পাকিস্তানের রাজনীতিক থেকে জেএমবিতে যোগ দেয় ইদ্রিস

SHARE

366২০০২ সালে পাকিস্তানের ‘পাক মুসলিম এলাইন্স’ নামক দল থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল মো. ইদ্রিস শেখ। যিনি বাংলাদেশ থেকে ভারত হয়ে দালালদের মাধ্যমে পাকিস্তানে যান। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর ইদ্রিস বাংলাদেশে এসে জেএমবির সঙ্গে যুক্ত হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও যুগ্ম-কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

এর আগে রোববার রাজধানীর বিমানবন্দর ও খিলগাঁও থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জেএমবির ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। এরা হলেন- পাকিস্তানি নাগরিক মো. ইদ্রিস শেখ , মো. মকবুল শরিফ এবং বাংলাদেশি ২ নাগরিক মো. ছালাম ও মো. মোস্তফা জামান।

এসময় তাদের কাছ থেকে ২৬টি উগ্রবাদী বই, ৩টি পাসপোর্ট, ৫টি মোবাইল, নগদ পাকিস্তানি ৪ হাজার রুপি, ভারতীয় এক হাজার পাঁচশ’ রুপি, বাহরাইনের এক হাজার তিনশ’ ডলার, জর্ডানের এক হাজার ছয়শ’ ডলার জব্দ করে ডিবি পুলিশ।

মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানান, তারা বাংলাদেশের নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি’র কার্যক্রম সক্রিয়। ঢাকাসহ দেশের যে কোনো স্থানে নাশকতা তৈরি করে সরকার পতন ঘটানোর ষড়যন্ত্র করে আসছিল। এজন্য তারা গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থাকে উৎখাতের লক্ষ্যে জিহাদ পরিচালনা, অর্থ সংগ্রহ, কর্মী সংগ্রহের চেষ্টা করে আসছে।

ডিএমপির মুখপাত্র বলেন, দালালদের মাধ্যমে মো. ইদ্রিস শেখ ১৯৮৫ সালে ভারত হয়ে পাকিস্তানে যান। ১৯৯০ সালে পাকিস্তানি নারীকে বিবাহ করেন। ২০০২ সালে পাকিস্তানের একটি রাজনৈতিক দল ‘পাক মুসলিম এলাইন্স’ নামক দল হতে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয় ইদ্রিস। তবে তিনি হেরে যান। এরপর ২০০৭ সালে ইদ্রিস বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশে বিভিন্ন বেআইনি কার্যক্রমসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করে আসছে।

ইদ্রিস জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ৪৮ বার তিনি বাংলাদেশ-পাকিস্তানে যাতায়াত করেছেন। তিনি ভূয়া পাসপোর্ট তৈরি ও মানব ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি বাগেরহাটের ঠিকানা ব্যবহার করে বাংলাদেশের পাসপোর্ট তৈরি করেন। ইদ্রিসের কাছ থেকে একটি স্পাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। ইদ্রিসের সঙ্গে বিদেশি একটি ইনটেলিজেন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।

অপর গ্রেফতারকৃত মকবুল শরীফও ১৯৮৫ সালে ভারত হয়ে পাকিস্তানে যায়। বাংলাদেশ-পাকিস্তান যাতায়াত করে। পাকিস্তানে কাপড়ের ব্যবসার অন্তরালে জেএমবি’র সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করে আসছিল। মকবুলও আরাকান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনকে সহযোগিতা ও মানব পাচারে জড়িত।

একইভাবে ছালাম বিহারীও খেপি ব্যবসায়ী। তারও পাকিস্তানে যোগাযোগ রয়েছে। অন্যদিকে মোস্তফা জামান পাকিস্তানের ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের এসিস্ট্যান্ট ট্রাফিক ইন্সপেক্টর। জেএমবি`র সঙ্গে যোগাযোগ ও জেএমবির কার্যক্রম বৃদ্ধি এবং বিস্ফোরক ও বিদেশি মুদ্রা জব্দ করার ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় ২টি ও খিলগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মনিরুল ইসলাম বলেন, তাদেরকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিজ্ঞ আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের জন্য আবেদন জানানো হবে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তাদের কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।