কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে গেল বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র

SHARE

image-8482-1532320858ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,দিনাজপুর প্রতিনিধি,২৩ জুলাই :  কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে দেশের একমাত্র বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। রবিবার রাত ১০টার দিকে ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিদুৎ সংকটে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের ৮ জেলা। এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডেও। এদিকে আশ্বাস দিয়েও কয়লা সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ইতোমধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে কয়লাখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিবউদ্দীন আহমদকে।এ ছাড়া সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপমহাব্যবস্থাপক (স্টোর) খালেদুল ইসলামকে এবং তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়েছে মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ও কোম্পানি সচিব আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে।বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি) কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।তিনি আরও জানান, ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এ বিদুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ৩টি ইউনিট চালু রাখতে দৈনিক কয়লার প্রয়োজন ৫ হাজার ২শ মেট্রিক টন কয়লা।কিন্তু বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি চলতি জুলাই মাস থেকে কয়লার সরবরাহ কমিয়ে দেয়ায় বন্ধ হয়ে যায় ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ইউনিট। অপর ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন আরেকটি ইউনিট এর আগে থেকেই বন্ধ রাখা হয়। ফলে ২৭৫ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন তৃতীয় ইউনিটটি কোনোমতে চালু রাখা হয়।

কিন্তু কয়লা সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রবিবার দিবাগত রাতে তৃতীয় ইউনিটটিরও উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হতে হয়। ফলে ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন রবিবার রাত থেকেই পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।বিদুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লি. (নেসকো) এর রংপুর জোনের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন সরকার জানান, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় প্রতিদিন ৬৫০ মেগওয়াট বিদুতের প্রয়োজন। এর মধ্যে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদুৎ আসে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎকেন্দ্র থেকে।কিন্তু কয়লা সংকটের কারণে গত এক মাস থেকে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎকেন্দ্রের ২টি ইউনিট বন্ধ থাকায়, সেখান থেকে মাত্র ১৫০ মেগাওয়াট বিদুৎ আসত। এ কারণে গত এক মাস থেকে বিদুতের কিছু ঘাটতি দেখা দিয়েছে, এখন পুরোপুরি বিদুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ায় এই ঘাটতি আরও বাড়ল।তিনি আরও জানান, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হলেও, বাহির থেকে বিদুৎ এনে চাহিদা পূরণ করা হবে। তবে এতে বিদুতের ভোল্টেজ কমে যাওয়ার আশংকা রয়েছে, সেই সঙ্গে লোডশেডিংও হতে পারে।জানা গেছে, একটি ফেস থেকে নতুন ফেসে যন্ত্রপাতি স্থানান্তরের জন্য গত ১৬ জুন থেকে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। পুনরায় কয়লা উত্তোলন শুরু হবে আগামী আগস্ট মাসের শেষের দিকে। এই সময়ের মধ্যে পাশ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কয়লার মজুদ রয়েছে বলে গত ২০ জুন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবিকে নিশ্চিত করে খনি কর্তৃপক্ষ।