ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার , ২৭ অক্টোবর ২০২২ : জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কিয়া’ এর প্রধান শামীন মাহফুজের নেতৃত্বে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা। তারা বান্দরবান পাহাড়ি এলাকায় একত্রিত হয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নবাদীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এর আগে গ্রেপ্তার ডাক্তার শাকির বিন ওয়ালী এই সম্মিলিত জঙ্গি সংগঠনের দাওয়া বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনি কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে লেখাপড়া করার সময় এই মতাদর্শে জড়িয়ে পরেন। পরে শাকির এই সংগঠনের সদস্যদের নিয়মিত চিকিৎসাও দিয়ে আসছিলেন।
তিনি বলেন, জঙ্গি সংগঠনের সদস্য আবদুল্লাহ, তাজুল ইসলাম ও জিয়াউদ্দিন সংগঠনের সদস্য হিসেবে কথিত হিজরতের উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়ে আসা নতুন সদস্যদের সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করতো। এছাড়া ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে হিজরত করা তরুণদের রিসিভ করে ওই আসামিরা আব্দুল্লাহর বাসায় নিয়ে যেতো এবং তাদের উগ্রবাদী ধারণায় উদ্বুদ্ধ করতো। পরবর্তীতে তাদের ট্রেনিংয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করতো তারা।
সম্প্রতি কুমিল্লা থেকে সাত জন তরুণ নিখোঁজ হওয়ার পর দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হলে সিটিটিসি ছায়া তদন্ত শুরু করে। কুমিল্লা থেকে হিজরতের উদ্দেশ্যে বের হওয়া আবরারুল হককে শনাক্ত করে রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ডাক্তার শাকির বিন ওয়ালী জানান, তিনি জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কিয়া’র দাওয়া বিভাগের প্রধান। তিনি সংগঠনের দাওয়াতি বিভাগে কাজ করতেন এবং পাহাড়ে সামরিক প্রশিক্ষণের সময় কোনও জঙ্গি সদস্য অসুস্থ হলে তার চিকিৎসা করতেন। প্রতিমাসে একবার তিনি পাহাড়ি ক্যাম্প পরিদর্শন করতেন। এর পাশাপাশি জঙ্গি নেতা শামীম মাহফুজের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।
এর আগে বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠনের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) সিটি ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আব্দুল্লাহ (২২), তাজুল ইসলাম (৩৩), জিয়াউদ্দিন (৩৭), হাবিবুবুল্লাহ (১৯) ও মাহামুদুল হাসান (১৮)। এসময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন, অন্যান্য জিনিস উদ্ধার করা হয়।
যেভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো
ক্যাম্পে তিন ভাগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো বলে জানা গেছে। প্রথম ভাগে পাহাড়ের ক্যাম্পে শারীরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। দ্বিতীয়ভাগে যুদ্ধ কৌশল যেখানে ডামি অস্ত্র দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। তৃতীয় ধাপে পেট্রলিং শেখানো হতো।
ট্রেনিং ক্যাম্পটিতে শামীম মাহফুজের পাশাপাশি তমাল, রনবীর, রাকিব, ডাক্তার শাকির বিন ওয়ালী যাতায়াত করতেন এবং সার্বিক বিষয় তদারকি করতেন। ক্যাম্প থেকে কেউ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাইলে তারা বিদ্রোহীদের হাত, পা, চোখ বেধে বন্দি করে রাখতেন।