চোখে-মুখে সুপার গ্লু দিয়ে ধর্ষণ: মূলহোতা সেই এনামুল গ্রেফতার (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),খুলনা প্রতিনিধি,মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট ২০২৪, ৫ ভাদ্র ১৪৩১ : 

খুলনায় চোখে-মুখে সুপার গ্লু দিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় মূলহোতা সেই এনামুলসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে অভিযান চালিয়ে পাইকগাছা উপজেলার পূর্ব কাশিমনগর এলাকা থেকে মাদক বিক্রির সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি দেশীয় পিস্তল, ইয়াবা ও চেতনানাশক ওষুধ উদ্ধার করা হয়।


গ্রেফতাররা হলেন: ইমামুল জোয়াদ্দার ওরফে এনামুল, তার মা রাশিদা বেগম, আব্দুস সামাদ, সুমন হালদার।


শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুসান্ত সরকার ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।

পুলিশের দাবি, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার পূর্ব কাশিমনগর এলাকায় মাদক বিক্রি করার খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ এনামুল নামে একজনকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ওয়ান শুটারগান, এক রাউন্ড গুলি, ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে ১১ ফেব্রুয়ারি চোখে মুখে সুপার গ্লু লাগিয়ে ধর্ষণ ও ডাকাতির ঘটনায় খোয়া যাওয়া ভুক্তভোগী নারীর মোবাইল ফোনটিও তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়।
ওই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে আসামি এনামুলকে জিজ্ঞাসাদ করলে তিনি ওই ভুক্তভোগী নারীকে চোখে মুখে সুপার গ্লু লাগিয়ে স্বর্ণ ছিনিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি পুলিশকে জানায়, রাত ৮টার দিকে ওই বাড়িতে গোপনে প্রবেশ করে রান্নার সময় রাইস কুকারে চেতনা নাশক ওষুধ মিশিয়ে দেন। পরে রাতে আবার ওই বাড়িতে চুরি করতে গেলে ভুক্তভোগী নারী জেগে গিয়ে চিৎকারের চেষ্টা করলে তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে তিনি ভুক্তভোগীকে তার পকেটে থাকা সুপার গ্লু চোখে মুখে লাগিয়ে কান থেকে স্বর্ণের দুল ছিনিয়ে নেন। তবে ধর্ষণের কথা অস্বীকার করেন তিনি। পুরো ঘটনায় তিনি একা থাকার কথাও জানান।
তিনি বলেন, আমরা তাকে মূলত মাদক বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার করি। এ সময় তার কাছে পাওয়া মোবাইল ফোনটি ওই ভুক্তভোগী নারীর বলে আমরা চিহ্নিত করি। তখন তিনি আমাদের কাছে এসব বিষয় স্বীকার করেন। তবে ধর্ষণের কথা অস্বীকার করেছেন এনামুল।

Advertisement

ওই নারী তাহলে ধর্ষিত হয়েছে কি না জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ভুক্তভোগী নারী এখনও অসুস্থ থাকায় আমরা তার সঙ্গে সেভাবে কথা বলতে পারিনি। তবে আমরা পুরো বিষয়টি আরও তদন্ত করছি। ভুক্তভোগীর মেডিকেল রিপোর্ট ও অন্যান্য তদন্ত শেষে আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে ভুক্তভোগী নারী ধর্ষিত হয়েছে কি না।
ওই ঘটনায় ছিনিয়ে নেয়া স্বর্ণালংকর এনামুলের মা ফরিদা চুকনগর বাজারে একটি স্বর্ণের দোকানে বিক্রি করেন। এ ঘটনায় এনামুলের মা রাশিদা বেগম ও ওই স্বর্ণের ব্যবসায়ী সুমন হালদারকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার এনামুলের বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র আইনে নতুন করে মামলা হয়েছে। এ মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানায়, এনামুল একজন দুর্ধর্ষ অপরাধী। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় এ পর্যন্ত ৯টি মামলা দায়ের হয়েছে।

এর আগে গত সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি)  সকালে চোখ ও মুখের সুপার গ্লু লাগানো এবং অচেতন অবস্থায় এক গৃহবধূকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। ঘরের মালামাল লুট ও ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে চিকিৎসকদের জানিয়েছিলেন তারা। রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রতিবেশীরা গৃহবধূকে ঘরের মধ্যে হাত-পা বাঁধা বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করেছিলেন।

Advertisement


এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে পাইকগাছা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।