শিশু সাইদ হত্যা মামলার রায় সোমবার

SHARE

327সিলেটে শিশু আবু সাঈদ হত্যা মামলার রায় দেওয়া হবে সোমবার। রোববার বহুল আলোচিত এই মামলার সব আসামির উপস্থিতিতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। পরে সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রশিদ রায় ঘোষণার এই তারিখ নির্ধারণ করেন।

অভিযোগ গঠনের পর মাত্র সাত কার্য দিবসে চাঞ্চল্যকর মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় দ্রুত বিচার নিষ্পত্তিতে এটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন বিচার সংশ্লিষ্টরা।

ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আব্দুল মালেক জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। বিকেলে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ ঘোষণা করেছেন বিচারক। মাত্র সাত কার্য দিবসেই এই মামলার বিচার শেষ হলো বলে জানান তিনি।

মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন উপলক্ষ্যে সকালে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক থাকা চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। সাঈদ হত্যা মামলায় ৩৭ জনের মাঝে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এ সময় কোতোয়ালি থানার ওসি তদন্ত মোশারফ হোসেন, এসআই তারেক মাসুদ ও কনস্টেবল দেলোয়ার হোসেন সাক্ষ্য প্রদান করেন।

গত ১৭ নভেম্বর সাঈদ অপহরণ ও হত্যা মামলায় চারজনের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করেন। অভিযুক্ত আসামিরা হলো, সিলেট মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল (বরখাস্তকৃত) এবাদুর রহমান পুতুল, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম রাকিব ও প্রচার সম্পাদক মুহিবুর রহমান ওরফে মহি হোসেন মাছুম এবং র্যাব ও পুলিশের কতিথ সোর্স আতাউর রহমান গেদা।

এর গত ১৯ নভেম্বর থেকে টানা সাক্ষ্যগ্রহণ করা হচ্ছে। মামলার মোট ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হলো। গত ১৭ নভেম্বর পুলিশের এক কনস্টেবলসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রশীদ।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাহেদুল করিম চার্জশিট আমলে নিয়ে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নথিপত্র স্থানান্তর করেন।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) আবদুল আহাদ চৌধুরী। এর আগের দিন ২২ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মোশাররফ হোসাইন এসি প্রসিকিউশনের কাছে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) হস্তান্তর করেন।

গত ১১ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর রায়নগর থেকে স্কুলছাত্র আবু সাঈদকে (৯) অপহরণ করা হয়। পরবর্তীতে ১৩ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুলের কুমারপাড়াস্থ ঝরনারপাড় সবুজ-৩৭ বাসার ছাদের চিলেকোঠা একটি ঘর থেকে আবু সাঈদের অর্ধগলিত মরদেহ সাতটি পলিথিনের বস্তার মধ্যে মোড়ানো অবস্থায়  উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল এবাদুর, পুলিশের সোর্স গেদা ও ওলামা লীগ নেতা রাকিবকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর এই তিনজনই ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

নিহত আবু সাঈদ নগরের রায়নগর শাহমীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ও রায়নগর দর্জিবন্দ বসুন্ধরা ৭৪ নম্বর বাসার আব্দুল মতিনের ছেলে। মতিনের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার খাশিলা গ্রামে।