ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),জামালপুর প্রতিনিধি,সোমবার ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ || মাঘ ১৩ ১৪৩১ :
জামালপুর পৌরসভার ‘হ্যালো মেয়র’ ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স এখন সিদ্দিক অ্যাম্বুলেন্স নামে ভাড়ায় পরিচালিত হচ্ছে। পৌরসভাকে দান করা ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের অ্যাম্বুলেন্সটি একজন ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে কীভাবে ভাড়ায় পরিচালিত করছে, সে সম্পর্কে কিছুই জানে না পৌর কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় জামালপুর পৌরসভার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় ও জেলার সচেতন ব্যক্তিরা।
Advertisement
জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৯ জুলাই পৌর নাগরিকদের সুবিধার্থে জরুরি ‘হ্যালো মেয়র’ ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করে জামালপুর পৌরসভা। ‘হ্যালো মেয়র’ অ্যাম্বুলেন্স সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। জামালপুর পৌরসভার সেই সময়ের মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু ব্যক্তিগত অর্থায়নে চালু করেন ‘হ্যালো মেয়র’ অ্যাম্বুলেন্স সেবা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘হ্যালো মেয়র’ ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স চালু হলেও লাইসেন্স ছিল না গাড়িটির। ৫ আগস্টের পরে একটি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে শহরের বাইপাস মোড়ের একটি গ্যারেজে ঠিক করা হয় অ্যাম্বুলেন্সটি। এর বিল প্রদান করেন সাবেক মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানুর চাচাতো ভাই মো. সিদ্দিকুর রহমান।
সম্প্রতি গাড়িটি নিয়ে নতুন করে কাগজপত্র করেন মো. সিদ্দিকুর রহমান। গাড়িটির লাইসেন্স নম্বর হয় ঢাকা মেট্রো ছ- ৭১৫১০২। আর গাড়িটির নাম দেওয়া হয় সিদ্দিক অ্যাম্বুলেন্স। এরপর ১৭ জানুয়ারি (শুক্রবার) থেকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সামনে থেকে ভাড়ায় চলছে গাড়িটি।
মিলন আরও বলেন, ‘গাড়িটি ঠিক করার জন্য সাবেক মেয়র ছানুর গাড়ি তত্ত্বাবধানকারী আশরাফ ভাই ৫০ হাজার টাকা অ্যাডভান্স করে। এরপরে আমি গাড়িটি ঠিক করার কাজ শুরু করি। মোট ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বিল হয়। ঠিক করার পরে আশরাফ ভাইয়ের লোক গাড়িটি নিতে আসে। আমি পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ সাহেবকে ফোন দেই। তিনি সাবেক মেয়র ছানুর সাথে কথা বলে আমাকে সিদ্ধান্ত জানাতে চেয়েছিলেন। একদিন পার হলেও তিনি আমাকে কিছুই জানাননি। পরে বুধবার আশরাফ ভাইয়ের লোক এসে গাড়িটি নিয়ে যায়।’
এসব বিষয়ে জানতে আশরাফের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
Advertisement
এদিকে সিদ্দিক অ্যাম্বুলেন্সের মালিক মো. সিদ্দিকুর রহমানের মোবাইল নম্বরে কল দিলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার অ্যাম্বুলেন্সের সুপারভাইজার মো. ফারুক বলেন, ‘৪-৫ দিন আগে গাড়িটি আমরা বাইপাস এলাকার মিলনের গ্যারেজ থেকে আনি। গাড়িটি সিদ্দিক ভাই কিনেছেন। তবে কার কাছ থেকে কত টাকা দিয়ে কিনেছেন সেই সম্পর্কে আমাদের ধারণা নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামালপুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সেই সময়ের মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু জামালপুর পৌরসভাকে অ্যাম্বুলেন্সটি লিখিতভাবে প্রদান করেনি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের কয়েক দিন পরে নান্দিনাতে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি শহরের বাইপাস মোড় এলাকার একটি গ্যারেজে রয়েছে। সেখানে অ্যাম্বুলেন্সটি ঠিক করার কাজ চলছে। অ্যাম্বুলেন্সটি এখনও আমাদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।’
এসব বিষয়ে জামালপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসক মৌসুমী খানম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘এই বিষয়টি আমি জানতাম না। আপনার মাধ্যমে মাত্র অবগত হলাম। আমি পৌরসভায় গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
Advertisement