ধানমন্ডিতে জোড়া খুনের ঘটনায় আটক ৩, সন্দেহে গৃহকর্মী

SHARE

রাজধানীর ধানমন্ডিতে এক গৃহকর্ত্রী ও তার গৃহকর্মীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।নিহত আফরোজা ক্রিয়েটিভ গ্রুপের ডেপুটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মনির উদ্দিন তারিমের শাশুড়ি। এ ঘটনায় কাজী মনির উদ্দিনের বডিগার্ড বাচ্চু এবং ভবনের ইলেকট্রিশিয়ান বেলায়েতকে আটক করেছে পুলিশ।এছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধানমন্ডি রোড নং ২৮, বাড়ি নং ২১-এ অবস্থিত ভবনের নিরাপত্তাকর্মীকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।এদিকে, এই জোড়া খুনের ঘটনায় আরেক গৃহকর্মীকে সন্দেহ করছে পুলিশ। শুক্রবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জোড়া খুনের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই বাসার সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে। ওই ফুটেজ দেখে এক নারীকে সন্দেহ করা হচ্ছে। পরে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারেন, ওই নারী নিহতের বাসায় নতুন গৃহকর্মী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিল। পুলিশ তাকে শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা করছে।

পুলিশের ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার হাসিনুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেয়েছি। বাসাটিতে যে নতুন গৃহকর্মী এসেছিল, তাকে আমরা সন্দেহ করছি। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে এখনও তার পরিচয় জানা যায়নি। যে ব্যক্তি তাকে এই বাসায় নিয়ে এসেছিল, তার মাধ্যমে ওই নতুন গৃহকর্মীর তথ্য এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ছবি পেয়েছি।’ঘটনার বিষয়ে ভবনের নিরাপত্তাকর্মী নূরুজ্জামান জানান, আটককৃত বাচ্চু আফরোজার গ্রামের পূর্ব পরিচিত এবং মনিরের বডিগার্ড। সে এই বাড়িতেই থাকতো। আজ বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বাচ্চু নতুন আরেক গৃহকর্মীকে নিয়ে বাসায় এসে আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে বাসা থেকে নেমে চলে যায়। এর ঠিক আধা ঘণ্টা পরে বাসা থেকে নেমে আসে নতুন ওই গৃহকর্মী। টাকা কম হওয়ায় সে কাজ করবে না বলে চলে যায়।পুলিশ জানায়, ফ্ল্যাটটি বিজিএমইএ’র পরিচালক ও বিশিষ্ট শিল্পপতি মনির উদ্দিনের। তিনি টিনটেক নামের একটি গার্মেন্টসের মালিক। ছয়তলা ভবনটির ৫ তলায় এফ-৪ ফ্ল্যাটে এই ঘটনা ঘটেছে। ফ্ল্যাটে মনির উদ্দিনের শাশুড়ি ও গৃহকর্মী থাকতেন। ভবনটিতে মনিরের মালিকানাধীন মোট চারটি ফ্ল্যাট আছে।আফরোজা বেগমের ওপরের ফ্লোরে থাকেন তার মেয়ে দিলরুবা। বিকেলে মা ফোন না ধরায় তিনি তার গৃহকর্মী রিয়াজকে নিচে গিয়ে দেখে আসতে বলেন।রিয়াজ জানান, আফরোজা বেগমকে ফোনে না পেয়ে দিলরুবা তাকে পাঁচতলা থেকে চারতলায় গিয়ে দেখে আসতে বলেন। আমি গিয়ে দেখি, আফরোজা বেগম ফ্লোরে রক্ত মাখা অবস্থায় পড়ে আছেন। আমি দৌড়ে ওপরে গিয়ে বিষয়টি জানাই। তখন বাসার অপর গৃহকর্মী আপেল ও দিলরুবা ম্যাডাম চারতলায় আসেন।এ বিষয়ে নিহত আফরোজা বেগমের জামাই ও ফ্ল্যাটের মালিক শিল্পপতি মনির উদ্দিন তারিম সাংবাদিকদের বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর ফ্ল্যাটটি থেকে মোবাইল ও কিছু স্বর্ণালংকার খোয়া গেছে।এর আগে শুক্রবার রাতে ধানমন্ডির ফ্ল্যাটে গিয়ে নিহত আফরোজা বেগম ও দিতির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ধানমন্ডি থানার এসআই এনামুল হক জানান, ধারণা করা হচ্ছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের গলায় পোঁচ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, বাসা থেকে টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে তাদের হত্যা করা হতে পারে। তাদের ফ্ল্যাটের আলমারি খোলা ও এলোমেলো ছিল।