ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,গোপালপুর (টাঙ্গাইল), ১৮ ডিসেম্বর : প্রকৃতির বিচিত্র খেয়ালে সমাজে নানা রকম প্রতিবন্ধী মানুষ দেখা পাওয়া যায়। তেমনী এক ভিন্ন ধরণের শারীরিক প্রতিবন্ধীতার স্বীকার টাঙ্গাইলের গোপালপুরের শিশুকন্যা সনি (৯)। সনি গোপালপুর পৌরসভার দক্ষিণ গোপালপুর (ভূয়ারপাড়া) গ্রামের ভূমিহীন দিনমুজুর আব্দুল হামিদের দ্বিতীয় মেয়ে। সে জন্ম থেকেই মলদ্বার বিহীন।
প্রকৃতির খেয়ালে মলদ্বার না থাকলেও মূত্রদ্বার দিয়ে মল বের হয়ে আসে। সব সময়ই প্রায় মল বের হয়। ফলে দুর্গন্ধে কেই কাছেও ভিড়তে চায় না। নিদারুণ কষ্টে আছে সে ও তার পরিবার। যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরায়, সেখানে ব্যয় বহুল অপারেশন বা চিকিৎসা করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। অথচ বিত্তবানদের সামান্য সাহায্যে সে ফিরে আসতে পারে স্বাভাবিক জীবনে। সনির বর্তমান আবাস তার নানীর বাড়ি দক্ষিণ গোপালপুর (ভূয়ারপাড়া) গ্রামে। আজ রোববার সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা যায়, খালি গায়ে সনি শীতে কাঁপছে। শীতের কাপড় আছে কীনা জিজ্ঞেস করার পর একটি জীর্ণ জামা পরিয়ে দেয়া হয়।
সনির নানী বিবিজানের সাথে কথা বলে জানা যায়, সনির বাবা একজন দরিদ্র দিনমুজুর। বাড়ি-ঘর ও জায়গা-জমি না থাকায় ২জন নাতনীসহ মেয়ে-জামাইকে নিজের জীর্ণ কুটিরে আশ্রয় দিয়েছেন। নিজেরও স্বামী মারা গেছেন বহু পূর্বে। বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে কাজ করে সামান্য আহার জোটান সবার জন্য। সনির মা সাজেদা বেগমও মানসিক প্রতিবন্ধী। বাবা ঢাকায় থেকে দিন মুজুরী করে।
নানী বিবিজান (৬৫) আরো জানান, জন্মের ১৫দিন পর সরিষাবাড়ির এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে দত্তক দেয়া হয়েছিল সনিকে। কিন্তু তারা সনির এই শারীরিক সমস্যাটির কথা জানতে পেরে পর দিনই ফেরত দিয়ে যান। তখন চিকিৎসার জন্য গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রে নেয়া হয়েছিল।
কিন্তু ডাক্তার চিকিৎসায় অপারগতা প্রকাশ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার কথা জানালে আর চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি আর্থিক সমস্যার কারণে। একটি প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য উপজেলা সমাজ সেবা অফিসেও কয়েকদিন ঘুরেছেন বলে জানান সনির নানী। সম্প্রতি ওয়ার্ড কাউন্সিলর সমশের আলী এলাকায় ওই গেলে বিষয়টি তাঁর নজরে আসেন। তিনি পৌর মেয়রের সাথে কথা বলে একটি প্রতিবন্ধী কার্ড দেয়ার আশ্বাস দেন এবং মেয়েটির উন্নত চিকিৎসায় দেশের বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
পৌর মেয়র মো. রকিবুল হক ছানা বলেন, মেয়েটির বিষয়ে আমার জানা ছিল না। প্রতিবন্ধী কার্ড দেয়াসহ তার চিকিৎসায় যতদূর সম্ভব সহযোগিতা করব।’ তিনিও অসহায় এ মেয়েটির চিকিৎসায় বৃত্তবান এগিয়ে আসার আহবান জানান। সাহায্য পাঠাবার ঠিকানা- হাবিজা, সঞ্চয়ী হিসাব নং ৬৯৮২, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, গোপালপুর শাখা, গোপালপুর, টাঙ্গাইল।