‘ওরা আমার নবীকে গালাগাল করবে আর আমরা ইলিশ দেব, এইরকম প্রেমপ্রীতি চলবে না’ (ভিডিও)

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি,  বৃহস্পতিবার   ০৩ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৮ ১৪৩১   :

কিশোরগঞ্জে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক বলেছেন, নবীর ইজ্জতের জন্য প্রয়োজনের পেটে পাথর বেঁধে আবারো ভারতের বিরুদ্ধে রাজপথে নামবো। আমার রসূলকে নিয়ে বার বার ভারত কটূক্তি করছে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিন আর যদি নিতে ব্যর্থ হোন প্রয়োজনে আল্লাহর নবীর ইজ্জতের জন্য আবারও শাপলা চত্বরে যেতে হলে যাবো। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ারি করে বলতে চাই ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে আমার নবীর ইজ্জত প্রতিষ্ঠিত করতে সতর্ক করে দিন। যদি সেটা করতে ব্যর্থ হন আর ভারত যদি একের পর এক ঘটনা ঘটায় তাহলে তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করুন।

Advertisement

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে শহরের আজিম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ওরা নবীকে নিয়ে গালাগালি করবে আর  তাদেরকে ইলিশ দেব এইরকম প্রেমপ্রীতি বাংলাদেশে চলবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, শিক্ষা কমিশন নামে যে কমিশন গঠন করা হয়েছে, এর মধ্যে সমকামিতার প্রমোটকারী যারা রয়েছেন তাদের শিক্ষা কমিশন থেকে বাদ দিন। ইসলামি শিক্ষাবিদ, আলেম, ওলামাদের প্রতিনিধি সেখানে অন্তর্ভুক্ত করুন। এটা আমাদের অনুরোধ নয়, আমাদের অধিকারের কথা। আজ এখান থেকে বলছি, কয়েকদিন পর ঢাকা থেকে বলবো। এরপরে শাপলা চত্বরে যাবো, এরপরও যদি আমাদের কথায় কর্ণপাত না করা হয় তাহলে গণভবন বঙ্গভবন কোনোকিছুই ছাড়বো না। খুনি হাসিনাকে সরাতে আমরা রাজপথে শহিদ হয়েছি, আহত হয়েছি গুম হয়েছি কারাবরণ করেছি তবুও রাজপথ ছাড়িনি।

মামুনুল হক আরও বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল পরবর্তী ৭২ সংবিধানে ইসলামবিরোধী আইন করেছে। বিগত সরকার যে সব আইন পাস করেছে, সেখানে কোথায় কোথায় কুরআনবিরোধী ধারা রয়েছে সেগুলো সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করুন। নতুন করে যদি ইসলামবিরোধী, কুরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো ধারা আইনে সংযুক্ত করার চেষ্টা করা হয় তাহলে শাপলা চত্বরে নতুন কারবালা হবে। বন্ধুত্বের জন্য আমরা অনেকের দিকে হাত বাড়াতে পারি, কিন্তু কেউ যদি প্রভুত্বের দৃষ্টি দেয় আমরা সে চোখ উপড়ে ফেলতে প্রস্তুত আছি। বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে শুধু আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য, বাংলাদেশের উন্নয়নকে ঠেকিয়ে রাখার জন্য। বাংলাদেশকে নিজেদের দেশের করতলগত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশের দাদাবাবুরা এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার, সার্বভৌমত্বের অধিকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল। ভারত তাদের একতরফা প্রশ্রয়ের সুযোগ নিয়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল।

Advertisement

তারা বাংলাদেশকে খুনি হাসিনার মাধ্যমে তাদের একটি অঙ্গরাজ্য বানাতে চেয়েছিল। আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে তাদেরকে ক্ষমতার মসনদ থেকে সরিয়েছি কিন্তু আওয়ামী লীগের দোসররা এখনও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এদের ষড়যন্ত্র রুখতে হলে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে, বাংলাদেশকে একটি খেলাফতের রাষ্ট্র হিসেবে তৈরি করতে হবে।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আরও বলেন, এই বাংলাদেশে কোনো সাম্প্রদায়িক হানাহানি চলবে না। এই দেশে কোনো ফ্যাসিবাদের জায়গা হবে না। এই বাংলাদেশে আর কোনোদিন কোনো কুরআনের মাহফিলে ১৪৪ ধারা জারি হবে না। এই বাংলাদেশে আর কোনো কুরআনের মাহফিলে বাধা দেয়া হবে না। এই বাংলাদেশে আর কোনো আলেম-উলামাকে নির্যাতন করা হবে না। এই বাংলাদেশে বৈষম্যের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে আর কোনো ছাত্রকে প্রাণ দিতে হবে না। আমরা গড়ে তুলতে চাই সেই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। মনে রাখতে হবে এই স্বৈরাচারীর দোসরা এখনো ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে এখনো প্রশাসনের মধ্যে কিছু লোক ঘাপটি মেরে ষড়যন্ত্র করছে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

Advertisement

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা, শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার বিচার দাবি এবং নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এই গণসমাবেশের আয়োজন করে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে খেলাফত মজলিস কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত জালালী, কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা খাইরুল ইসলাম ঠাকুর ও আলেম-ওলামারা বক্তব্য রাখেন।