ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি, সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ || অগ্রহায়ণ ২৪ ১৪৩১ :
সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সামরিক বাহিনীকে সরে যাওয়ার নির্দেশ * বিদ্রোহীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, নির্বাচন চান দ্রুত * কুখ্যাত সেদনায়া কারাগার থেকে মুক্ত সাড়ে তিন হাজার বন্দি
Advertisement
একটি নতুন সূর্য, নতুন ভোর। মধ্যপ্রাচ্যে সূচনা হলো নতুন আরেকটি ইতিহাস। প্রায় ৫৩ বছরের পারিবারিক শাসনের অবসান ঘটেছে সিরিয়ায়। রোববার ভোরে সিরিয়ার কর্তৃত্ববাদী শাসক বাশার আল আসাদ বিদ্রোহীদের কাছে পরাজিত হয়ে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে অবশেষে দেশ ছেড়েছেন। বিদ্রোহী যোদ্ধারা তৃতীয় বৃহত্তম শহর হোমস দখলের পর কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই দামেস্কে ঢুকে পড়েন। এরপর কয়েক ঘণ্টা না যেতেই তারা আসাদ সরকারের পতন ঘোষণা করেন। খবর রয়টার্স, এএফপি, বিবিসি, আলজাজিরার।
বাশার আল আসাদ শনিবার স্থানীয় সময় রাত ৮টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই ভাষণ তিনি আর দিতে পারেননি। এরপর রোববার সকালে দেশ ছাড়তে হয় টানা ২৪ বছর ক্ষমতায় থাকা বাশারকে। বার্তা সংস্থা এএফপি ও রয়টার্স জানিয়েছে, ইসলামপন্থি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) দামেস্ক দখলের ঘোষণার মুখে পালিয়ে গেছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। তিনি সিরিয়া থেকে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। পরিবারের সদস্যরাসহ তিনি মস্কোয় অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস ও রিয়া নভস্তির বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মস্কোয় পৌঁছেছেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে রাশিয়া তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে।
এ বিষয়ে লন্ডনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ছেড়ে গেছে। এতে বাশার আল আসাদ থাকতে পারেন। উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের পর বিমানবন্দর থেকে সেনা সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয়। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংঘাতে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর বেশ কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনার পরই সিরিয়া ছেড়েছেন বাশার আল আসাদ। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা সিরিয়ার সব বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তিনি সিরিয়ার বিজয়ীদের সব জাতি ও সম্প্রদায়ের মতামতকে সম্মান জানানোর আহ্বান জানান।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, বাশার আল আসাদের ব্রিটিশ-সিরীয় স্ত্রী আসমা আসাদ এবং তাদের তিন সন্তান আগেই সিরিয়া ছেড়েছেন। সন্তানদের নিয়ে আসমা নভেম্বরের শেষদিকে রাশিয়ায় চলে যান। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট দপ্তরের বরাতে মে মাসে রয়টার্স জানিয়েছিল, ৪৮ বছর বয়সি আসমার লিউকেমিয়া (রক্ত বা অস্থিমজ্জার ক্যানসার) শনাক্ত হয়েছে। এ কারণে তিনি জনসমক্ষে কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রয়েছেন।
বাশার আল আসাদ টানা ২৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। এর আগে তার বাবা হাফিজ আল আসাদ টানা ২৯ বছর সিরিয়া শাসন করেন। বাশার আল আসাদের পালানোর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় ৫৩ বছরের আল আসাদ পরিবারের শাসনের অবসান হলো।
বাশার আল আসাদ পালানোর পর বিদ্রোহী গোষ্ঠী সিরিয়াকে ‘মুক্ত’ ঘোষণা করেছে। তারা জানিয়েছে, স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ দেশ ত্যাগ করেছেন। এইচটিএস রোববার টেলিগ্রাম বার্তায় জানিয়েছে, ‘বাথ শাসনের অধীনে ৫০ বছরের নিপীড়নের পরে, ১৩ বছরের অপরাধ ও অত্যাচার, (জোর করে) বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর আমরা আজ এই অন্ধকার সময়ের অবসান এবং সিরিয়ার জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা ঘোষণা করছি।’
বিদ্রোহীরা বলেছেন, আসাদের শাসনের অর্ধশতাব্দী যারা বাস্তুচ্যুত বা বন্দি হয়েছিলেন, তারা এখন ঘরে ফিরতে পারবেন। এইচটিএস বলেছে, এটি হবে একটি ‘নতুন সিরিয়া’, যেখানে ‘সবাই শান্তিতে বসবাস করবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।
Advertisement
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন, রেডিওসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এইচটিএস। সিরিয়ার সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সামরিক বাহিনীকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এইচটিএস প্রধান আবু মোহাম্মেদ আল জোলানি। তিনি বলেছেন, দামেস্কে অবস্থানরত সব বিরোধী বাহিনীকে সরকারি প্রতিষ্ঠান দখল করতে নিষেধ করা হয়েছে। দায়িত্ব হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত সিরিয়ার সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী আল জালালির অধীনেই থাকবে।
