ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,বিনোদন প্রতিনিধি,১২ মার্চ : অবশেষে অনীকের বিয়ের বিষয়ে মুখ খুললেন শাবনূর। বললেন অনীকের নতুন পাসপোর্টে স্ত্রী হিসেবে নাম রয়েছে ‘আয়েশা আক্তার’ নামের এক মহিলার। অস্ট্রেলিয়া থেকে মুঠোফোনে ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম পত্রিকার কাছে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে শাবনূর বলেন, বিয়ের পর থেকে তার নানা অনৈতিক কর্মকান্ড ও আমার ওপর তার অত্যাচার-অবিচারের বিষয়টি কাউকে জানানোর প্রয়োজন মনে করিনি কখনো। কারণ এটি ছিল একান্তই আমাদের পারিবারিক বিষয়। যখন পরিস্থিতি সহ্যের বাইরে চলে যায় তখন অপারগ হয়ে তাকে তালাক দিতে বাধ্য হই। এ বিষয়টিও মিডিয়া, চলচ্চিত্র বা অন্য কাউকে জানাইনি। এমনকি আমার আইনজীবীকেও বিষয়টি গোপন রাখতে বলেছিলাম। শেষ পর্যন্ত যেভাবেই হোক খবরটি প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পরও মিডিয়া বা অন্য কারও কাছে অনীকের অন্যায় অপরাধের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরিনি। শুধু বলেছি আমাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় তাকে তালাক দিতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু অনীকই শেষ পর্যন্ত আমাকে মুখ খুলতে বাধ্য করেছে। সে মিডিয়ার কাছে বলেছে আমি নাকি আগে এক চীনা নাগরিককে বিয়ে করেছি। আরও বলেছে আরেকজনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে এবং তাকে নিয়ে আমি মালয়েশিয়ায় গিয়েছি। আমি যদি অন্য কাউকে বিয়ে করে থাকতাম বা অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক থাকত তাহলে তাকে বিয়ে করলাম কেন? অনীককেও তো বিয়ে করতে চাইনি। আমরা ২০০৮ সালে ‘বধূ তুমি কার’ ছবিতে কাজ করতে গেলে সে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করে আমাকে বিয়ে করে। অনীক জানিয়েছিল সে নাকি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, সে ঢাকায় আমাকে একটি ফ্ল্যাট দেখিয়ে বলেছিল এটি তার। বিয়ের পর দেখি সবই মিথ্যা, সে তেমন পড়াশোনাই করেনি। আর যে ফ্ল্যাটটি আমাকে দেখিয়েছিল সেটি আসলে তার এক বন্ধুর। সবচেয়ে জঘন্য মিথ্যাচার করেছে সে তার বিয়ের কথা গোপন করে। আমাকে বিয়ে করার আগেই সে মৌরি ইসলাম মৌ নামে একটি মেয়েকে বিয়ে করেছিল। বিষয়টি আমি জেনে গেলে বিপদে পড়ার আশঙ্কায় মৌকে সে ভয়ভীতি দেখিয়ে তালাক দেয়। আমাদের বিয়ের পরও আমাকে না জানিয়ে বা আমার অনুমতি না নিয়ে আয়েশা আক্তার নামে এক মহিলাকে সে বিয়ে করে। এক স্ত্রী বর্তমান থাকতে সে আরেকটি বিয়ে করে কীভাবে? এটি কী বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়? তারপরও তাকে কিছু বলিনি বা তার বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিইনি। