তিন কেজি চালের দামে মেলে এক কেজি টমেটো

SHARE

491‘তিন কেজি চালের দামে কিনতে পাওয়া যায় এক কেজি টমেটো। মানুষ টমেটো কিনে খাবে তারও সুযোগ নেই। কিছু কিছু বিক্রেতা নিজের ইচ্ছে মত দাম বসিয়ে রেখেছেন। দেখার কেউ নেই’- কথাগুলো জসিম উদ্দিন ব্যাপারি নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার।

শুক্রবার রাজধারীর রামপুরা কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে আসা জসিম উদ্দিন এ ভাবেই তার কথাগুলো বললেন এ প্রতিবেদকের কাছে।

রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি এবং খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, ব্রোকলি, গাজর, শালগম, টমেটো, শিম, চিনা বাঁধাকপি, লাল বাঁধাকপি, ফ্রেঞ্চবিনসহ নানা রকম সবজির দাম পাইকারি বাজারে কম থাকলেও খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।

এক কেজি টমেটো কিনতে লাগছে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা। যদিও দেশীয় কাঁচা টমেটো পাওয়া যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যেই রয়েছে।

রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো ঘুরে দেখা যায় বিভিন্ন ধরনের চালের দাম কমেছে। কারওয়ান বাজারের চালের বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা,  মিনিকেট ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, বি আর (২৮) ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা, পারিজাত ৪০ থেকে ৪২ টাকা, নাজিরশাইল ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা, গুটি স্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, লাল স্বর্ণা ৩৭ টাকা, হাসকি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা ও লতা ৪১ থেকে ৪২ টাকা দরে বিক্রি হয়।

শুক্রবার রাজধানীর রামপুরা, শান্তিনগর, মালিবাগ এবং কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে কিছু সবজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহেও ৪০ থেকে ৫০ টাকায়ই বিক্রি হয়েছে। সব বাজরে শীতকালীন সবজি ভরপুর থাকলেও গত সপ্তাহের তুলনায় দাম তেমন একটা কমেনি।

কারওয়ান বাজারে পাইকারি কাঁচাপণ্যের প্রতিষ্ঠান সুমি বাণিজ্যালয়ের কর্মকর্তা জালাল আহম্মেদ জানান, শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছ প্রচুর এবং দামও কমেছে। তিনি জানান, এতোদিন হাইব্রিড বেশি থাকলেও এখন চাষিদের সবজির পরিমাণ বাড়ছে।

তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিনই শতাধিক সবজির ট্রাক বাজারে আসছে। ফলে দাম কমেছে ক্রেতাদের প্রত্যাশা মত।

রামপুরা কাচাঁবাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা কুদ্দুস সরকার জানান, চাল কুমড়া, মূলা, বাঁধাকপি, চিচিংগা, শসা, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে ও পটলের মত সবজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তাছাড়া ৩০ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে প্রতিটি ফুলকপি। বরবটি পাওয়া যাচ্ছে ৪০ টাকায়, করলা ৫০ টাকা ও বেগুন ৪০-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি। শীতের শাকও বিক্রি হচ্ছে নাগালের মধ্যে; প্রতি আঁটি মুলা শাক মিলছে ১০ টাকা ও লাল শাক ১৫ টাকায়।

শান্তিনগর বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বরাবরের মতই টমেটো মিলছে ১০০-১২০ টাকা কেজিতে ।

শান্তিনগরের খুচরা সবজি বিক্রেতা রহিম মিয়া জানান, শীতের মাঝামাঝিতে দেশি টমেটো বাজারে এলে টমেটোর দামও কমে যাবে।

এদিকে, প্রতি কেজি রুই মাছ মিলছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকার মধ্যে। ইলিশ হালি মিলছে ৮০০-১২০০ টাকায়। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিদরে।

পরিবর্তন নেই পেঁয়াজের দামে। ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও বড় আকৃতির চায়না পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে কেজি প্রতি ১০-১৫ টাকা। পাওয়া যাচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি দরে যা গত সপ্তাহে ছিলো কেজি  প্রতি ১৪০-১৪৫ টাকা।  অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি মাংস বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ টাকায়।

অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি খোলা আটা ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা, ২ কেজি ওজনের প্যাকেটজাত আটা ৭০ থেকে ৭২ টাকা, ময়দা ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, ২ কেজি ওজনের প্যাকেটজাত ময়দা ৮৮ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়।

ডালের মধ্যে প্রতি কেজি দেশি মসুর ডাল ১০৫ টাকা, ক্যাঙ্গারো ১১০ থেকে ১১৫ টাকা ও মোটা দানা ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়।

ভোজ্যতেলের মধ্যে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১১০ থেকে ১১৫ টাকা, ৫ লিটার বোতল ৫৭৫ টাকা, পাম ১০৬ টাকায় বিক্রি হয়।

এদিকে বিভিন্ন ধরণের মসলার মধ্যে দেশি আদা প্রতি কেজি ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, চায়না আদা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, রসুন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ২০০ থেকে ২৩০ টাকা এবং হলুদ ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়।