ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,১২ মার্চ : পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞে নিহতদের স্মরণে ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ পালনের প্রস্তাব জাতীয় সংসদে গ্রহণ হয়েছে। শনিবার রাতে জাতীয় সংসদে এ প্রস্তাব পাস হয়। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) শিরীন আখতারের সংসদ কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধিতে আনা প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনা শেষে তা সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করা হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব করলে সংসদ তা গ্রহণ করে।
শিরীন আখতারের প্রস্তাবটি হচ্ছে, ‘সংসদের অভিমত এ যে, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যাকে স্মরণ করে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা করা হোক এবং আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হোক।’
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা প্রস্তাবটির ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, গণহত্যার কোনও প্রমাণ লাগে না। ওই সময়ের বিভিন্ন পত্রপত্রিকাই এর বড় প্রমাণ।
তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের কনভেনশন অনুযায়ী সুযোগ রয়েছে আমরা ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা করতে পারি। ’
অক্সফোর্ড ডিকশনারী অনুযায়ী গণহত্যাকে সংজ্ঞায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর ‘জেনোসাইড কনভেনশন’ গ্রহণ করে। ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বরকে ‘জেনোসাইড ডে’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। কাজেই আমাদের কাছে সেই সুযোগ রয়েছে, জাতিসংঘের কনভেনশন অনুযায়ী আমরা ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে গ্রহণ করতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করে বাংলাদেশকে কলংকমুক্ত করার সময় এসেছে। আমরা চাই এ ধরনের কোন গণহত্যা আর যেন কখনও না হয়। এই হত্যাকান্ড যারা ভুলে যায় তাদের এই বাংলাদেশে থাকার অধিকার নেই। যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে যারা এত দহরম মহরম করে তাদের পাকিস্তানেই চলে যাওয়া উচিত।’
এর আগে শনিবার বিকাল ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও প্রায় ৬ ঘণ্টাব্যাপী এই আলোচনায় অংশ নেন ৫৫ জন সংসদ সদস্য।
আলোচনায় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা অংশ নেন।
এছাড়া আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু,বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, চিফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নূরজ্জামান আহমেদ, সরকারি দলের সিনিয়র সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শওকত আলী, অধ্যাপক আলী আশরাফ, ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, আবদুল মতিন খসরু, আবদুর রহমান, মোহাম্মদ ফারুক খান, মনিরুল ইসলাম, আবদুল মান্নান, ডা. দীপু মনি, এবি তাজুল ইসলাম, নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ন, কামাল আহমেদ মজুমদার, নুরুল ইসলাম সুজন, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, পঞ্চানন বিশ্বাস, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মো. মনিরুল ইসলাম, মেজর জেনারেল (অব.) এ, কে, এম এ ওহাব, বেগম সাগুফতা ইয়াসমিন, ফজিলাতুন-নেসা বাপ্পি, নূরজাহান বেগম, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, কাজী রোজি, বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, ফখরুল ইমাম, নূরুল ইসলাম ওমর, ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, বেগম হাজেরা খাতুন, জাসদের মইনউদ্দিন খান বাদল, বিএনএফ-এর এস এম আবুল কালাম আজাদ, স্বতন্ত্র সদস্য আব্দুল মতিন ও তাহজীব আলম সিদ্দিকী।