২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জিয়া পরিবার জড়িত : প্রধানমন্ত্রী

SHARE

full_1505272289ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,ঢাকা প্রতিনিধি,২১ আগস্ট :  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫ আগস্ট জাতির জনক হত্যাকাণ্ডে জিয়া পরিবার জড়িতে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ স্বপরিবারে জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের পরবর্তীতে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে জিয়া পুরস্কৃত করেছিলেন। তাদের পূণর্বাসন করেছিল। গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছিল। যেটি খালেদা জিয়াও অব্যাহত রেখেছিলেন। 

তিনি আজ মঙ্গলবার সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পন শেষে আলোচলা সভায় এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমার এখন মনে হয়, এটা বোধহয় আল্লাহরই কোনো ইশারা ছিল। নইলে আমরা যেখানে ট্রাকটা দাঁড় করাই সেখানে যদি ট্রাকটা থাকত, তাহলে কিন্তু গ্রেনেডটা ট্রাকের ভেতরেই এসে পড়ত।

প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমরা দেখি ট্রাকটা সাধারণত যেখানে দাঁড়ায় তার থেকে একটু সামনে চলে গেছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম ট্রাকটা আজকে এত সামনে চলে এলো কেন? তারা জানাল, ব্রেক কষতে কষতে ট্রাকটা একটু সামনে চলে গেছে। যে ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে তিনি বক্তব্য রেখেছিলেন, তার দিকে ছোড়া গ্রেনেডটি ট্রাকের ভেতর না পড়ে কোনায় লেগে বাইরে বিস্ফোরিত হয়েছিল। জানি না আল্লাহর কী ইচ্ছা ছিল। আমরা সাধারণত এ ধরনের র‌্যালি করলে সাথে ট্রাক রাখি। এবং সেই র‌্যালির ওপর দাঁড়িয়েই আমরা বক্তব্য দিয়ে র‌্যালি শুরু করি।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি খোন্দকার মোশতাক জিয়াকে পদোন্নতি দেন। তাঁকে নানাভাবে প্রশ্রয় দেন মোশতাক। ১৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর মোশতাকের পর ক্ষমতায় আসা বিচারপতি সায়েমের সঙ্গেও জিয়ার সম্পর্ক ছিল। তাই এই হত্যাকাণ্ডে জিয়া জড়িত ছিলেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্টের মতো ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায়ও জিয়া পরিবার জড়িত। ওই হামলার পর তৎকালীয় প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া সংসদে দাঁড়িয়ে উপহাস করেছিলেন। সেই সরকার সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিল আমি নাকি গ্রেনেড ভেনিটি ব্যাগে করে নিয়ে গিয়েছিলাম।

তিনি আরো বলেন, আমি বুঝলাম না হামলা মামলায় কখন আমরা অভ্যস্ত ছিলাম। খুন-গুমে তো তাঁরাই পারদর্শী। তারা কোটালিপাড়ায় বোমা হামলা করেছে। সারাদেশে ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলা হয়েছে তাঁদের শাসনামলে। কূটনীতিকদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের দলের নেতাদের হত্যা করেছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এস কিবরিয়া, সংসদ সদস্য আহসান উল্লা মাস্টারদের হত্যা বিএনপি-জামায়াতই করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এ ধরনের র‌্যালি বা মিটিং আয়োজনের সময় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেই নেতাকর্মীরা ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে সাধারণত অনেকগুলো গ্রুপ করা হয় এবং সে অনুযায়ী প্রত্যেক ছাদে ছাদে নেতাকর্মীরা থাকে। কিন্তু ওই দিন কোনো ছাদে কাউকে যেতে দেয়া হয়নি, পাহারা দিতে দেয়া হয়নি।

২১ আগস্টের হামলা নিশ্চিতভাবেই বিএনপি সরকারের পরিকল্পনা ছিল অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাহলে এটা খুব স্বাভাবিকভাবেই আসে, এই হত্যাচেষ্টায় বিএনপি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এতে খালেদা জিয়া ও তার ছেলে (তারেক রহমান) যে জড়িত তাতে কোনো সন্দেহ নাই। এর আগে ১৫ আগস্ট মিলাদ পড়ানোর পর তিনি জানতে পারেন, ওই দিনও এমন একটি হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, পার্লামেন্টে পর্যন্ত এ নিয়ে কথা বলতে দেয়নি। কথা বলতে গেলেই মাইক বন্ধ। আর তাদের ব্যঙ্গ– আমাদের তা স্মরণে আছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্যসহ অনেকে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।