সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১১টায় ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদারের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এদিকে দেশে ফিরলেও পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ায় আদালতে অনুপস্থিতির জন্য মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে আবেদন জানান তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। তিনি জানান, সুস্থতা সাপেক্ষে আগামী ধার্য তারিখে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হতে পারেন। আদালত খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতির আবেদন মঞ্জুর করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাক্ষীর জেরা ও নতুন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের আদেশ দেন।
খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে থাকায় এর আগেও মামলায় কয়েকটি ধার্য তারিখে আদালতে হাজির হতে পারেননি। এ জন্য তার পক্ষে আইনজীবীরা হাজিরা প্রদান করেন। চিকিৎসার জন্য প্রায় দুই মাস লন্ডনে থেকে গত ২১ নভেম্বর দেশে ফিরেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এরপর গত ২৬ নভেম্বর মামলার ধার্য তারিখেও অসুস্থতার জন্য আদালতে হাজির হতে পারেননি তিনি।
তবে গত ৩০ নভেম্বর (সোমবার) নাইকো সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক এম আমিনুল ইসলাম নাইকো মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেয়।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আজ (বৃহস্পতিবার) ২২তম সাক্ষী (জব্দ তালিকার সাক্ষী) সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের এসইভিপি জিয়াউদ্দিন এম ঘুর্নিকে আসামিপক্ষে জেরা শুরু করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। খালেদা জিয়ার পক্ষে জেরা করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট আব্দুর রেজ্জাক খান। পর্যায়ক্রমে মামলায় ইতোপূর্বে সাক্ষ্য দেয়া ২৩ থেকে ২৫তম সাক্ষী ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার কামরুজ্জামান এবং দুদকের দুই কনস্টেবল মঞ্জুরুল হক ও সিরাজুল হককে জেরা করবে আসামিপক্ষ।
দুদকের পক্ষে আইনজীবী মোশররফ হোসেন কাজল বলেন, প্রধানমন্ত্রী থাকাকলীন খালেদা জিয়া এ ষ্ট্রাস্ট করেছেন। যা আইনত করা যায় না। ষ্ট্রাষ্টের অর্থ নিজেরা লাভবান হতে ব্যয় ও আত্মসাৎ করেছেন বলেও তিনি দাবি করেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় দুদক মামলা দায়ের করে। এ মামলায় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
গত ১৯ মার্চ দুই মামলায় খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩।