অর্থনীতিকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে সরকার: ফখরুল

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,০৫ জুন : সরকার দেশের ‘অর্থনীতিকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামআলমগীর।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্তমান ব্যাংকিং ব্যবস্থায় এক লক্ষ টাকা রাখলে আগে ছিল ৫’শ টাকা এখন ৮’শ টাকা কেটে নেবে, আবগারি শুল্ক দিতে হবে। একদিকে সরকার ব্যাংক লুট করে শেষ করে দিয়েছে। ছয়টা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সেটাকে আপনারা লোকসানি প্রতিষ্ঠান করেছেন। ১৫ হাজার কোটি টাকা ভুর্তকি দেবেন—এই জনগণের ট্যাক্সের পয়সায়, তাদের পকেট কেটে!’

রোববার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব অভিযোগ করেন। অনুষ্ঠানে ‘কমল’ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার একদিকে জুলুমের রাজত্ব কায়েম করেছে, অন্যদিকে লুটপাটের রাজত্ব কা্য়মে করেছে। গত দুই দিন আগে বাজেট দিয়েছে, একটা মানুষ খুঁজে পাবেন না যে, এই বাজেটকে ভালো বলছে। এমনকি যারা অর্থনীতিবিদ, এমনকি যারা আওয়ামী লীগের প্রতি দুর্বল তারা বলছে, এই পর্যন্ত যত বাজেট এসেছে, তার মধ্যে খারাপ বাজেট। বাজেটে জনগণের ওপরে একটা করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা করবে চুরি, তারা করবে লুটপাট, তারা বিদেশে বাড়ি তৈরি করবে, বিত্ত তৈরি করবে, আর সেটার খেসারত দেবে বাংলাদেশের মানুষ।’

বাজেটে কর্মসংস্থানের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক বেকার হয়ে আছে। তাদের কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থাই বাজেটে নেই, কোনো ইংগিত নেই। তারা কর নেবে, আর সেই কর নিয়ে তারা মেগাপ্রজেক্ট তৈরি করবেন, মেগালুট করবেন—এটাই আসল উদ্দেশ্য। আওয়ামী লীগ প্রকৃতিগতভাবেই এরা লুটেরা।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭২-৭৫ সাল পর্যন্ত যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল, তারা একইভাবে লুট করেছে।’

একাদশ নির্বাচন সম্পর্কে দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন করতে চাই। আর তারা নির্বাচন করতে চায় বিএনপিকে বাদ দিয়ে। কারণ তারা জানে বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে, তারা কোনো দিন জয়ী হতে পারবে না। বিএনপি একটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, আমরা নির্বাচন করে রাষ্ট্র পরিচালনায় যেতে চাই। কিন্তু সেই নির্বাচন হতে হবে অবশ্যই সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, সকলে যাতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে, সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে। নির্বাচনী প্রচারণায় সকল দলকে সমান সুযোগ দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার ফুটবল খেলবে রেফারি, লাইন্সম্যান সবাইকে নিয়ে। আর বিরোধী দল মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে দেখবে, সেটা হবে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি যেটা হয়েছে, সেটা এবার হবে না। এবার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তাই জনগণের দাবি আদায় করে ছাড়ব, এই সরকারকে বাধ্য করব—একটি সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার জন্য।’ এজন্য সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যে আমাদেরকে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ দান করে গেছেন, সেই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা চলে গেছে, পতাকা কিন্তু এখনও আছে। না হলে এতো দিনে এদেশে তিন রঙের ভারতীয় পতাকা দেখতে হতো।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মুস্তাফিজুর রহমান, গোলাম সরোয়ার, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাদরেজ জামান, এসএম জিলানি, রফিক হাওলাদার, নজরুল ইসলাম, ফখরুল ইসলাম রবিন, গাজী রেজওয়ানুল হক রিয়াজ, আওলাদ হোসেন উজ্জল, আবদুর রহমান বাবু, জাহিদ হোসেন প্রমুখ।
দৈনিক সমকাল : সৌজনে ।