ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা পণ্য মজুত করে দাম বাড়ায় তাদের গণধোলাই দেয়া উচিত। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা r
Advertisement
শেখ হাসিনা বলেন, ডিম লুকিয়ে রেখে দাম বাড়ানো হয়। যারা সরকার উৎখাতের জন্য আন্দোলনকারী তাদের হাত রয়েছে এগুলোর পেছনে। এর আগে পেঁয়াজের খুব অভাব। পরে দেখা গেলো বস্তা বস্তা পচা পেঁয়াজ পানিতে ফেলে দেয়া হচ্ছে। এদেরকে ধরে গণধোলাই দেয়া উচিত। সরকার কিছু বললে মানুষ বলবে সরকার করেছে। তাই জনগণ যদি এগুলোর প্রতিকার করে তাহলে কেউ কিছু বলতে পারবে না। নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে একটি শ্রেণি চক্রান্ত করে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যেনো ক্ষমতায় আসতে না পারে এমন ষড়যন্ত্র আগেও ছিল, এখনও আছে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ব্যক্তির উপর কৃষকদের নির্ভরশীল না থাকার উদ্যোগ নিচ্ছি আমরা। প্রথমবার সরকারে আসার পর কৃষি গবেষণার উপর গুরুত্ব দেয়ায় বর্তমানে প্রায় সবক্ষেত্রে আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রত্যেকটা সবজি এখন বারো মাস পাওয়া যায়।
এ সময় প্রত্যেকের জমিতে চাষ করার জন্য উৎসাহিত করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কৃষিতে ৪৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার।
Advertisement
তিনি বলেন, রমজানে কোনো জিনিসের অভাব হবে না। ইতিমধ্যে সব ব্যবস্থা করা আছে। রমজানে সাধারণত মানুষ কম খায়, আর আমাদের খাওয়া বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, যুদ্ধের ক্ষতিকর দিক একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকছে না। তার প্রভাব আমাদের উপরও পড়ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমরা সবচেয়ে বেশি ভালো আছি। আমি আমার ক্ষমতা সম্পর্কে যথেষ্ট জানি। মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কোনো প্লাটফর্ম তৈরির পরিকল্পনা নেই। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। এগুলো পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার জন্য হচ্ছে। যুদ্ধ কিভাবে বন্ধ করা যায় সেই প্রশ্ন করেছি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা হলেও একি কথা জানতে চাইবো।
মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে বড় শক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং আঞ্চলিক সংঘাত, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, নিউক্লিয়ার নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু নিরাপত্তা, তথ্য নিরাপত্তা, পানি নিরাপত্তা, অভিবাসন, সাপ্লাই চেইন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মহামারি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে মূলত রাষ্ট্র/সরকার প্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিও নেতারা, মিডিয়া, সুশীলসমাজ, সরকারি এবং বেসরকারি খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ করেন। এটি সমকালীন ও ভবিষ্যত নিরাপত্তার স্বার্থে উচ্চ-পর্যায়ের নিয়মিত আলোচনার একটি শীর্ষস্থানীয় ফোরাম হিসেবে বিবেচিত। এ বছরের ফোরামে ৩৫-জনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান অংশগ্রহণ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০২৪-এ যোগ দিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি জার্মানি যান। তিনি দেশে ফিরে আসেন ১৯ ফেব্রুয়ারি। মিউনিখে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দেয়া ছাড়াও বিশ্বনেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
Advertisement
তাদের মধ্যে ছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন।
মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সের সভাপতির আমন্ত্রণে সেখানে যান প্রধানমন্ত্রী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর দেশের বাইরে এটিই তার প্রথম সরকারি সফর। জার্মানিতে অবস্থানকালে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন শেখ হাসিনা।
এ সফরে জার্মানিতে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি নাগরিক সংবর্ধনায়ও অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।