ইভিএম ইস্যু তুলে নতুন বিতর্ক তৈরির চেষ্টা : ফখরুল

SHARE

image-11999-1535593946ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,৩০ আগস্ট :  নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সীমিত পর্যায়ে ‘সফল’ ব্যবহারের পর এবার জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা করছে তারা।বৃহস্পতিবার কমিশনে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে যেখানে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে ধারনা করা হচেছ। অবশ্য সিদ্ধান্ত হলেও গণ-প্রতিনিধিত্ব আইনে পরিবর্তন আনতে হবে।

কিন্তু সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের নির্বাচন কমিশনের মধ্যে এই চিন্তাভাবনার খবরে ক্ষুব্ধ বিরোধী বিএনপি। খবর বিবিসির।দলের মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের আপত্তি রয়েছে জেনেও নির্বাচনের ঠিক আগে ইভিএম ব্যবহারের কথা তোলার পেছনে কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে।তিনি বলেন, ‘ইভিএম ইস্যু তুলে নতুন আরেকটি বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছে সরকার’।বিএনপি মহাসচিব বলেন, কোনোভাবেই বিএনপির কাছে ইভিএম গ্রহণযোগ্য হবেনা। ‘সিস্টেমটাই ত্রুটিপূর্ণ। এই পদ্ধতি দিয়ে কখনও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। তারা (নির্বাচন কমিশন) পুরোপুরি সরকারের তল্পিবাহক হয়ে গেছে। সরকার যা চাইছে তাই তারা করছে’।বর্তমান নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করে জাতীয় নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছিল গত বছর। সেই রোডম্যাপে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি বাদ দেয়া হয়েছিল।সে সময় সংলাপে বিরোধীদল বিএনপিসহ বেশিরভাগ দলই জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করেছিল। ইভিএম এর পক্ষে ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ তাদের শরিক কয়েকটি দল।বিভিন্ন স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার নির্বাচনে দু’একটি করে কেন্দ্রে বা একটি ওয়ার্ডে একেবারে সীমিত পর্যায়ে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে।সে কারণে অনেক বিশ্লেষক বলছেন, বড় পরিসরে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি বা কারিগরি সামর্থ্য নির্বাচন কমিশনের নেই। এছাড়া এমন ব্যবস্থার জন্য ভোটাররাও প্রস্তুত নয় বলে তারা মনে করছেন।নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরের শেষে নির্বাচন করার কথা বলেছে। সে অনুযায়ী নির্বাচনের জন্য তিন মাসেরও কম সময় রয়েছে।নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী একটি বেসরকারি সংস্থা ফেমা’র মুনিরা খান মনে করেন, ইভিএম ব্যবহারের জন্য এর মধ্যে ভোটারদের প্রস্তুত করা সম্ভব হবে কিনা সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে। ‘ইভিএম ব্যবহারটা সবার জন্য গ্রহণযোগ্য হবে যখন যারা ভোট দেবেন তাদেরও এটাতে আস্থা থাকে’।নির্বাচন কমিশন কী বলছে
কেন তারা এখন ইভিএমের কথা বিবেচনা করছেন – এ প্রশ্নে কমিশনের সচিব হেলালউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি যতটুকু ব্যবহার হয়েছে তাতে রাজনৈতিক দল বা ভোটার কোনো পক্ষ থেকেই কোনো অভিযোগ কখনও আসেনি।‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভাসহ যতগুলো স্থানীয় সরকার নির্বাচন আমরা করেছি আমরা ইভিএম ব্যবহার করেছি। কোনো না কোনো কেন্দ্রে ব্যবহার করেছি। সফলভাবে ব্যবহার করেছি। এখন আমরা যদি আইনগত সাপোর্ট পাই, তাহলে পার্লামেন্ট ইলেকশনে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা আমাদের আছে’।জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য গণ-প্রতিনিধিত্ব আদেশে সংশোধনী আনতে হবে। কমিশন এমন প্রস্তাব পাঠালে সরকারের অনুমোদনের পর তা সংসদে পাস করতে হবে।নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ১৫০,০০০ ইভিএম কেনার একটি প্রকল্পের প্রস্তাব তারা সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।সরকার তা অনুমোদন করলে এই সংখ্যক ইভিএম দিয়ে শখানেক আসনে বেশ কিছু কেন্দ্রে নির্বাচন করা সম্ভব।আওয়ামী লীগের বক্তব্য
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার।দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, ‘ইভিএম যুক্তিসংগত এবং গ্রহণযোগ্য। তবে এটার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের।নির্বাচন কমিশনই সিদ্ধান্ত নেবে তারা কোন পদ্ধতিতে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবে।সরকারের এখানে বলার কিছু নেই’।