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সংসার টিকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। শেষ পর্যন্ত আমার ও সন্তানের প্রতি তার অবহেলা ও অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেলে আর সহ্য করতে না পেরে তাকে তালাক দিতে বাধ্য হই। অস্ট্রেলিয়ায় সন্তান জন্মের সময় বা পরে এত বছরেও সে সেখানে সন্তানকে দেখতে কখনো যায়নি। তাকে আমি সেখানে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিলেও নানা অজুহাতে সেখানে যাওয়া এড়িয়ে গেছে। সে তার সন্তানের ভরণ-পোষণ দূরে থাক, কখনো এক কৌটা দুধ পর্যন্ত কিনে দেয়নি। আমার সামর্থ্য ছিল বলে বাচ্চাটাকে আজ এ পর্যন্ত বড় করে তুলতে পেরেছি। আমার যদি আর্থিক সামর্থ্য না থাকত তাহলে আমাকে ও সন্তানকে আজ ভিক্ষার থালা হাতে নিয়ে পথে গিয়ে দাঁড়াতে হতো। সে আমাদের দেখাশোনা করবে কীভাবে। সে তো অশিক্ষিত ও বেকার। একই সঙ্গে চরম লোভী। সে আমাকে মিথ্যা প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেছিল আমার বিষয়-সম্পত্তির জন্য। আমার টাকায় সে রাজার হালে চলতে চেয়েছিল। আমি শুধু তাকে নয়, তার পুরো পরিবারকে চালিয়েছি। সে আমার কাছে ফ্ল্যাট-বাড়ি-গাড়ি দাবি করেছিল। আমি তাকে সবই দিতাম। কিন্তু যখন টের পেলাম সে মাদক ও পরনারীতে আসক্ত এবং নিজের স্ত্রী-সন্তানের প্রতি উদাসীন তখন কীভাবে তাকে এসব দেব? বাচ্চা জন্মের পরও রাতে মাদকাসক্ত হয়ে সে ঘরে ফিরত। আমি তাকে সন্তানের দিকে তাকিয়ে হলেও এসব বদঅভ্যাস ত্যাগের জন্য অনুরোধ করতাম। বিপরীতে আমার ওপর নেমে আসত অকথ্য নির্যাতনের স্টিমরোলার। আর অনীকের এসব অন্যায় কাজের পেছনে ইন্ধন জোগাত তার মা। আমার কাছ থেকে ফ্ল্যাট-বাড়ি-গাড়ি না পেয়ে তার মায়ের উৎসাহ ও প্ররোচনায় সে আয়েশা আক্তার নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেছে। সেই মহিলা ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্টের কাজ করে। এ কাজে বিদেশেও যাওয়া-আসা আছে ওই মহিলার। কিছুদিন আগে সে অনীককে নিয়েও বিদেশে গিয়েছে। অনীক ওই মহিলার কাছ থেকে একটি গাড়ি নিয়ে এখন নিজের নামে গাড়ির কাগজপত্র করে আমাকে বলে এখন নাকি সে বাড়ি-গাড়ির মালিক হচ্ছে। বিআরটিএ তে খোঁজ নিলেই জানা যাবে গাড়িটি তার নাকি ওই মহিলার কাছ থেকে নেওয়া। অনীকের মা-বাবা ও ওই মহিলা একসঙ্গে সম্প্রতি কক্সবাজার বেড়াতে যায়। এসব কিছুর প্রমাণ আমার কাছে আছে। অনীক বলেছে, তার নতুন বিয়ের প্রমাণ দিতে না পারলে আমাকে মাফ চাইতে হবে আর আমি যদি বিয়ের প্রমাণ দিতে পারি তাহলে সে মাফ চাইবে ও যে কোনো শাস্তি মাথা পেতে নেবে। এখন আমি প্রমাণ দিলাম।
আপাতত তার পাসপোর্টের একটি কাগজ প্রকাশ করলাম। এরপরও যদি সে মাফ না চায় তাহলে সে নতুন বউকে নিয়ে দেশ-বিদেশ যে ঘুরে বেড়িয়েছে সেসব ছবি আছে আমার কাছে। সব ফাঁস করে দেব। সবচেয়ে বড় কথা হলো, অনীকের নতুন পাসপোর্টের কপিও আমার কাছে। সেখানে স্ত্রী হিসেবে আমি নই, আছে আয়েশা আক্তারের নাম। বিয়ে না করলে তার নাম ব্যবহার করল কেন? যেসব হোটেলে তারা ছিল, সেখানকার সবরকম তথ্য সংগ্রহ করে তারপর তার বিয়ের কথা ফাঁস করেছি। এখন তার কথামতো তাকে আমার কাছে মাফ চাইতে হবে। না হলে তার অবৈধ কাজকর্মের অবিশ্বাস্য সব প্রমাণ ফাঁস করে দেব।