ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রংপুরের কাউনিয়া প্রতিনিধি,শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ || ফাল্গুন ১৫ ১৪৩১ :
Advertisement
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ধর্মেশ্বর গ্রামের নুরুল ইসলাম (৪৫), তার ছেলে মামুন মিয়া (১৯) ও একই গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে মোসন মিয়া (৫৬)। লাশ উদ্ধার ও গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাউনিয়া থানার (ওসি) তদন্ত মোস্তফা কামাল।
ওসি বলেন, শুক্রবার শিশুটির বাবা দেলওয়ার বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা ও আলামত গোপনের ধারায় মামলা দায়ের করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে।
তিনি জানান, গত ১৭ জানুয়ারি উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ধর্মেশ্বর গ্রামের দেলওয়ার মিয়ার মেয়ে দোলা মনি (৪) বাড়ির বাইরে খেলা করার একপর্যায়ে নিখোঁজ হয়। এ ব্যাপারে ওইদিন কাউনিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি হয়। চল্লিশ দিন পেরিয়ে গেলেও শিশুটির সন্ধান পায় না স্বজনরা। গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্বজনরা নিখোঁজ শিশুটির সন্ধান চেয়ে কাউনিয়া-পীরগাছা সেনা ক্যাম্পে আবেদন করেন। পরে সন্ধ্যার দিকে সেনাবাহিনী ধর্মেশ্বর গ্রামে অভিযান চালিয়ে নুরুল ইসলাম ও তার ছেলে মামুন মিয়াকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। দুইজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ধর্মেশ্বর গ্রামে আফজালের বাড়ির পিছনে টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশু দোলা মনি গলিত মরদেহ উদ্ধার করে। হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত সোমন মিয়াকে আটক করে সেনাবাহিনী। পরে তিনজনকেই থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
Advertisement
কাউনিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তফা কামাল বলেন, প্রায় এক বছর আগে দেলওয়ারের স্ত্রীর সঙ্গে নুরুল ইসলামের স্ত্রীর কাপড় সেলাইয়ের পাওনা টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবার কারো সঙ্গে কেউ কথা বলে না। এক বছর আগের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে নুরুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে (১৭ জানুয়ারি) দোলা মনিকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে শ্বাসরোধ এবং মাটিতে আছাড় মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে মরদেহ বস্তায় ঢুকিয়ে বাড়ির পিছনে কচুর ঝোপে লকিয়ে রাখে। এরপর রাতের অন্ধকারে আফজালের বাড়ির পিছনে টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ফেলে ঢাকনা লাগিয়ে দেয়।
শিশুটির মা রুপা বেগম অভিযোগ করে জানান, তার শিশু মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর তারা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। কিন্তু থানা পুলিশ মেয়ের সন্ধান না করে উল্টো তার চরিত্র নিয়ে তদন্ত করে।
রুপা বেগম জানান, থানা পুলিশের ওপর ভরসা না পেয়ে তিনি সেনা ক্যাম্পে জানানোর পর আট ঘণ্টার মধ্যে সেনাবাহিনী তার মেয়ের লাশ উদ্ধার করে।
শিশুটির বাবা দেলওয়ার মিয়া বলেন, তার মেয়ে নিখাঁজ হওয়ার পর বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল। অথচ নুরুল ও সহযোগীরা পরিকল্পনা করে তার মেয়েকে হত্যা করেছে। তার মেয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানান তিনি।
Advertisement
জানতে চাইলে কাউনিয়া থানার (ওসি) তদন্ত মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা নিখোঁজ শিশুটির সন্ধানে চেষ্টা করেছি। সন্দেহের তালিকায় নুরুল ইসলামকে থানায় ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু সে স্বীকার করেনি। পরে সেনাবাহিনীর কাছে ঠিকই নুরুল হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
