বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে দেরি করছে : মিয়ানমার

SHARE
ja_108500ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,০১ নভেম্বর :  আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পাওয়ার আশায় বাংলাদেশ ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনে দেরি করছে বলে অভিযোগ করেছে মিয়ানমার। মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেতা অং সান সু চির এক মুখপাত্র বলেছেন, ১৯৯২ সালের যৌথ ঘোষণা অনুসারে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে প্রস্তুত রয়েছে মিয়ানমার। কিন্তু বাংলাদেশ এ শর্ত না মেনে দেরি করছে। এই দেরি করার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের দেখিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সহযোগিতা আদায় করতে চায়।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর সু চির দফতরের মহাপরিচালক জাউ তায় মঙ্গলবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
সেখানে তিনি বলেন, মিয়ানমার ১৯৯২ সালের প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে যে প্রস্তুত আছে, সে কথা আগেই জানানো হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো সে প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। আমরা শুরু করতে চাই। কিন্তু অন্য পক্ষ তো এখনো সাড়া দিচ্ছে না। ফলে দেরি হয়ে যাচ্ছে।’
বুধবার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার অর্থ বাংলাদেশে আসার বিষয়টি টেনেছেন। ‘ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ৪০ কোটি ডলার পেয়েছে। তারা যেভাবে টাকা পাচ্ছে, তাতে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আরও বিলম্বিত হবে বলে আমাদের আশঙ্কা।ৃ আমাদের মনে হচ্ছে, তারা হয়ত প্রত্যাবাসনের বিষয়ে নতুন কিছু ভাবতে পারে।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর জন্য অক্টোবরের শুরুতে ঢাকায় দুই দেশের বৈঠকে একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের সিদ্ধান্ত হওয়ার পর মাসের শেষ দিকে মিয়ানমারে যান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে দেরি করছে : মিয়ানমার
সেখানে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে কফি আনান কমিশনের সুপারিশের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ ১০ দফা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।
রয়টার্স জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে; সেখানে বলা হয়েছে, ওই ১০ দফা প্রস্তাবের বিষয়ে মিয়ানমার এখনো সম্মতি দেয়নি।
মিয়ানমার বলে আসছে, রোহিঙ্গাদের পরিচয় এবং তাদের মিয়ানমারে বসবাসের তথ্য যাচাই হলেই তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে।
জাউ তায় বলেছেন, তার দেশ এখন বাংলাদেশের তরফ থেকে রোহিঙ্গাদের তালিকার জন্য অপেক্ষা করছে।
১৯৯২ সালে মিয়ানমারের সামরিক সরকার শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে যে প্রত্যাবাসন চুক্তি করেছিল, তার আওতায় দুই লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৯ জন রোহিঙ্গাকে সে সময় ফিরিয়ে নিয়েছিল তারা। চুক্তি নির্ধারিত যাচাই প্রক্রিয়ায় আরও ২৪১৫ জন শরণার্থীকে ‘মিয়ানমার থেকে আসা’ বলে চিহ্নিত করা হলেও তাদের আর তারা ফিরিয়ে নেয়নি।
গত আগস্টে রাখাইনে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনার মধ্যে মিয়ানমারের তরফ থেকে বলা হয়, ১৯৯২ সালের চুক্তির আওতায় ‘যাচাইয়ের মাধ্যমে’ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রাখাইনের মুসলমানদের ফিরিয়ে নিতে তারা প্রস্তুত।
এর ধারাবাহিকতায় সু চির দফতরের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ে অক্টোবরের শুরুতে ঢাকায় এলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে দুই দেশ একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের বিষয়ে সম্মত হয়।