ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,ঢাকা প্রতিনিধি,০৩ ফেব্রয়ারী : রাজনীতিবিদদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণ ভবন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে চা-চক্রে গতকাল শনিবার যোগ দিয়েছিলেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তবে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আমন্ত্রণ পেলেও যোগ দেয় নি তারা।
বিকাল সাড়ে ৩টার আগে থেকেই গণভবনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা আসতে থাকেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপে অংশ নেওয়া দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। গণভবনের সবুজ লনে জাতীয় পার্টির নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে শুরুতে কুশল বিনিময় করেন। পরে ১৪ দল, বিকল্পধারা, বিএনএফসহ আমন্ত্রিত দলগুলোর নেতাদের কাছে গিয়ে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী।
৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল জয় পায় আওয়ামী লীগ। সরকার গঠনের পর কূটনৈতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে চা-চক্রের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তারই অংশ হিসেবে এই আয়োজন। তবে চা-চক্রে অংশ নেয়নি বিএনপি ও ডক্টর কামাল হোসোনের জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের নেতারা।প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাড়ির দক্ষিণের সবুজ লনের এই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দলসহ ১৪ দলীয় জোট, মহাজোট ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত হন।অতিথিদের বসার জন্য গণভবনের সবুজ লনে চেয়ার, টেবিল, মোড়া, মাদুরের ব্যবস্থা করা হয়। বিভিন্ন খাবারে আপ্যায়িত করা হয় অতিথিদের। ফুচকা, চটপটির জন্য আলাদা আলাদা টেবিল রাখা হয়। পিঠার টেবিলে ছিল পাটিসাপটা, ভাপা, চিতই, পুলি প্রভৃতি। ছিল বিভিন্ন ধরনের কাবাব, নানরুটি, পরোটা। এছাড়া নানা ধরনের শরবত, কফিও ছিল।চা-চক্রে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা আমির হোসেন আমু, মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, নূরুল ইসলাম নাহিদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ অনেকে।অনুষ্ঠানে বিরোধীদলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, কো চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ, জাপা নেতা এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, জিয়াউদ্দিন বাবলু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, সুনীল শুভ রায়, জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাসদ (ইনু) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাসদ (আম্বিয়া) নেতা মঈনুদ্দিন খান বাদল, নাজমুল হক প্রধান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাসহ অনেকে চা-চক্রে অংশ নেন।এ ছাড়াও ইসলামী ঐক্যজোটের সভাপতি মিসবাহুর রহমান চৌধুরী, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, সাম্যবাদী দলের সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ডা. এ কিউ এম বদরুদোজ্জা চৌধুরী, মহাসচিব মেজর (অব.) এমএ মান্নান, মাহী বি চৌধুরী এবং শমশের মুবিন চৌধুরী, বিএনএফ প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ছাড়াও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, ১৪ দলের নেতা, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাসহ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।অনুষ্ঠানস্থলকে আবহমান বাংলার বিভিন্ন ঐতিহ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে। পাশাপাশি বাজানো হয় দেশের গান। আর অতিথিদের ফুচকা, চটপটি, পাঠিসাপটা পিঠা, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠা, জিলাপি, কাবাব-রুটি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। মেন্যুর তালিকায় আরও ছিলো বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফল, জুস, চা-কফিসহ বাঙালি ঐতিহ্যের নানা হরেক পদের খাবার।প্রসঙ্গত, এর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিক এবং সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে চা-চক্রে মিলিত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।