বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, এ বছর স্পেনে পণ্য রফতানি দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। স্পেনের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। প্রচলিত রফতানি পণ্যের পাশাপাশি দেশের অপ্রচলিত পণ্য স্পেনে রফতানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। অপ্রচলিত পণ্য রফতানির জন্য সরকার নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। একক দেশ হিসেবে স্পেন বাংলাদেশের রফতানির চতুর্থ বড় বাজার। গত বছর স্পেনে শতকরা সাত ভাগ রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বুধবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইডুয়ার্ডো ডি লাইগলেসিয়ার সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, স্পেন বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, হসপিটালিটি ট্রেনিং, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। স্পেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রকাশিত অসমাপ্ত আত্মজীবনী স্পেনিস ভাষায় প্রকাশ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
মন্ত্রী বলেন, গত ২৩ ও ২৪ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএসটিআর অফিসে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম অ্যাগ্রিমেন্ট (টিকফা)-এর দ্বিতীয় বার্ষিক কাউন্সিল সভায় জিএসপি অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্যের প্রশংসা করা হয়েছে। বৈঠকে শ্রমিকের অধিকার, সাস্টেনিবিলিটি কম্প্যাক্ট, বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ, ডিউটি ফ্রি-কোটা ফ্রি সুবিধাসহ বালি প্যাকেজ বাস্তবায়ন, টিপিপি প্রভৃতি বিষয়ে আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। সভায় বাংলাদেশের বিপুল সম্ভবনার কথা বলা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এখন বাংলাদেশের স্থগিতকৃত জিএসপি সুবিধার আদেশ প্রত্যাহার না করার আর কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশ আশা করছে দ্রততম সময়ের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দিবে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ রফতানি বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকনমিক জোন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে ৩০টির স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। স্পেন চাইলে সেখানে জমি বরাদ্দ প্রদান করা হবে। স্পেন বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া বিনিয়োগের বিশেষ সুবিধাগুলো গ্রহণ করতে পারে। মন্ত্রী বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য স্পেনের প্রতি আহ্বান জানান। বর্তমানে চট্টগ্রাম ইপিজেড-এ স্পেনের দু’টি কোম্পানির বিনিয়োগ রয়েছে। বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ ও লাভজনক স্থান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার রফতানি পণ্য এবং রফতানি বাজার সৃষ্টির জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে আইসিটি, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, জাহাজ ও ফার্নিচার নির্মাণ এবং কৃষিপণ্য রফতানি বৃদ্ধি করতে কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত সচিব মো. শওকত আলী ওয়ারেছী, অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) মো. জহির উদ্দিন আহমেদ এবং রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান শুভাশীষ বসু উপস্থিত ছিলেন।