এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা: ফল চ্যালেঞ্জ পৌনে ৫ লাখ উত্তরপত্রের

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,১৫ মে : এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২ লাখের বেশি শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ের পৌনে ৫ লাখ উত্তরপত্রের ফল চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছে। আবেদনের তালিকায় শীর্ষে আছে গণিত বিষয়। এছাড়া রয়েছে ইংরেজি, ইসলাম শিক্ষাসহ অন্যান্য বিষয়। আগামী ৩০ মে পুনঃনিরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। এসএসসি ও এইচএসসিসহ পাবলিক পরীক্ষায় কাক্সিক্ষত ফলাফল করতে না পেরে শিক্ষার্থীরা খাতা ‘চ্যালেঞ্জ’ করে থাকে। আবেদনকারীদের ধারণা, তাদের খাতাগুলো ‘পুনর্মূল্যায়ন’ হয়ে থাকে। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। প্রাপ্ত নম্বর গণনা, নম্বর প্রদানের ভুলভ্রান্তি, হিসাব-নিকাশসহ চারটি বিষয় দেখা হয় মাত্র। কোনো উত্তরে নম্বর-কমবেশি পেয়ে থাকলে তা ঠিক করা হয় না। অনেকে মনে করছেন পরীক্ষার খাতা ‘পুনঃনিরীক্ষা’ নামে শিক্ষার্থীরা প্রকারান্তরে প্রতারিত হচ্ছে।

জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বোর্ডের আইন অনুযায়ী আমরা খাতা পুনঃমূল্যায়ন করতে পারি না। আইনে কেবল পুনঃনিরীক্ষার ম্যান্ডেট দেয়া আছে। তিনি বলেন, এজন্যই এবার খাতা মূল্যায়নে নতুন পদ্ধতি আনা হয়। পরীক্ষকদের সর্বোচ্চ নজরদারি ও পর্যবেক্ষণে রেখে এবার খাতা মূল্যায়ন করা হয়েছে। স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন পদ্ধতি চালু হলে খাতা মূল্যায়নে আরও নিখুঁত হবে।’ গত ৪ মে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। সম্মিলিতভাবে এবার পাসের হার ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। পাস করেছে ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৭২২ জন। সর্বোচ্চ সাফল্য বলে বিবেচিত এ-৫ লাভ করেছে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৬১ জন পরীক্ষার্থী।
গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ কম। জিপিএ-৫ কমেছে ৫ হাজার। এই পাস ও জিপিএ-৫ কমে যাওয়ার পেছনে কুমিল্লা ও বরিশাল বোর্ডের পাসের হারকে দায়ী করা হয়। এছাড়া ইংরেজি এবং গণিত বিষয়ে অপেক্ষাকৃত খারাপ ফল এবং নতুন পদ্ধতিতে খাতা মূল্যায়নকেও চিহ্নিত করা হয়। টেলিটক সূত্রে জানা গেছে, এবার ২ লাখের বেশি শিক্ষার্থী তাদের ফল চ্যালেঞ্জ করেছে। ৪ লাখ ৭২ হাজার খাতার মধ্যে গণিত বিষয়ের আবেদনই সবচেয়ে বেশি। এরপর আছে ইংরেজি। তবে ঢাকা বোর্ডে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আবেদন পড়েছে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে তুলনামূলক খারাপ ফল বলে জানা গেছে।
ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার যুগান্তরকে বলেন, রসায়ন, বাংলা, সামাজিক বিজ্ঞান, সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়েও আবেদন বেশকিছু আবেদন পড়েছে। এদিকে এবার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষা বাবদ আয় হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। প্রতি উত্তরপত্র চ্যালেঞ্জ বাবদ বোর্ডগুলো ১২৫ টাকা করে ফি নিয়ে থাকে। সেই হিসেবে বোর্ডগুলো এবার এই আয় করেছে। বোর্ড সূত্র জানায়, এই অর্থ থেকে ১০ শতাংশ নিয়ে থাকে টেলিটক। এছাড়া প্রতি উত্তরপত্র মূল্যায়ন বাবদ ৮ টাকা করে দেয়া হয়। এছাড়া নিরীক্ষকদের টিএডিএ এবং বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও মোটা অংকের অর্থ নিয়ে থাকে। এর বাইরে পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজের জন্য বাড়তি বোনাসও নিয়ে থাকেন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
জানা গেছে, দশ বোর্ডের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ঢাকা বোর্ডে। এই বোর্ডের ১ লাখ ৩১ হাজার ২২টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণ চায় শিক্ষার্থীরা। এরপরই কুমিল্লা বোর্ড। এবারের এসএসসিতে খারাপ ফলের তালিকায় শীর্ষে থাকা এই বোর্ডে আবেদন পড়েছে প্রায় ৬৫ হাজার। এছাড়া বরিশালে সাড়ে ২৩ হাজার, চট্টগ্রামে প্রায় ৫৮ হাজার, দিনাজপুরে প্রায় ৩৭ হাজার, যশোরে প্রায় ৪৪ হাজার, মাদ্রাসা বোর্ডে ৪২ হাজার, রাজশাহীতে ৩৮ হাজার, সিলেটে ২২ হাজার, কারিগরিতে ১২ হাজার খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন পড়েছে।