আজ মাগুরা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,২১ মার্চ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে মাগুরায় যাচ্ছেন আজ। তিনি ১৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এছাড়া তিনি বিকেল দুটোয় মাগুরাস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব মামুন-অর-রশীদ জানান, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মাগুরা হাসপাতাল, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়ামসহ প্রায় ৩১০ কোটি টাকার ১৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৯টি নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী।

মাগুরা স্টেডিয়ামে প্রস্তুতকৃত ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে ১৫০ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে সম্পন্ন হওয়া ১৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রকল্পগুলো হচ্ছে: মাগুরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেঙ্ ভবন, মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, শ্রীপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, মহাম্মদপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, ফটকি নদীর রপর ১০০.১০ মিটার ব্রিজ নির্মাণ, কাটাখালী জিসি-ইছাখাদা আর অ্যান্ড এইচ পর্যন্ত প্রায় ৯.৭১ কিলোমিটার সড়ক, ৩০.৫০ মিটার নতুন বাজার সেতু, ৩৫০ ঘনমিটার প্রতি ঘণ্টা ক্ষমতাসম্পন্ন ভূগর্ভস্থ পানি শোধনাগার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়াম, সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রশাসনিক ভবন, বেলনগর এলাকায় হেচারিসহ আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার (তৃতীয় পর্যায়), আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণ ভবন ও অতিথিশালা, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, ৫০ শয্যার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ ভবন, শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্কে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ উদ্বোধন করেন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনায় মাগুরা টেঙ্টাইল মিল পুনঃউৎপাদন কার্যক্রম, শালিখা উপজেলার আড়পাড়া মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং মাগুরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ ১৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী ৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে মাগুরায় এখন উৎসবের আমেজ চলছে। শহর সাজানো হয়েছে বিলবোর্ড আর ব্যানার ফেস্টুনে। এইসব ব্যানার ফেস্টুনে শেখ হাসিনা সরকারের সাফল্যসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনও প্রধানমন্ত্রীর এই সফর সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে।
আজ মাগুরা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
মাগুরায় প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা।

উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৯৮ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাগুরায় ‘বিকশিত মাগুরা’ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসেন। এরপর ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা মাগুরায় আদর্শ কলেজ মাঠের জনসভায় বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি মাগুরার উন্নয়নের দায়িত্ব নিজের বলে ঘোষণা দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মাগুরার উন্নয়নের বিষয়ে শেখ হাসিনার সুনজর দেখা গেছে বলে জানান দলীয় নেতা-কর্মীরা।

প্রাধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে মাগুরাবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।

২০০৮ সালে মাগুরা আদর্শ কলেজের জনসভায় জননেত্রী শেখ হাসিনা মাগুরার উন্নয়নের যে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তার  সবই তিনি পূরণ করছেন বলে জানান সাইফুজ্জামান শিখর।

মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুন্ডু বলেন, মাগুরাবাসী বরাবরই এই জেলার দুটি আসন থেকে নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করেছে। এই জেলা আওয়ামী লীগের একটি শক্ত ঘাঁটি হিসেবেও পরিচিত। প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে যে কারণে মাগুরাবাসী উন্মুখ হয়ে আছে। মাগুরার জনসভাটি স্মরণকালের একটি মহাসমাবেশে রূপ নেবে।

সে লক্ষ্যে জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল কাজ করছে বলে তিনি জানান।

এদিকে মাগুরায় প্রধানমন্ত্রীর সফরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। মাগুরা পুলিশ সুপার মো. মুনিবুর রহমান বলেন, পুলিশের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি সরকারের সকল গোয়েন্দা সংস্থা ও বিশেষ বাহিনীর সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। মাগুরার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি বাহিনীর সঙ্গে তথ্যের আদান প্রদানের মাধ্যমে নিজেদেরকে সার্বক্ষণিক আপডেট রাখা হচ্ছে।