ফারুক ওয়াসিফ বিএনপিকে হত্যা করতে গিয়ে হাসিনা নিজেই আত্মহত্যা করেছেন

SHARE

ছবি সংগৃহিত

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,রোববার   ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৮ ১৪৩১:

প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন, ২০০৬-০৭ সালের জরুরি অবস্থা আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো বুঝতে পারেনি। এটা ছিল মাইনাস টু থিওরি। বিএনপিকে হত্যা করতে গিয়ে হাসিনা নিজেই আত্মহত্যা করেছেন। আজও আন্দোলনের অংশীদাররা যদি কাউকে মাইনাস করতে চায়, তাদেরও একই অবস্থা হবে।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লবে গণমাধ্যমের ভূমিকা ও পরবর্তী প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

Advertisement

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আমাদের ভিশনটা (লক্ষ্য) হবে জাতীয় ও জনগোষ্ঠীর স্বার্থকেন্দ্রিক। যদি ভিশনটা ব্যক্তি কেন্দ্রিক হয়, তাহলে এটি হয়ে যায় এমভিশন (উচ্চাকাঙ্ক্ষা)। যার ফলস্বরূপ এই অভ্যুত্থান পরবর্তী ছয় মাস আমরা মতবাদ প্রতিষ্ঠায় জোর দিচ্ছি, এই কারণে আমরা বিভক্ত হয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। সাংবাদিক গ্রামের দফাদারের মতো, যে গ্রামের মানুষকে বিপদের সময় সতর্ক করবে। আমরা প্রত্যাশা রাখব, সাংবাদিকরা যাতে সেই দায়িত্ব যথাযথ পালন করেন।

পিআইবি মহাপরিচালক বলেন, শেখ হাসিনা বৃহত্তম জেলখানা, বৃহত্তম গোরস্তান তৈরি করেছিলেন। এতেই বোঝা উচিত ছিল, তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল। ফ্যাসিবাদীদের সময়ে শিক্ষক, সাংস্কৃতিক সমাজ তাদের দোসর হিসেবে আবির্ভূত হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের মৃত্যু ঘটিয়েছিল। আমাদের নিজেদের মধ্যে অনৈক্যের কারণে ফ্যাসিবাদীদের দরজা আবার খুলে যাচ্ছে, এ কারণে সাধারণ জনগোষ্ঠীর জন্য আমাদের ভিশন এক না হলে ভবিষ্যৎ আমাদের জন্য আত্মঘাতী হবে। সাংবাদিকরা লোভের মধ্যে গিয়ে ধ্বংস হয়েছিল। এ ঘটনা যেন পুনরায় না ঘটে।

সেমিনারের প্রধান আলোচকের বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে বিশ্বের ইতিহাসে বড় ধরনের লুটপাট হয়েছে বাংলাদেশে। চোরতন্ত্র তৈরি করেছিলেন শেখ হাসিনা। বড় বড় কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেওয়া ছিল তার কাজ। সেসময় বিদেশে টাকা পাচারকারীরা এখন সেই টাকায় প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। তারা প্রতিষ্ঠিত করতে চায় যে এখানে এখন মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটেছে, কোনো গণঅভ্যুত্থান হয়নি। পরাজিত শক্তি আবার আপনাদের জঙ্গি বানাতে চায়। এটা থেকে আমাদের সচেতন থাকতে হবে যাতে অন্য কোনো ন্যারেটিভ তৈরি করতে না পারে কেউ।

Advertisement

দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত দেশে সাংবাদিকতার নামে যে অপসাংবাদিকতা হয়েছে সেটাকে রুখতে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষ সাংবাদিক হিসেবে গড়ে তোলা এবং তাদের জন্য আলাদা একটি ওয়েজ বোর্ড গঠন করে বেতন কাঠামো নির্ধারণ করার দাবি জানান অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহতাব লিমন।

অনুষ্ঠানে জবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইমরান হুসাইনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, স্বৈরাচারের ইতিহাস আমরা যা দেখেছি, তা বর্ণনা করতে গেলে কয়েক ঘণ্টা লেগে যাবে। স্বৈরাচার যখন কোনো একটা ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে তখন বলা হতো ছাত্রদল অথবা শিবির মেরেছে। তাহলে তার পাশে কাউকে দেখা যেত না। জুলাই বিপ্লবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জবি সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি আসাদুল ইসলাম।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের শিক্ষক, রাজনৈতিক দলের নেতারা, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement