ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ঢাকা প্রতিনিধি,২৯ এপ্রিল : র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, জঙ্গি আস্তানায় কয়জন নিহত হয়েছে এ মুহূর্তে তা বলতে পারছি না। বাড়িটি লণ্ডভণ্ড অবস্থায় আছে। এখনো পুরো বাড়ি পরিষ্কার করা হয়নি। বাড়িটি পরিষ্কার করতে সময় লাগবে। এর পর নির্দিষ্ট করে নিহতের সংখ্যা বলা যাবে। তবে ঘরের মধ্যে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তিনটি পা দেখা গেছে। ধারণা করছি সেখানে অন্তত দুজন নিহত হয়েছে।আজ সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে বসিলার মেট্রো হাউজিংয়ে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানা পরিদর্শন করে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
র্যাব ডিজি বলেন, ‘আমাদের সদস্যরা কেয়ারটেকারকে বাড়ি থেকে বের করে এনে কথা বলেন। তখন আমাদের সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। আমরাও পাল্টা গুলি চালাই। র্যাব প্রায় ১৫০ রাউন্ড গুলি করেছে। তারাও গুলি করেছে। তারা কিছু ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) নিক্ষেপ করেছে আমাদের দিকে। শেষের দিকে তারা বাড়িটি উড়িয়ে দিয়েছে।’সংবাদ সম্মেলনে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘রাতে আমরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছি। হলি আর্টিজানের পর থেকেই আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছি। প্রতি সপ্তাহেই আমরা জঙ্গি গ্রেফতার করছি। আমরা যত কাজই করি না কেন জঙ্গিদের থেকে দৃষ্টি ফেরাইনি। একদিন আগেও বরিশাল থেকে জঙ্গি গ্রেফতার করেছি।’বাড়িতে অবস্থান নেওয়া জঙ্গিরা কোন সংগঠনের ছিল- এমন প্রশ্নের জবাবে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এটা প্রাথমিক অবস্থায় আছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’অভিযান শেষ হতে কত সময় লাগবে-এ বিষয়ে ডিজি বলেন, ‘অভিযান পুরোপুরি শেষ হয়নি। এখন আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সুইপ করছে। এর পর ডগ স্কোয়াড সুইপ করবে। তারপর অভিযান শেষ হবে।’এত বিস্ফোরক কীভাবে নিয়ে আসা হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা ধরতে পারলে এ পর্যন্ত আমাদের আসতে হতো না। আমরা আগেই তাদের ধরে ফেলতাম। আমাদের যথেষ্ট চেষ্টা রয়েছে, যাতে কেউ বিস্ফোরক সংগ্রহ, মজুত বা এগুলো ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ নিতে না পারে। এসব বিষয়ে আমরা নজরদারি করি। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা এ ধরনের অনেক ঘটনা থামিয়ে দিয়েছি। সেগুলো আপনারা জানেন না।’আজ সোমবার সকালে টিনশেড ওই বাড়ি ঘিরে অভিযানের মধ্যেই র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান ঘটনাস্থলের কাছে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভেতরে অন্তত একজন নিহত হয়েছে। আমাদের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ভেতরে তল্লাশি করছে। সুইপিং শেষ হলে আমরা বিস্তারিত জানাব।’জঙ্গিদের বিষয়ে তথ্য পাওয়ার জন্য ওই বাড়ির মালিক ওয়াহাব, কেয়াটেকার সোহাগ, তার স্ত্রী মৌসুমী এবং পাশের মসজিদের ইমাম ইউসুফকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।র্যাব-২-এর কোম্পানি কমান্ডার মহিউদ্দিন ফারুকী জানান, জঙ্গিদের অবস্থানের খবর পাওয়ার পর রবিবার রাত ৩টার দিকে মেট্রো হাউজিংয়ে ৮ নম্বর রোডের ওই টিনশেড বাসাটি ঘিরে ফেলে র্যাব সদস্যরা। অভিযান শুরুর পরপরই ওই বাসার ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে র্যাবের সঙ্গে গোলাগুলি হয় সেখানে। ভোর পৌনে ৫টার দিকে বড় একটি বিস্ফোরণে ওই বাসার টিনের চাল উড়ে যায়।সকাল ৯টার পর বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে র্যাবের স্পেশাল ফোর্সের সদস্যরা ওই বাড়িতে ঢোকে। ওই সময়ও সেখান থেকে কয়েক দফা গুলির শব্দ পাওয়া যায়। পরে ড্রোন উড়িয়ে ভেতরের পরিস্থিতির তথ্য সংগ্রহ করা হয়।ওই বাড়ির কেয়ারটেকার সোহাগ র্যাব কর্মকর্তাদের বলেছেন, ওই টিনশেড বাসার চার কক্ষের মধ্যে একটি ঘর মাসখানেক আগে ভাড়া নেয় দুই যুবক অন্য তিন ঘরে আগে থেকৈই তিনটি পরিবার থাকত। ওই বাসার পাশে কিছু দিন আগে একটি মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছে। আটক ইউসুফ ওই মসজিদেরই ইমাম।