গিপাড়ায় নিয়ে যায়। লক্ষ্য ছিল জাতির জনককে দেশবাসীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা। কিন্তু বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতাকে সাধারণ মানুষের হৃদয় থেকে কি বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব? খুনিদের সে চেষ্টা সফল হয়নি। আগামী দিনেও হবে না। বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশ মানে বঙ্গবন্ধু। এ ইতিহাস যারা মানে না তারা বাংলাদেশকেও মানে না।
এখন অনেক কিছু বলতে চাই না। বলিও না। দেশের সবাই এখন আওয়ামী লীগ! সবাই বঙ্গবন্ধুভক্ত! তাই কম কথা বলা ভালো। তবে একটি কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাড়াবাড়িটা যেন না হয়। দল সরকারে থাকলে খুশি করার একটা প্রতিযোগিতা থাকে। সে প্রতিযোগিতা আমলারা করছেন এক ধরনের, নবাগত ভাই-বন্ধুরা করছেন আরেক ধরনের। এর মাঝে যুক্ত হয়েছে মুজিববর্ষে বাণিজ্যের চিন্তায় থাকা আরেক গ্রুপ। তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। কিন্তু সবারই বোঝা উচিত বঙ্গবন্ধুর জীবনটা আরাম-আয়েশের ছিল না। তিনি গরিব-মেহনতি মানুষের নেতা ছিলেন। বিত্ত-বৈভবের পেছনে যাননি। লড়েছেন মানুষের জন্য। জীবনের বড় অংশ কাটিয়েছেন কারাগারে। মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন। কোনো ভোগবিলাস, ক্ষমতার লোভ তাঁকে টানতে পারেনি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হননি। বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন। মানুষের প্রতি আস্থা ছিল। বুঝতেন সাধারণ মানুষ তাঁকে ভালোবাসে। তাই যার কাছে যা আছে তা নিয়েই মাঠে নামার আহ্বান রাখলেন স্বাধীনতার জন্য। শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধুকে পেয়েছি। আবার বঙ্গবন্ধু থেকে পেয়েছি জাতির জনক। বঙ্গবন্ধুর লেখাগুলো পড়ে মনে হচ্ছে, যদি তিনি শুধু লেখালেখি করতেন, বিশ্বকাঁপানো লেখক হতেন। এত ঝরঝরে হাত। পড়তে বসলে শেষ করে উঠতে হয়। বঙ্গবন্ধুর লেখা বইগুলো বারবার পড়েছি। বইগুলো আমাদের সবারই পড়া দরকার। বঙ্গবন্ধুর নামে মন্ত্রী, এমপি, নেতা হবেন, মুজিবকোট পরবেন, তাঁর নীতি অনুসরণ করবেন না তা কী করে হয়? হিমালয়-উচ্চতার একজন মানুষ সাধাসিধে জীবন কাটাতেন। প্রধানমন্ত্রী হয়ে থাকতেন ৩২ নম্বরের ছোট্ট একটি বাড়িতে। বঙ্গবন্ধু বলে মুখে ফেনা না তুলে তাঁর নীতি ও আদর্শ পালন করুন। হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করুন। এতেই শ্রদ্ধা জানানো হবে।
লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।