স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর নির্যাতন মামলা

SHARE

প্রতীকী ছবি

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),গাইবান্ধা প্রতিনিধি, মঙ্গলবার   ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ২৫ ১৪৩১ :

গাইবান্ধায় স্ত্রী চন্দনা রাণী প্রতিমার (৩২) বিরুদ্ধে স্বামীকে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন রবিন্দ্রনাথ কর্মকার (৪২)। অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলার আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন সুন্দরগঞ্জ আমলী আদালতের বিচারক।

Advertisement

এদিকে, ঘটনাটি স্থানীয় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। অনেকেই বিষয়টিকে ব্যতিক্রমী মামলা হিসেবে দেখছেন, কারণ এ ধরনের ঘটনা সাধারণত পুরুষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হিসেবে উঠে আসে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে এই মামলাটি নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে সুন্দরগঞ্জ আমলী আদালতের বিচারক জান্নাতুল ইসলাম আসামির প্রতি এ সমন জারি করেন।

নির্যাতিত স্বামী রবিন্দ্রনাথ কর্মকার জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দত্তপাড়া এলাকার মৃত জোগেশ চন্দ্র কর্মকারের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদীর আইনজীবী গাইবান্ধা জেলা জজকোর্টের অ্যাডভোকেট আবেদুর রহমান সবুজ।

মামলার বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী জানান, দীর্ঘ ১৮ বছর আগে রবিন্দ্রনাথ কর্মকারের সঙ্গে একই উপজেলার বামনজল এলাকার সুরেশ চন্দ্রে মেয়ে চন্দনা রাণী প্রতিমার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সংসার জীবনে তাদের পায়েল কর্মকার (১৫) ও মুসকান কর্মকার (৭) নামের দুটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। বিয়ের পর থেকে সামান্য কিছু হলেই কাউকে কিছু না জানিয়ে যখন তখন বাপের বাড়ি চলে যায়। এরই এক পর্যায়ে রবিন্দ্রনাথ তার স্ত্রী চন্দনাকে আনতে গেলে ৩০ লাখ টাকা অথবা বাড়ির ভিটার ৩৫ শতাংশ জমি লিখে দিতে বলা হয়। রবিন্দ্রনাথ সংসার ও বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই চন্দনার নামে ১৩ শতক জমি ক্রয় করে দেন।

Advertisement

এরপর কিছুদিন ভালো থাকার পর আবার বাড়ি ভিটার জায়গা অথবা ৩০ লাখ টাকা দিতে হবে দাবি করতে থাকে। না হলে সংসার করবে না মর্মে মামলা করে জেল খাটাবে বলে হুমকি ও অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকে। সর্বশেষ চলতি বছরের ৯ মে বিকেলে টাকা, স্বর্ণ, বিভিন্ন আসবাসপত্রসহ কন্যাদের সঙ্গে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যায়। রবিন্দ্রনাথ তাকে বাড়িতে আনতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রবিন্দ্রনাথ বাদী হয়ে স্ত্রী চন্দনা, শাশুড়ি উর্মিলা রানী (৫৫) ও ভায়রা দীপু চন্দ্র কন্ঠক (৩৫) কে আসামি করে অভিযোগ করেন। পরে আদালত তা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।

রবীন্দ্র নাথ অভিযোগ করে জানান, স্ত্রী চন্দনা রানী প্রতিমা অত্যন্ত বদমেজাজি। জমি ও টাকার দাবি পূরণ না করলে সংসার করবেন না বলে হুমকি দেন। শুধু তাই নয়, আমাকে নিয়মিত মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন সহ্য করলেও শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়, চন্দনা রানী প্রতিমা প্রায়ই স্বামীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন। এমনকি স্থানীয়ভাবে বিষয়টি একাধিকবার সালিশে তোলার চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। স্বামীর পরিবার ও আত্মীয়দের সঙ্গেও তার আচরণ ছিল অসৌজন্যমূলক।

মামলার বিষয়ে বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবেদুর রহমান জানান, আদালত আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। নির্ধারিত তারিখে শুনানির মাধ্যমে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

এদিকে, ঘটনাটি স্থানীয় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। অনেকেই বিষয়টিকে ব্যতিক্রমী মামলা হিসেবে দেখছেন, কারণ এ ধরনের ঘটনা সাধারণত পুরুষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হিসেবে উঠে আসে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে এই মামলাটি নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা।

Advertisement