যশোর জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত ‘নিখোঁজ’ তুহিন নববধূ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
সোমবার (২৫ জুলাই) দুপুরে যশোর শহরের শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার আবদুস সোবাহানের ছেলে কামরুজ্জামান তুহিন ওরফে মুন্না (২৪) কোতোয়ালি থানায় হাজির হয়ে নিখোঁজের পরের ঘটনার বর্ণনা দেন।
এর আগে, রোববার (২৪ জুলাই) দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে পুরানো ঢাকার ইসলামবাগের মনির খানের মেয়ে ইয়াসমিন আক্তারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তুহিন।
সোমবার সকালে যশোরের বাড়িতে ফিরেছেন মুন্না ও তার নববধূ। দুই বছর পর ছেলেও পুত্রবধূকে ফিরে পেয়ে আনন্দিত হলেও আতঙ্ক কাটছে না পরিবারের সদস্যদের। তাই নববধূকে বাড়িতে রেখেই সোমবার দুপুরে মুন্না ও তার মা, আত্মীয় স্বজন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থানায় হাজির হন।
থানার বারান্দায় দাঁড়িয়ে কামরুজ্জামান তুহিন ওরফে মুন্না তার নিখোঁজের দুই বছরের ঘটনার বর্ণনা দেন।
মুন্না বাংলানিউজকে বলেন, দুই বছর আগে মায়ের সঙ্গে রাগারাগি করে ঢাকায় চলে যান। বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না তার। গত শনিবার বিয়ে নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে জানতে পারেন তিনি পুলিশের নিখোঁজ তালিকায় তার নাম রয়েছে। শনিবার রাতে পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় চলে যান। রোববার দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে পুরানো ঢাকার ইসলামবাগ এলাকার মনির খানের মেয়ে ইয়াসমিন আক্তারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
করেকামরুজ্জামান মুন্না বলেন, ২০১৪ সালের জুলাই মাসে মায়ের সঙ্গে রাগারাগি করে ঢাকায় চলে যান। কেরানীগঞ্জের জিনজিরা এলাকায় একটি ডেকোরেটরের দোকানে কাজ নেন। এরপর পুরানো ঢাকার ইসলামবাগে মাইশা প্লাস্টিক কোম্পানিতে চাকরি নেন। সেখানে থাকার সুবাদে ইয়াসমিন আক্তারের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে মেয়ের পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। এরপর মেয়ের পরিবার থেকে বলা হয় অভিভাকরা না আসলে বিয়ে হবে না। পরে মুন্না বাড়িতে যোগাযোগ করে বিয়ের কথা জানান। দুই বছর পর ছেলের সন্ধান পেয়ে মুন্নার স্বজনরা ঢাকায় যায়। এরপর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।
গত ১০ জুলাই পরিবারের পক্ষ থেকে কোতয়ালি থানায় মুন্না নিখোঁজের বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
কামরুজ্জামান তুহিন ওরফে মুন্নার মা শিরিনা আক্তার কমলা বাংলানিউজকে বলেন, ‘সরকার বলেছে যাদের ছেলে নিখোঁজ তাদের থানায় জিডি করতি হবে। না হলি তাদের বাবা-মাকে ধরে নিয়ে আসবে পুলিশ। আমার ছেলে দুই বছর নিখোঁজ ছিল। তাই থানায় জিডি করেছিলাম। আমি কখনো বলিনি আমার ছেলে ‘জঙ্গি’। বলেছি আমার ছেলেকে বকাবকি করেছিলাম। এজন্য সে রাগ করে বাড়ি থেকে চলে গেছে।’
কামরুজ্জামান তুহিন ওরফে মুন্নার নানী শাশুড়ি সখিনা বেগম বলেন, ‘মুন্না পুরানো ঢাকার ইসলামবাগের একটি প্লাস্টিক কোম্পানিতে চাকরি করতো। ওই এলাকায় আমাদের বাসা। মুন্না ওই এলাকাতেই থাকতো। আমার নাতির সঙ্গে ওর সম্পর্ক হয়। বিষয়টি জানতে পেরে মুন্নাকে ডেকে বলি তোমার পরিবারের সদস্যদের খবর দাও। তারপর বিয়ের বিষয়টি পাকা করা হবে। পরে পরিবারের লোকজন হাজির হলে মুন্নার সঙ্গে নাতির বিয়ে দিয়েছি।’
যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মুন্না ফিরে এসেছে। আমরা তার বিষয়ে তদন্ত করে দেখবো। যদি ‘জঙ্গি’ সংশ্লিষ্টতা না পাই। তবে, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর ‘জঙ্গি’ সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।