ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম, মিঠামইন প্রতিনিধি,২০ ফেব্রুয়ারি : কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার ধোবজোড়া গ্রামের ইদ্রিস আলী আপন দেহে বয়ে বেড়াচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের বেদনাত’ স্মৃতি । ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পাক বাহিনীর বুলেটে ইদ্রিস আলী আহত হন। সেই তখন থেকেই ইদ্রিস আলী তার শরীরে বুলেটের ক্ষতের উপযুক্ত চিকিৎসা নিতে পারছেন না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার গঠন করার পর বুলেটবিদ্ধ ইদ্রিস আলীর উপযুক্ত চিকিৎসা এবং মূল্যায়ন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নিদে’শ দেওয়ার পরও তিনি অবমূল্যায়িত স্থানে রয়েছেন।
কিশোরগঞ্জের হাওড়ে ধোবাজোড়া গ্রামটি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ঘাটি ।এই গ্রামে আশ্রয় নেন মহামান্য
রাষ্ট্রপতি আঃ হামিদ এর বড় ভাই এম এ গণি সহ ওনার আত্মীয় সজন। এই খবর পাশের গ্রামের কুখ্যাত রাজাকার কোরবান আলীর কাছে পৌঁছানোর পর ১৯৭১ সালে ১লা সেপ্টেম্বর সকালে কোরবান আলীর নেতৃত্বে পাক বাহিনীর দল গ্রামটি আক্রমণ করে।
ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে তখনকার কিশোর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী এম এ গণি সহ তাঁর সহযোদ্ধাদের কে নিয়ে এই গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে নৌকা চালিয়ে যাওয়ার সময় পাক বাহিনীর নজর পরে ইদ্রিস আলীর উপর এবং ঠিক সেই সময় নৌকার চালক ইদ্রিস আলীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে ।ঐদিন ধোবাজোড়া গ্রাম তল্লাশি করে বিশিষ্ট ২০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে যায় ইটনা পাকিস্তান ক্যাম্পে ।সেখানে তাদেরকে নিয়ে হত্যা করা হয়।
কিশোর বুলেটবিদ্ধ ইদ্রিস আলীর মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী দৈনিক সংবাদ ও প্রথম আলো পত্রিকায় ছাপা হলে প্রধানমন্ত্রী র কার্যালয় থেকে ইদ্রিস আলী কে মুল্যায়িত করার জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয় ।প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের স্মারক নং ৬২•১৩•০০০০০১•৯৯।
খণ্ড( ৪) ২৮২১ তারিখ ৭\১০\১৯৯৯ জেলা প্রশাসকের স্মারক নং ১৩-৪৩ [২] ১৯_৬৭৮ সাঃ তারিখ ২১|১০ ৯৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন মিঠামইন থানা নির্বাহী অফিসার ১৯৯৯ সালের ৮ নভেম্বর জেলা প্রশাসককে স্মারক নং ৪৪৮ মূলে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয় ইদ্রিস আলী মূল্যায়ন পাওয়ার উপযুক্ত অথচ আজও ইদ্রিস আলী অবমূল্যায়িত স্থানে পরে আছেন।
বুলেটবিদ্ধ ইদ্রিস আলী জানান মহামান্য রাষ্ট্রপতি যখন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ছিলেন তখন তাকে চিকিৎসার জন্য ৩ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশেষ অবদান থাকার পরও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম নেই। তিনি এখন ধোবাজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ঝাল মুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাতে পারলেও অর্থের অভাবে শরীরের চিকিৎসা নিতে পারছেন না।