ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,ঢাকা প্রতিনিধি,৩১ আগস্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুদ্ধাপরাধী এবং বঙ্গবন্ধুর খুনীদের প্রেতাত্মারা এখন দেশের শান্তি ও প্রগতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কুচক্রী মহল ও তথাকথিত কিছু সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং কতিপয় বুদ্ধিজীবী দুজন স্কুল শিক্ষার্থীর বাসচাপায় মর্মান্তিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভকারী কোমলমতিদের অনভূতিকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের পাঁয়তারা করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘তারা তাদের ঘাড়ে পা রেখে ক্ষমতায় যাওয়ার চক্রান্ত করেছিল। কিন্তু এর ফলে কোমলমতিদের বড় ধরনের কোন ক্ষতি হয়ে যেতে পারে তা তারা চিন্তা করেনি।
শোকের মাস আগস্টের শেষ দিনে গতকাল শুক্রবার বিকেলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরাই করে দিয়েছি। সেই আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সুযোগ নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে ফায়দা লুটতে চেয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে নেপথ্য ব্যক্তিদের গ্রেফতার প্রসঙ্গে বলেন, তথাকথিত সুশীল সমাজের একটি অংশ এখন গ্রেফতার হওয়া ষড়যন্ত্রকারীদের ছাড়াতে মায়াকান্না করছে, এমনকি বৈশ্বিকভাবেও সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু সবার একটা বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত সরকার নীতির প্রশ্নে কোন চাপের কাছেই নতি স্বীকার করবে না’।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দকে পড়ালেখায় মনোনিবেশের পাশাপাশি পদের প্রতি মোহ থেকে নয় আদর্শ ভিত্তিক রাজনীতিতে আত্মনিবেদন করার আহবান জানিয়ে বলেন, তিনি এবং তাঁর ভাই শেখ কামাল ও ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন। একজন কর্মীর মত কাজ করেছেন, যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা সম্পাদন করেছেন। কিন্তু পদের দিকে তাকাননি।
জাতির পিতা রাজনীতির জন্য জীবনের সর্বস্ব ত্যাগ করেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের কথা চিন্তা করে, তাদের কল্যাণের কথা ভেবে, তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যারা রাজনীতি করেন ইতিহাস তাদেরই স্বীকৃতি দেয়। ইতিহাস তাদেরই মর্যাদা দেয়। ইতিহাসে তাদেরই নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকে এবং শত চেষ্টা করেও সে নাম মোছা যায় না। আর সেই দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
সমকালীন রাজনীতির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, অথচ একজন রাজনীতি করেন শুধু নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য, কেউ রাজনীতি করেন রাজনীতির ছত্রচ্ছায়ায় অর্থ সম্পদের মালিক হওয়ার জন্য, কেউ করেন সামাজিকভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আদর্শবানদের রাজনীতি শুধু অনুকরণ নয়, অনুশীলনের চেষ্টা করলেই দেশকে কিছু দেয়া যায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, একজন রাজনীতিকের জীবনে শুধু এই চিন্তা-চেতনাই থাকা উচিত- কি পেলাম কি পেলাম না, রাজনীতি শুধু সে হিসেব কষার জন্য নয়, কি মূল্যায়ন পেলাম সে হিসেব কষার জন্য নয়, কতটুকু দেশকে দিতে পারলাম, কতটুকু মানুষের জন্য করতে পারলাম, কতটুকু মানুষকে দিয়ে যেতে পারলাম- সেখানেই সবচেয়ে বড় তৃপ্তি। সেটাই সব থেকে বড় পাওয়া।
তিনি বলেন, এইভাবে চিন্তা করে যারা রাজনীতি করে তাঁদের কিছু চাইতে হয় না, ইতিহাস তাঁদের মূল্যায়ন করে।
বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী বেগম মুজিবের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গমাতা কেবল সারা জীবন দিয়ে গেছেন, কিন্তু নিজের মর্যাদা নিয়ে কখনও চিন্তা করেননি। যে কারণে এদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী হয়েও তিনি ধানমন্ডী ৩২ নম্বরের বাড়িতেই একটি সাধারণ মধ্যবিত্ত জীবন কাটিয়ে গেছেন।