ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,১০ মে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভিশন-২০৩০- অন্য দলের কাছ থেকে ধার করে নেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ বুধবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
এসময় তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার এই ভিশন-২০৩০ একটি ফাঁকা প্রতিশ্রুতির ফাপাঁনো রঙিন বেলুন; এই বেলুন অচিরেই চুপসে যাবে। জাতির সাথে একটি তামাশা ও প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘পরের মেধাসত্ব চুরি করা একটি নৈতিক অপরাধ। এটা এক ধরনের পলিটিক্যালি ডিসঅনেস্টলি একটি রাজনৈতিক দল কতটুকু দেউলিয়া হলে অপর একটি রাজনৈতিক দলের দেওয়া আইডিয়া এবং থট্স নির্লজ্জভাবে চুরি করতে পারে। বিএনটি ইমিটেট করতে পারে। কিন্তু ইনোভেট করতে পারে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আপনারা জানেন, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির সামনে ‘ভিশন-২০২১’ তথা রূপকল্প-২০২১ উপস্থাপন করেছিলেন। ইতোপূর্বে কোন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য কোন ধরনের রোডম্যাপ উপস্থাপন করেনি। জনগণ ২০০৮ সালে নিরঙ্কুশভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘ভিশন-২০২১’ তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ-এর ওপর আস্থা স্থাপন করে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেছে। বাংলাদেশের জনগণ নিরবচ্ছিন্নভাবে গত ৯ বছর ধরে প্রত্যক্ষ করেছে একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য কি ‘ভিশন’ থাকা উচিত। জননেত্রী শেখ হাসিনা শুধু কাগজে কলমে নয়, স্বপ্নে নয়, বাস্তব অর্থেই তার ভিশন-২০২১ বাস্তবায়ন করে চলছেন। যার প্রতিফলন দেশের আজকে সার্বিক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। এই ভিশন-২০২১ এর কারণেই আজ বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং গণমাধ্যম বাংলাদেশের এই অগ্রগতিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশ আজ একটি অত্যন্ত শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়েছে।”
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আজকের এই ভিশন-২০৩০ একটি মেধাহীন, অন্ত:সারশূন্য, দ্বিচারিতাপূর্ণ ও জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রলাপ ছাড়া কিছুই নয়। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি’র ভিশন হচ্ছে হাওয়া ভবন বানিয়ে লুটপাট, দুর্নীতি আর এতিমের টাকা মেরে খাওয়ার ভিশন। মূলত, এই বিএনপি এবং তার প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার সহযোগী ও বেনিফিশারি হিসেবে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল না করলে গণতন্ত্র, সংবিধান ও আইনের শাসনকে হত্যা না করলে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই বিশ্ব দরবারে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতো এবং খালেদা জিয়াকে আওয়ামী লীগের আইডিয়া চুরি করে জাতিকে ছবক দিতে হতো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আজকের বক্তব্য তার দলের অজ্ঞতাকে নগ্নভাবে প্রকাশ করেছে। তিনি অনেক বিষয়ে উপস্থাপন করেছেন যেগুলি ইতোমধ্যেই জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং চলমান রয়েছে। তাদের কাছে সততার বুলি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, মানবাধিকার ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার কথা শ্রবণ জাতির জন্য খুবই অপমানজনক। কারণ তাদের নেতা জিয়াই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর ইনডিমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বাংলাদেশে বিচারহীনতার নজির স্থাপন করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত চেতনা ও মূল্যবোধকে জলাঞ্জলি দিয়ে বাংলাদেশের সংবিধানের চরিত্র পরিবর্তন করেছিল। আজকে তারা ঠিক একই কায়দায় বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চায়।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক অবকাঠামো অন্যান্য দেশের তুলনায় ভিন্ন। এই ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক অবস্থানের কথা জেনেও সংসদে উচ্চকক্ষ প্রবর্তন করে কাকে খুশি করতে চান?
রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় বিষয়ে খালেদার বক্তব্যের সমালোচনা করে কাদের বলেন, রাষ্ট্রপতিকে তিনি কি সম্মান করবেন। তার আমলে তো রাষ্ট্রপতিকে অসম্মান করা হয়েছিল, সেটা জাতি ভুলে যায়নি।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া যে ভিশনের কথা বলেছেন, যা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন; তার অনেকগুলো ইতোমধ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাস্তবায়িত। অনেকগুলো চলমান।
কাদের বলেন, তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সুশাসনসহ অন্য যে বিষয়গুলো বলেছেন, সেসব তার মুখে শোনা জাতির জন্য সম্মানজনক নয়। কারণ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান তো ইনডেমটিটি জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথাও এবারও খালেদা জিয়া এড়িয়ে গেছেন। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে যে আছেন, সেটা তার অবস্থানের মাধ্যমেই স্পষ্ট।