ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),টাঙ্গাইল প্রতিনিধি,শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩ : টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা বড় মনির বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলার বাদী এশা মির্জার মরদেহ নিজ বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা এশা ‘আত্মহত্যা’ করেছে।
Advertisement
শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, এ ধর্ষণ মামলায় টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরের হাইকোর্টের দেয়া জামিন ৯ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
গত ২১ আগস্ট প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সময়ের মধ্যে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর গর্ভে জন্ম নেয়া নবজাতকের ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট দিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। বড় মনিরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।
এর আগে গত ১২ জুলাই হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেন চেম্বার আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, এ মামলায় এর আগে গত ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পান গোলাম কিবরিয়া। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ৩০ এপ্রিল চেম্বার আদালত জামিন স্থগিত করে মনিরকে টাঙ্গাইলের আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। গত ১৫ মে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান। এরপর তিনি জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ গত ১১ জুলাই রুল দিয়ে মনিরকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। এ জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ফের আবেদন করলে ১২ জুলাই চেম্বার আদালত জামিন স্থগিত করে শুনানির জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন।
Advertisement
গোলাম কিবরিয়া টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের বড় ভাই এবং জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব। এক কিশোরী বাদী হয়ে ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে এ মামলা করেন। গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী নিগার আফতাবকেও মামলায় আসামি করা হয়।
এজাহারে ওই কিশোরী উল্লেখ করেছে, গোলাম কিবরিয়া তার আত্মীয় ও পূর্বপরিচিত। সম্প্রতি পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে ওই কিশোরীর বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ বিরোধের বিষয়টি গোলাম কিবরিয়াকে জানানোর পর তিনি সমস্যা সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দেন।
মামলায় ওই কিশোরী (১৭) অভিযোগ করে, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর গোলাম কিবরিয়া শহরের আদালত পাড়ায় নিজের বাড়ির পাশের একটি ভবনে ওই কিশোরীকে ডেকে নেন। সেখানে তার মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে গোলাম কিবরিয়া তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। পরে তাকে ধর্ষণ করে তার আপত্তিকর ছবি তুলে রাখা হয়। বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য গোলাম কিবরিয়া তাকে ভয়ভীতি দেখান। আপত্তিকর ওই ছবি ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় বলে ওই কিশোরী মামলায় অভিযোগ করেছে।
Advertisement
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, একপর্যায়ে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি গোলাম কিবরিয়া জানার পর গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তবে ওই কিশোরী রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে গোলাম কিবরিয়া ওই কিশোরীকে তুলে নিয়ে আদালত পাড়ার একটি বাড়িতে যান। সেখানে একটি কক্ষে ওই কিশোরীকে তালাবদ্ধ করে আবার ধর্ষণ করেন তিনি। এ ঘটনার পর গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী নিগার আফতাব ওই কিশোরীকে মারধর করেন। পরে দিবাগত রাত ৩টার দিকে ওই কিশোরীকে বাড়িতে রেখে আসা হয়।
টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা বড় মনির বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলার বাদী এশা মির্জার মরদেহ নিজ বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা এশা ‘আত্মহত্যা’ করেছে। ছবি প্রতীকী