ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫ || চৈত্র ৯ ১৪৩১ :
কথিত ‘অ্যান্টিক মেটাল কয়েন’ (প্রাচীন ধাতব মুদ্রা) নিয়ে অভিনব কৌশলে প্রতারণা করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া একটি চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
Advertisement
আজ শুক্রবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজধানীর আদাবর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আজ সকাল ৭টা পর্যন্ত রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে এই চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ইফতেখার আহম্মেদ (৪৪), আবু নাঈম মো. ফাইজানুল হক ওরফে ডক্টর নাঈম (৪৮), মো. আবদুল হালিম তালুকদার কুরাইশি (৪২) ও আবুল কালাম আজাদ (৪৬)।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান বলেন, প্রতারণার অভিযোগে মিজানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি আদাবর থানায় মামলা করেন। এই মামলার আসামিদের ধরতে আদাবরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় থানা-পুলিশ। সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তারা এজাহারভুক্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন সরঞ্জামসহ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।
Advertisement
যেভাবে প্রতারণা
মামলা ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাতে পুলিশ কর্মকর্তা ইবনে মিজান বলেন, আট মাস আগে ইফতেখারের সঙ্গে পরিচয় হয় মিজানুরের। তাঁকে কথিত অ্যান্টিক মেটাল কয়েনের ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা দেন ইফতেখার। তিনি মিজানুরকে প্রলোভন দেখান, কয়েন কিনতে বলেন। মিজানুরকে ইফতেখার বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবসায় আছেন। জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই কয়েন কেনে। তিনি অতি উচ্চ মূল্যে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এই কয়েন বিক্রয় করে দিতে পারবেন।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান বলেন, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর গুলশানের একটি হোটেলে মিজানুরকে ডেকে নেন ইফতেখার। তিনি মিজানুরের সঙ্গে দুই ব্যক্তির পরিচয় করিয়ে দেন। নাঈমের পরিচয়ে বলেন, তিনি বিদেশি কোম্পানির প্রতিনিধি। আর হালিমের পরিচয়ে বলেন, তিনি ধাতব মুদ্রার শুদ্ধতা নির্ণয় করেন। ইফতেখার ও তাঁর সহযোগীরা মিজানুরকে বলেন, বিদেশে প্রতিটি ধাতব মুদ্রার বাজারমূল্য আনুমানিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে। ধাতব মুদ্রাগুলো নিখাদ বলে মিজানুরকে প্রতিবেদন দেন হালিম। ধাতব মুদ্রা কেনার জন্য গত বছরের ৭ অক্টোবর চক্রের কাছে অগ্রিম ৪৫ লাখ টাকা দেন মিজানুর। পরে আরও নগদ ৭৫ লাখ টাকা ও ৫০ লাখ টাকার একটি ব্যাংক চেক দেন। একপর্যায়ে মিজানুর জানতে পারেন, ধাতব মুদ্রাগুলো ভুয়া। তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এরপর তিনি মামলা করেন।

Advertisement
‘অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে’
পুলিশ কর্মকর্তা ইবনে মিজান বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, তাঁরা অ্যান্টিক মেটাল কয়েন প্রতারক চক্রের সদস্য। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এই কয়েন কেনার প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতারণা করে আসছেন। তাঁরা তাঁদের অভিনব প্রতারণার ফাঁদে ফেলার জন্য আরও কয়েকজনকে নিশানা করেছিলেন। তাঁদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।