যেভাবে চীনে পাচার হচ্ছেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মেয়েরা (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিনিধি,মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১ : পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে চীনে পাচার হয়ে যাচ্ছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মেয়েরা। বিয়ে কিংবা ভালো চাকরির টোপ দিয়ে তাদেরকে নিয়ে যাচ্ছে চীনের নারী পাচারকারী চক্র।

Advertisement

প্রায় এক দশক আগে নারী পাচার শুরু হলেও সম্প্রতি বেড়েছে এই প্রবণতা। দশ বছরে কত নারী পাচার হয়েছে সেই সংখ্যা কারো কাছে না থাকলেও স্থানীয়দের ধারণা সংখ্যাটি তিন হাজারের কম হবে না।

অনুসন্ধানে দেখা যায় চীনের একদল নারী পাচারকারীর চোখ পড়েছে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে। কখনো বিয়ে, কখনো মোটা বেতনে চাকরির টোপ ফেলে সহজ-সরল-দরিদ্র পাহাড়ি মেয়েদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চীন ও হংকং-এ।

সাম্প্রতিক সময়ে শুধু খাগড়াছড়ির দিঘীনালা উপজেলার দুটি ইউনিয়ন থেকেই এপর্যন্ত ৩৬ জন নারী চীন ও হংকং-এ পাচার হয়ে গেছে। পুরো উপজেলায় এই সংখ্যা অন্তত দুইশ’ হবে বলে জানান স্থানীয়রা।

কিভাবে পাহাড় থেকে নারী পাচার হয় সেই ঘটনা প্রকাশ হয়েছে কিছুদিন আগে। রাজধানীর উত্তরা থেকে উদ্ধার হওয়া কিশোরী ভ্যালেন্টিনা চাকমা জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সাথে পানছড়ির বাসিন্দা হংকং প্রবাসী জিনিয়া চাকমার পরিচয় হয়। জিনিয়া তাকে হংকং-এ ভালো চাকরির লোভ দেখান। চাকরির লোভে বিদেশে যেতে বান্ধবী নিরাশা চাকমাকেও রাজি করায় ভ্যালেন্টিনা।

Advertisement

এরপর জিনিয়ার দেয়া নাম-ঠিকানা মত দুই বান্ধবী খাগড়াছড়ি থেকে চলে আসে ঢাকার উত্তরায় সুমি চাকমার কাছে। আর এখানে এসেই বুঝতে পারে নারী পাচারকারীদের খপ্পড়ে পড়েছে তারা।

পরে কৌশলে ফোন করে পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি জানালে পানছড়ি থানায় জিডি করা হয়। তদন্তে নেমে উত্তরা থেকে নিরাশা ও ভ্যালেন্টিনা ছাড়াও রাঙ্গামাটির তিন কিশোরীকে উদ্ধার এবং সুমি ও তার স্বামী চীনা নাগরিক জিসাও সুহুইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

খাগড়াছড়ির খাগড়াপুর মহিলা কল্যান সমিতির নির্বাহী পরিচালক শেফালিকা ত্রিপুরা জানান, বর্তমানে এটি সামাজিক ভাইরাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারী পাচার বন্ধে পাচারকারীদের তিনি দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী করেন।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, পাহাড় থেকে নারী পাচার বন্ধ করতে শুরু হয়েছে কমিউনিটি পুলিশিং।

দিঘীনালার বাবুছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গগণ বিকাশ চাকমা জানান, দরিদ্রতার কারণে পাহাড়ি মেয়েরা পাচারকারীদের সহজ শিকার হচ্ছে। পাচার ঠেকাতে দরকার সরকারের বিশেষ উদ্যোগ আর পাহাড়িদের সচেতনতা।

Advertisement

খাগড়াছড়ির বিশিষ্টজনরা জানান, পাহাড়ে শিক্ষার বিস্তারের পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর দরিদ্র মানুষের জীবনযাপনে আর্থিক সহায়তা ও স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমেই রোধ করা যাবে নারী পাচার।