‘সন্ত্রাসী ও যুদ্ধাপরাধীদের’ সঙ্গে ঐক্যের প্রস্তাব নাকচ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ‘ইতোমধ্যে সৃষ্টি হয়ে গেছে’।
রোববার বিকালে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আপনি কি মনে করেন না যে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এখন জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়ে গেছে? আমিতো মনে করি জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়ে গেছে।”
সেই সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যারা ‘পুড়িয়ে মানুষ মারে, অথবা যুদ্ধাপরাধ করে’, তাদের ‘কথা আলাদা’।
“যাদের ঐক্য হলে সত্যিকারভাবে সন্ত্রাস দূর করা যাবে, তাদের ঐক্য কিন্তু ঠিকই গড়ে উঠেছে এবং এই ঐক্য থাকবে। এটা হল বাস্তব,” বলেন শেখ হাসিনা।
নাম প্রকাশ না করে খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাপ হয়ে দংশন করে ওঝা হয়ে ঝাড়া’ আর চলবে না।
গুলশানে সন্ত্রাসী হামলার পর জঙ্গিবাদ ঠেকাতে খালেদা জিয়া দল-মত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানালে তার প্রতিক্রিয়ায় আগে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার শর্ত দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
বিএনপি সমর্থক পেশাজীবীদের কয়েকজনও ইতোমধ্যে স্বাধীনতাবিরোধী দলটির সঙ্গ ছাড়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসলে উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ বন্ধ হবে কি না- এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমারও মনে এই প্রশ্নই জাগে যে, তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসলে সন্ত্রাসবাদ বন্ধ হবে। অর্থাৎ, আলোচনা না করলে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে এটাই বলতে চাচ্ছে।
“তাদের সঙ্গে না বসলে তারা এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মদদ দিতে থাকবে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে এটাই- এটাই বোধহয় তারা বলতে চাচ্ছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো ছাড়াও গ্রাম পর্যন্ত কমিটি করা হয়েছে। ইমাম ও শিক্ষকদের মাধ্যমেও সচেতনতা সৃষ্টির কর্মসূচি চলছে।
এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আরও নানা ধরনের পদক্ষেপের কথাও সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন তিনি।
মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোরে সাম্প্রতিক এশিয়া-ইউরোপ (আসেম) শীর্ষ সম্মেলনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যমে এই সংবাদ সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।