ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),পাবনা-৩ প্রতিনিধি,বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩ : জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বড় হচ্ছে পাবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুরা)। এ আসনের মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষি, গো-খামার আর মাছ উৎপাদন। রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট হলেও এ অঞ্চলের মানুষের পেশার সঙ্গে সমন্বয় করে গড়ে ওঠেনি কোনো শিল্প। তাই আগামী নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি নয়, ভোটাররা দৃশ্যমান দেখতে চান সব কিছু। তারা এমন প্রার্থীকেই বেছে নিতে চান, যারা সততার সঙ্গে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবেন।
Advertisement
এ আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ১২ জন, বিএনপির ছয় জনসহ দেড় ডজন মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। প্রার্থীর ছড়াছড়ি হওয়ার কারণে এ আসনে বর্তমানে দুই দলেই রয়েছে কোন্দল ও গ্রুপিং। নির্বাচন যতোই এগিয়ে আসবে প্রার্থীদের মধ্যে ততোই গ্রুপিং বাড়বে বলে দলীয় সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, ভোট মূলত হবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সঙ্গে বিপক্ষের শক্তির। সেখানে তারা ঐক্যবদ্ধ। আর কৃষক, খামারি সবার জন্যই তারা আগামীতে কাজ করবেন।
অন্যদিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, জনগণের ভোটের অধিকার ফেরাতে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
জেলার প্রাচীনতম উপজেলার একটি চাটমোহর। উপজেলাটি ঐতিহ্যবাহী চলনবিল অধ্যুষিত। রেলপথ, নদীপথ ও সড়কপথের সুব্যবস্থা থাকায় পাবনা জেলার ৯ উপজেলার মধ্যে চাটমোহর উপজেলা ব্যবসাপ্রসিদ্ধ উল্লেখযোগ্য একটি উপজেলা।
খামারি, কৃষক ও মৎসজীবীসহ নানা পেশার মানুষের বাস ভাঙ্গুরা-চাটমোহরে। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, উৎপাদিত পণ্যের সংরক্ষণ এবং বাজারজাতের সুবিধাই তৈরি হয়নি এই অঞ্চলে। তারা জানান, একটা সময় এই অঞ্চলে নিষিদ্ধ সংগঠনের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ ছিল। সেই অভিশাপ থেকে তারা আজ মুক্ত।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মকবুল হোসেন বিএনপি প্রার্থী সাইফুল আযমকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালেও জয়ী হন তিনি। সবশেষ ২০১৮ সালেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনবারের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের অন্যতম মনোনয়নপ্রত্যাশী।
Advertisement
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চাটমোহর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ মাস্টার, পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আব্দুর রহিম পাকন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কৃষি সমবায় বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ড. ফসিউর রহমানসহ প্রায় এক ডজন প্রার্থী নৌকার মাঝি হতে চাইছেন। তবে যিনিই প্রতীক পাবেন তার পক্ষে কাজ করবেন সবাই।
বিএনপিতেও অধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীর কারণে স্থানীয়ভাবে দলটির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল-দ্বন্দ্ব রয়েছে। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এলাকায় নিজ নিজ পক্ষের নেতাকর্মী, সমর্থকদের নিয়ে আলাদাভাবে নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
চাটমোহর বিএনপির আহবায়ক সাবেক এমপি কেএম আনোয়ারুল ইসলামসহ আরও চার-পাঁচ জন বিএনপির পক্ষে নির্বাচন করতে আগ্রহী জানিয়েছেন।
নির্বাচনের আগে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের দিকে দৃষ্টি না দিয়ে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হলে দুই দলের জন্যই তা বিপর্যয় নেমে আসার আশঙ্কা দেখছেন দল দুটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তবে আগামী নির্বাচনে এই আসনে মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
চাটমোহর উপজেলার ১১ ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা, ভাঙ্গুড়া উপজেলার ছয় ইউনিয়ন, এক পৌরসভা ও ফরিদপুর উপজেলার ছয় ইউনিয়ন ও এক পৌরসভা নিয়ে এ আসনটি গঠিত। এই আসনের মোট ভোটার প্রায় সাড়ে চার লাখ। আগামী নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারেন চাটমোহরের ভোটাররা।
Advertisement