ফেসবুকে ছবি, লজ্জায় স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,নড়াইল প্রতিনিধি,০৩ এপ্রিল : ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি প্রকাশের পর লজ্জায় আত্মহত্যা করেছেন নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী।

বৃহস্পতিবার (০২ এপ্রিল) সকালে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করে।

এর আগে তার কথিত প্রেমিক হাকিম মুন্সীর (২৪) প্রতি নানা অভিযোগ করে আবেগঘন চিঠি লেখেন এবং চিঠিতে তার মৃত্যুর জন্য হাকিমকে দায়ী করেন লায়লা খানম নামের এই স্কুলছাত্রী।

সৌদিপ্রবাসী হাকিম লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের ধলইতলা গ্রামের গোলাপ মুন্সীর ছেলে।

লায়লার মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার মা বাদী হয়ে হাকিম মুন্সী, তার বাবা গোলাপ মুন্সী ও ভাই লালু মুন্সীকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

তবে অভিযুক্ত হাকিমদের বাড়ির সবাই পালিয়েছেন।

আত্মহননকারী লায়লার মা মঞ্জু বেগম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ঘরের মধ্য থেকে মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

এরপর টেবিলের ওপর থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা। চিঠিতে মায়ের উদ্দেশে  লায়লা লিখেছে-

‘মা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। প্রিয় মা, আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও। আমার জন্য তোমাকে নানান মানুষ নানান কথা বলছে। শুধু আমার একটি ভুলের জন্য তোমাকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে….।’

লায়লার চাচা চান্দু শেখ জানান, প্রতিবেশী সৌদি প্রবাসী হাকিম মুন্সী সম্প্রতি দেশে আসার পর লায়লার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। বিয়ের প্রলোভনে তারা দু’জনে অন্তরঙ্গ ছবি তোলে। এরপর মাসখানেক আগে হাকিম সৌদি আরবে চলে যায়। সেখানে (সৌদিআরব) গিয়ে লায়লার অন্তরঙ্গ ছবিগুলো ৩১ মার্চ ফেসবুকে প্রকাশ করে হাকিম মুন্সী। এসব অন্তরঙ্গ ছবি গ্রামের বিভিন্ন পেশার মানুষের নজরে আসার পর কয়েকদিন ধরে লায়লাকে নিয়ে সমাজে নানা ধরণের কটূক্তি চলতে থাকে। একপর্যায়ে লজ্জা, ক্ষোভ ও অভিমানে স্কুলছাত্রী লায়লা বৃহস্পতিবার সকালে আত্মহত্যা করে।

এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, ‘লায়লার ময়নাতদন্ত নড়াইল সদর হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় লায়লার মা বাদী হয়ে হাকিমকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’