ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নারায়নগঞ্জ প্রতিনিধি,০২ সেপ্টেম্বর : ফুটফুটে চার বছরের এক শিশু, নাম আলিফ। বাসার পাশেই নিজ বন্ধুদের সাথে খেলা করছিল। হঠাৎ করেই চকলেট দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায় ওহিদুল নামের এক প্রতিবেশী। এরপর থেকেই সে নিখোঁজ। সারাদিন অনেক খোঁজাখুজির পর সন্ধানের পর মাইকেও ঘোষনা দেয় অপহৃত শিশুটির পরিবার। পরে তার বন্ধু ফাহিমের তথ্যানুযায়ী আলিফের সন্ধান মিললেও তাকে আর জীবীত নয় পাওয়া যায় রাবিস (ইট ভাংগা) এর সাথে বস্তা বন্দি মৃত লাশ।
র্দীঘ ১৫দিন পর উন্মোচিত হয়েছে শিশু আলিফ হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক ঘটনা। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের অক্লান্ত পুরিশ্রমের পর গ্রেফতার হয়েছে ঘাতক ওহিদুল। শুক্রবার ৩১ আগস্ট আখাওড়া রেলস্টেশন থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে শনিবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিস্ট্র্যাট আক্তারুজ্জ্মান আদালতে পাঠানো হয়। এসময় জিজ্ঞাসবাদে ঘাতক ওহিদুল হত্যাকান্ডের বিষয়টি স্বিকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।
ঘাতক ওহিদুলের বরাত দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এস আই) অজয় কুমার পাল জানিয়েছে, আলিফকে অপহরণ করা হয়েছিলো। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে আলিফকে অপহরনের ১ ঘন্টা পর গলা টিপে হত্যা করে ঘাতক ওহিদুল। সে হত্যার পর কমলাপুর থেকে ময়মনসিং তারপর চট্টগ্রাম ও সর্বশেষ আখাওড়া রেলস্টেশনে অবস্থান নেয়। এমন সংবাদ আমাদের কাছে এলে আমরা দ্রুত তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।
তবে ওহিদুল বিভিন্নস্থানে এতদিন পালিয়ে বেড়ালেও সে জানতো না আলিফের সন্ধান মিলেছে। তাই সে মুঠোফোনে মেসেজ ( ক্ষুদে বার্তা ) পাঠিয়ে মুক্তিপণও দাবি করেন ২ লাখ। সেখানে বলা হয়, যদি মুক্তিপণ দেয়া হয়। তাহলে আলিফকে ফিরিয়ে দিবে। আমরাও সে নাম্বারে একটি মেসেজ পাঠাই তবে কোন সাড়া পাইনি। তখন আমরা বুঝতে পারি সে চেয়েছিলো টাকা গুলো নিয়ে সে লাশ কোথায় আছে জানিয়ে দিবে। এবং ফেরারি হয়ে যাবে।
তিনি আরও জানায়, ঘাতক ওহিদুল আলিফের লাশ রাবিসের সাথে একটি পলিথিনের বস্তায় বন্দি করে রেখেছিলো। সে রাজমিস্ত্রির যোগালির কাজ করত এবং আলিফদের বাসার পাশে খোকন মিয়ার বাড়িতে একটি রুম নিয়ে ভাড়া থাকত। আলিফের বাবা সৌদি প্রবাসী কোরবানীর ঈদ পালনে সে দেশে এসেছিলো। এটি সে জানতো এবং ছেলেকে অপহরণ করে বাবার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতে চাচ্ছিল।
এব্যপারে ওসি মো. কামরুল ইসলাম জানায়, এ ঘটনার পর থেকে আমরা নিরলশ পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আসামী ওহিদুল অনেক চালাকী করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে। তবে সে র্ব্যথ। এ র্মমান্তিক হত্যাকান্ডের পর থেকে আমরা জিজ্ঞাসবাদ ও তদন্ত চালিয়ে গিয়েছি। একপর্যায়ে ঘাতককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।
উল্লেখ্য, গত ১৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের জল্লারপাড় আমহাট্টা এলাকার একটি বসতবাড়ি থেকে শিশু আলিফের লাশটি উদ্ধার করা হয়েছিলো। শিহাব উদ্দিন ওরফে আলিফ সৌদি প্রবাসী আলমগীর হোসেনের ছেলে । ওইসময় হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে এক যুবককে আটক করা হয়েছিলো। কোরবানীর ঈদ করার জন্য আগের দিন তিনি দেশে এসেছিলেন।