রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় মামলার বাদীকে মারধর গুলি করতে উদ্যত: আরপিএমপি ডিসি ক্রাইম শিবলিকে পদ থেকে অবব্যতি

SHARE

(মোহাম্মদ শিবলি কায়সার)

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রংপুর কোতয়ালী প্রতিনিধি,শনিবার   ১৫ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ১ ১৪৩১ :

বৃহস্পতিবার রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় থানায় মামলার বাদীকে মারধরের পরে গুলি করে হত্যার চেষ্টার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) প্রশাসনে তোরপাড় শরু হয়েছে। এ পরিস্থিতির মুখে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা (সাবেক ডিসি ক্রাইম) মোহাম্মদ শিবলি কায়সারকে বৃহস্পতিবার রাতেই তার ওই পদ থেকে সরিয়ে (ক্রাইম এ্যান্ড অব) পদে বদলী করা হয়েছে।

Advertisement

ওই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে কোতয়ালী মেট্রোপলিটন থানা পুলিশ। বিষয়টি পুলিশ হেড কোয়াটার্সে জানানো হয়েছে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এক উপ-পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় চাঁদাবাজীর মামলা করতে আসেন মামলার বাদী পলাশ হাসান। মামলায় পুলিশের ওই কর্মকর্তা মোহাম্মদ শিবলি কায়সারকে আসামী করা হতে পারে এই খবর পেয়ে তিনি থানায় এসে মামলার বাদীকে মারধড় ও কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবলের কাছ থেকে রাইফেল কেড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালান। পলাশ হাসানের দায়েরকৃত মামলায় তিনি উল্লেখ করেছেন, রংপুর মহানগরীর নিউ সেনপাড়ার বাসিন্দা লিপি খান ভরসা। তিনি বিশিষ্ট শিল্পপতি জাতীয় পার্টির একাধিকবার সাবেক সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত করিম উদ্দিন ভরসার পুত্রবধূ। লিপি খান ভরসাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় আসামি করা হয়। তবে এ মামলা নিয়ে লিপি খান ভরসার অভিযোগ রয়েছে, পারিবারিক জমিজমা ও নগরীর সেনপাড়ার বাসা নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে ওই মামলায় আসামি করা হয়। এর বিপরীতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি আওয়ামীলীগ নেত্রী ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বর্তমানের কারারুদ্ধ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতা টিপু মুনশির সাথে পারিবারিক সূত্রে ঘনিষ্ট। তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে

Advertisement

বৈষ্যম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে তৎপর ছিলেন। এই মামলার আসামী থেকে নিজেকে রক্ষা করতে তিনি নানাভাবে পুলিশের কর্মকর্তা মোহাম্মদ শিবলি কায়সারের কাছে তদ্বির করেন। এরই ধারাবাহিকতায় রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক ও ব্যবসায়ী নেতা অমিত বণিক এর সাথে তার পরিচয় হয়। অমিত বণিকের সাথে পরিচয়ের সূত্র পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শিবলি কায়সারের সাথে নিজের সখ্যতা আছে এই কথা বলে লিপি খান ভরসাকে সেই মামলা থেকে নাম বাদ দিয়ে ও ‍সুরক্ষা দেয়ার দায়ীত্ব নেন। এই কথা লিপি খান ভরসার সাথে আলোচনার জন্য গোপনে ঢাকায় ওই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করার কথা বলে ১০ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। এই টাকার অঙ্ক কমিয়ে লিপি খান ভরসা দুই লাখ টাকা দিতে রাজি হন। মামলা থেকে তার নাম কেটে দেয়ার অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে ব্যবসা ভালো হলে তখন আরো টাকা দেবেন বলে জানান লিপি খান ভরসা। এই সংক্রান্ত একটি অডিও কল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরই প্রেক্ষিতে অমিত বণিকের নামে লিপি খান ভরসার ম্যানেজার পলাশ হাসান বাদি হয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকালে একটি চাঁদাবাজির মামলা করতে আসেন থানায়। মামলার বাদী পলাশ হাসান তার অভিযোগে লেখেন, ‘আমি লিপি খান ভরসার ম্যানেজার। তার স্থাবর সম্পত্তি ও ব্যবসা দেখা শুনা করি। লিপি খান ভারসার সঙ্গে ব্যবসা ও সম্পত্তি নিয়ে পরিবারের লোকজনের সাথে বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধের কারণে তাকে মামলা জড়ানো হয়েছে। ২০২৪ সালের ২৩ নভেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে একটি হত্যা চেষ্টার মামলায় লিপি খান ভরসাকে আসামী করা হয়। লিপি খান ভরসার পূর্ব পরিচিত অমিত বনিক এর সঙ্গে মোবাইলে কথোপকথোন হয়, সে সময় তিনি জানান পুলিশের সঙ্গে তার সখ্যতা আছে এবং গত ১৪ জানুয়ারী তিনি ও লিপি খান ভরসাসহ সেন পাড়া লিপি ভিলার সামনে অমিত বনিকের সাথে ফোনে কথা হয়। কিন্তু অমিত বণিক টাকার পরিমান কমাতে পারবেন না বলে পুনরায় ১০ লাখ টাকা দাবী কওে তার নাম মামলা থেকে বাদ দিয়ে সুরক্ষার নিশ্চিয়তা দেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে লিপি খান ভরসার পক্ষে কোতয়ালি থানায় মামলায় করতে আসেন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার পলাশ হাসান। এ সময় অভিযুক্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তা শিবলি কায়সার খবর পান যে অমিত বনিকের সঙ্গে তার নামেও চাঁদাবাজীর মামলা জাড়ানো হতে পারে। তা জানতে পেরে বিকেল ৫টার দিকে কোতোয়ালী থানায় আসেন উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শিবলি কায়সার। এ সময় থানায় আরেক উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) হাবিবুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। শিবলি কায়সার থানায় এসে পলাশ হাসানের ওপর চড়াও হন এবং বেধড়ক মারধর করেন। এক পর্যায়ে কর্তব্যরত কনস্টেবলের রাইফেল কেড়ে নিয়ে তাঁকে গুলি করতে উদ্যত হন।

Advertisement

শুধু তাই নয় এ সময় একজন পরিদর্শক পদবীর কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলার ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইওে চলে গেলে অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা তাকে নিবৃত করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোতয়ালী মেট্রোপলিটন থানার ওসি আতাউ রহমান।

(মোহাম্মদ শিবলি কায়সার)