ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,রাজশাহী ব্যুরো,২৩ এপ্রিল : রাজশাহীতে মৃত ব্যক্তির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সেজে, তার সই জাল ও ভুয়া হিসাব নম্বর খুলে ব্যাংক থেকে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে তারই বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে।
এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স প্রমিনেন্ট কনস্ট্রাকশন। এর স্বত্ত্বাধিকারী ছিলেন রাজশাহী শিল্প ও বণিক সমিতির সাবেক প্রশাসক জিয়াউল হক। গত বছর ২৪ এপ্রিল তিনি নিজ কার্যালয়ে গুলিতে নিহত হন।
জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি জানতে পেরে জিয়াউল হক টুকুর স্ত্রী নুরুন্নাহার সংশ্লিষ্ট ব্যাংকসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
তবে নিহত ব্যবসায়ীর বড় ভাই আজমল হক টাকা উত্তোলনের ঘটনা স্বীকার করে বলেছেন, এ টাকায় তিনি ভাইয়ের দেনা পরিশোধ করছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জিয়াউল হকের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী নুরুন্নাহার, ছেলে ফাহিম ফয়সাল ও মাহীর ফয়সাল আদালতের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সব রকম লেনদেন করার আইনগত ক্ষমতা পান। রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলে তাদের একটি কাজের বিল ছিল। এ জন্য নুরুন্নাহার স্বামীর মৃত্যুর পর গত বছর ৬ জুন রেলওয়ের সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক,পশ্চিমের কার্যালয়ে প্রমিনেন্ট কন্সট্রাকশনের মালিকানা পরিবর্তনের কাগজপত্র দিয়ে মীর প্রতিনিধি হিসেবে অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার আবেদন করেন। রেলওয়ে কর্র্তৃপক্ষ গত বছর ১২ জুন তাকে উত্তরাধিকার হিসেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্য পরিচালনার অনুমতি প্রদান করে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এ কাজের একটি বিল হয়, যার বই নম্বর ১০৬০২৬ এবং চেক নম্বর ৫৩০১২৭৬। টাকার পরিমাণ ১৩ লাখ ৫২ হাজার ৯৯০। রেলওয়ে থেকে জিয়াউল হকের স্বাক্ষর জাল করে চেকটি উত্তোলন করা হয়েছে এবং মেঘনা ব্যাংকের রাজশাহী শাখায় মেসার্স প্রমিনেন্ট কনস্ট্রাকশনের নামে ভুয়া হিসাব নম্বর খুলে বিলের সব টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানার পর নুরুন্নাহার গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশ রেলওয়ে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং গত ৪ এপ্রিল রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে মেঘনা ব্যাংকের রাজশাহী শাখার ব্যবস্থাপক হেলাল উদ্দিন বলেন, তিনি ব্যাংকের এ শাখায় যোগদান করার আগে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে তিনি শুনেছেন, নিহত ব্যবসায়ী জিয়াউল হকের বড় ভাই আজমল হক দায়িত্ব নিয়ে এ কাজ করেছেন।
যোগাযোগ করা হলে আজমল হক ঘটনাটি স্বীকার করে বলেন, ভাইয়ের লাশের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, ভাইয়ের কোনো ঋণ থাকলে তিনি পরিশোধ করবেন। তিনি বলেন, তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী এই দেনাটা পরিশোধ করতে চাচ্ছিল না। এ জন্য তিনি বাধ্য হয়ে একটু অনিয়ম করে হলেও ভাইয়ের দেনা পরিশোধ করার জন্য তিনি এ কাজ করেছেন। এটা তাদের পরিবারের সবাই জানে।
নুরুন্নাহার বলেন, দুটি সন্তান নিয়ে এখন তিনি অসহায়। স্বামী মারা গেছেন। এই সুযোগে তারা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে টাকা তুলে নিয়েছেন। এখন পরিবারের অন্য সদস্যরাও তাকে হুমকি দিচ্ছেন।