রোজার আগে মূর্তি না সরালে সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,২২ এপ্রিল : রোজার আগেই গ্রিক মূতি না সরালে ঈদের পর সুপ্রিমকোর্ট ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। তিনি বলেন, মূর্তির জায়গা মন্দিরে। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে মূর্তি সরাতে হবে। মূর্তি না সরালে ১৭ রমজান সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে দলের উদ্যোগে আয়োজিত মহাসমাবেশে পীর সাহেব চরমোনাই এ কথা বলেন।
স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে আমরা শঙ্কিত মন্তব্য করে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, জাতীয় ঈদগাহের পাশে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপন করে মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনায় সবচেয়ে বড় আঘাত হানা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মূর্তি কিভাবে এলো, কোথায় থেকে এলো, কে বসালো, তিনি তা জানেন না। শুনেছি প্রধান বিচারপতির একক সিদ্ধান্তে ‘মূর্তি’ স্থাপিত হয়েছে। তিনি বলেন, কাদের স্বার্থে গ্রিক ‘মূর্তি’ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হলো? এটা জনতার প্রশ্ন।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির গ্রিক দেবীর প্রতি কোনো ভক্তি বা অনুরাগ থাকলে এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়। তার এ পছন্দকে তিনি জাতীয়ভাবে চাপিয়ে দিতে পারেন না। ‘মূর্তি স্থাপন করে তিনি দেশের সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। এমন একজন বিতর্কিত ও বিচারপতি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আসনে থাকতে পারেন না। বিতর্কিত বিচারপতি এস কে সিনহার পদত্যাগ করা উচিত।
মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিস্টান অধ্যুষিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের সামনেও সর্বোচ্চ আইনদাতা হিসেবে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নাম স্থাপিত আছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সামনে গ্রিক দেবী লেডি জাস্টিস-এর মূর্তি স্থাপন করে মুসলিম সাংস্কৃতিক চেতনা ধ্বংসের অপচেষ্টা করা হচ্ছে। মাটি বা ধাতবের তৈরি ‘মূর্তি ন্যায় বিচারের প্রতীক হতে পারে না। কারণ মূর্তির বাকশক্তি ও বোধশক্তি নেই, রায় দিতে পারে না। সৃষ্টিকর্তা ও তার নাজিল করা কুরআন হচ্ছে ন্যায় বিচারের প্রতীক। আল্লাহ ন্যায় বিচারের সব পদ্ধতি পবিত্র কুরআনে লিপিবদ্ধ করেছেন। আর আল্লাহর রাসুল (সা.) তা পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করেছেন। এ জন্যই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ন্যায় বিচারক রূপে প্রতিষ্ঠিত।
চরমোনাইপীর বলেন, ভারত সফর করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্য কি অর্জন করেছেন এবং স্পর্শকাতর প্রতিরক্ষা সমঝোতার বিষয়ে কি আছে, দেশবাসীর সামনে তা স্পষ্ট করেন। আইন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধসহ আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখাসহ গ্যাস বিদ্যুৎ পানির দাম কমাতে হবে। জঙ্গিবাদ সম্পর্কে তিনি বলেন, ইসলামে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোন স্থান নেই। সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদীরা ইসলাম বিরোধীদের দ্বারা ব্যবহূত হচ্ছে।
পীর সাহেব আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও ইনু, মেনন, মাইনুদ্দীন খান বাদলসহ মূর্তিপ্রেমী ইসলাম বিদ্বেষী একটি মহল যেভাবে উ কথাবার্তা বলছে তাতে তাদের জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়াটা দেশবাসীর জন্য লজ্জার বিষয়। তিনি আগামীতে এসব বেআদব ও অসভ্য লোকদের কাছে আওয়ামী লীগকে তাদের নৌকা ভাড়া না দেয়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রেজাউল করীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী যাদের খুশি করার জন্যে সংবিধানের মূলনীতি থেকে আল্লাহ ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষাতা বসালেন, তারা আগামী নির্বাচনে আপনাকে ভোট দেবে না। পূর্ব ঘোষিত এই মহাসমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুমতি না দেয়ায় সমালোচানা করেন মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম, মাওলানা আব্দুল হক আজাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন প্রমুখ।