১৪ বছর পর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মেজর জিয়ার হদিস (ভিডিও)

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),সিনিয়র সাংবাদিক,রোববার   ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ  ২১ ১৪৩১ :

‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মেজর জিয়া। যার হদিস মিললো ১৪ বছর পর। মামলা ও জঙ্গির খাতা থেকে নাম কাটাতে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এই আসামি। সাবেক সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ জিয়াউল হকের দাবি, ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী হওয়ায়, তাকে সামনে রেখে একের পর এক জঙ্গি নাটক সাজিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার।

Advertisement

বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক। শেখ হাসিনা সরকারের পুলিশের খাতায় যিনি একজন মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি। কখনো আনসার উল্লাহ (জেএমবি), কখনোবা আইএস ও আল কায়েদার সদস্য হিসেবে দেখানো হয়েছে তাকে। জিয়াকে ধরতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল সেসময়।

ব্লগার দীপন, অভিজিৎ, জুলহাস হত্যাসহ ৭টি মামলার আসামি তিনি। যার মধ্যে তিনটি ফাঁসির দণ্ড ঝুলছে তার মাথায়। কিন্তু, কোথায় সেই মেজর জিয়া? মৃত নাকি জীবিত আছেন তিনি? ১৪ বছর সেই প্রশ্নের সমাধান দিতে পারেনি কেউ।

তবে এবার চ্যানেল ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি) এর হাতে এসেছে বেশ কয়েকটি নথি, যেখান থেকে প্রথমবার শনাক্ত করা গেলো বেঁচে আছেন সৈয়দ জিয়া। গেলো ২৯ ডিসেম্বর আইনমন্ত্রণালয়ে নিজের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন তিনি। শুধু তাই নয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়েও আবেদন করেছেন, মোস্ট ওয়ান্টেডের তালিকা থেকে জিয়ার নাম প্রত্যাহার করতে। অভিযোগ করেছেন, মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসানোর।

দুই মন্ত্রণালয়ে জমা হওয়া ওই নথির সুত্র ধরে কথা হয় মেজর জিয়ার আইনজীবীর সঙ্গে। নিশ্চিত করেন এই আবেদন কে করেছেন?

মেজর জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন বলেন, জিয়া আমাকে নিজে মেসেঞ্জারে ফোন দিয়েছে। সে বলেছে যে মামলাগুলো হয়েছে এগুলো সব মিথ্যা। সে এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে আবেদন জানিয়েছে। তার ব্যাপারে যে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে সেটা প্রত্যাহার করার জন্য। আইন উপদেষ্টার কাছে আবেদন করেছেন, তার পলিটিক্যাল মটিভেটেড মামলাগুলো প্রত্যাহারের জন্য।

Advertisement

এই আইনজীবী জানান, ২০১১ সাল থেকে বিদেশে অবস্থান করছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ জিয়া। তবে কোন দেশে তা জানা যায়নি। ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন বলেন, এখনো আমাকে জানাননি তিনি কোথায় আছেন।

এরপর অডিও কলে চ্যানেল 24 এর সঙ্গে সরাসরি কথা হয় জিয়ার সাথে। তার অভিযোগ, ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী হওয়ায়, হাসিনা সরকারের রোষানলে পড়েন তিনি।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ জিয়াউল হক বলেন, পা চাটলে সঙ্গী, না চাটলে জঙ্গি। এই ভাই বিগত ফ্যাসিস্ট ভারতীয় দালাল সরকার কিভাবে জঙ্গি ট্যাগ ব্যবহার করে। তাদের সকল বিরোধী প্রতিপক্ষকে দমিয়ে রেখেছে। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। লোকজনকে বাধ্য করে চার্জশীটে আমার নাম যুক্ত করা হয়েছে।

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার দাবি, ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলায় টার্গেট করা হয়েছিল তাকে। ফাঁসানো হয় একের পর এক মিথ্যা অভিযোগে।

সৈয়দ জিয়াউল হক আরও বলেন, শুরুতে এক সময় জঙ্গি বলা হয়েছে। পরে এক সময় আল কায়দা বলা হয়েছে, পরে আনসার আল ইসলাম বলা হয়েছে। আরেক সময় আইএস বলা হয়েছে। অর্থাৎ যেভাবে চাপে রাখা যায়।

Advertisement

আলোচিত জুলহাজ-তনয় হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ড প্রাপ্ত হওয়ায়, জিয়াকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকার। তাই গেলো ২৫ ডিসেম্বর তা প্রত্যাহারে লিখিত আবেদন করেছেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ জিয়াউল হক, ছবি: সংগৃহীত