আসাদ সরকারের পতনের পর হোমস থেকে সেনাবাহিনী সরে যায়। এরপরই হাজারো বাসিন্দা উল্লাস করতে রাস্তায় নেমে আসে। তারা নেচে নেচে স্লোগান তোলেন, ‘আসাদ শেষ, হোমস মুক্ত’ এবং ‘সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক, বাশার আল আসাদ নিপাত যাক।’ বিদ্রোহীরা আকাশে গুলি ছুড়ে বিজয়ের উল্লাস প্রকাশ করে। তরুণরা ক্ষোভ প্রশমনে আসাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে। দামেস্কের কেন্দ্রস্থল উমাইয়াদ স্কয়ারে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদর দপ্তর অবস্থিত। এ এলাকার বাসিন্দারাও আসাদ পতনের উদ্?যাপনে অংশ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, উচ্চৈঃস্বরে গান বাজানো হচ্ছে এবং প্রায় এক ডজন মানুষ আসাদ বাহিনীর ফেলে যাওয়া ট্যাংক ঘিরে নাচছে।
প্রেসিডেন্ট বাশারের পতনের পর কাতারের দোহায় সিরিয়ার দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘স্বাধীনতার প্রথম প্রভাত এসেছে এবং সিরিয়া জুলুমের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে।’ এতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের জনগণ বহু বছর বর্ণনাতীত অমানবিকতার শিকার হয়েছে। তারা এরপরও সবচেয়ে গুরুতর অপরাধের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে মানব মর্যাদা ও জাতির সম্পদকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেননি।’
দুই সিনিয়র সেনা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, বিদ্রোহীরা সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ ছাড়াই রাজধানীতে ঢুকেছে। হাজার হাজার গাড়িতে এবং হেঁটে দামেস্কের প্রধান চত্বরে জড়ো হয়ে তারা স্বাধীনতার স্লোগান দিচ্ছিলেন।
বিদ্রোহীরা ঘোষণা করেছেন, তারা রাজধানীর উত্তরে কুখ্যাত সেদনায়া সামরিক কারাগারে ঢুকে সেখানে থাকা বন্দিদের মুক্ত করেছেন। বিদ্রোহীরা বলেন, আমরা সিরিয়ার মানুষকে একটি সুসংবাদ জানিয়ে উদ্যাপনে মেতে উঠতে চাই। বন্দিদের শৃঙ্খল খুলে মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। আমরা সেদনায়া কারাগারে অন্যায়ভাবে মানুষকে বন্দি রাখার কালো যুগের অবসান ঘোষণা করছি। দামেস্কের শহরতলির সেদনায়া কারাগারে আসাদ সরকার হাজারো মানুষকে বন্দি রেখেছিল। এ কারাগারকে একসময় জাতিসংঘ ‘মানব জবাইখানা’ হিসাবে উল্লেখ করেছিল। এখানে হাজার হাজার বিরোধী সমর্থকের ওপর নির্যাতন ও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এইচটিএস তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক ঘোষণায় জানিয়েছে, বন্দিদের মুক্ত করা হয়েছে এবং একে সেদনায়ার ‘অন্যায়ের যুগের সমাপ্তি’ বলে তারা অভিহিত করেছেন। বিদ্রোহী কমান্ডার হাসান আবদুল ঘানি এক্সে এক পোস্টে বলেন, সেদনায়া কারাগার থেকে সাড়ে তিন হাজারের বেশি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সিরিয়ার জনগণের উদ্দেশে বিদ্রোহীদের প্রথম বিবৃতিতে ‘দামেস্ক শহর মুক্ত হয়েছে’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি বিদ্রোহীদের পক্ষে এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আজ স্বৈরাচার বাশার আল আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। দামেস্কের সব কারাবন্দি মুক্তি পেয়েছেন। আমরা আমাদের যোদ্ধা এবং নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যাতে তারা সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি রক্ষা ও সংরক্ষণ করেন। সিরিয়ার জয় হোক।’
এদিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে এইচটিএস। বিদ্রোহীদের রাজধানী দখল এবং প্রেসিডেন্ট আসাদের পালিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
দ্রুত নির্বাচন চান প্রধানমন্ত্রী : সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজী আল জালালি বিদ্রোহীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান কার্যকর করার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। গাজী আল জালালি বলেছেন, তিনি বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন না এবং তিনি নিশ্চিত করতে চান যে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেন কার্যকর থাকে। আল জালালি বলেন, ‘আমি সবাইকে যুক্তিসংগতভাবে ভাবতে এবং দেশের কথা চিন্তা করার আহ্বান জানাই। আমরা বিরোধীদের প্রতি হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি, যারা তাদের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এবং নিশ্চিত করেছেন যে, তারা এ দেশের কারও ক্ষতি করবেন না।’
এদিকে আল আরাবিয়া চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দ্রুত নির্বাচনের দাবি করেছেন গাজি আল জালালি। তিনি বলেছেন, দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি বিদ্রোহী কমান্ডার আবু মোহাম্মদ আল জাওলানির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। তাদের আলোচনায় ক্ষমতা হস্তান্তর ও অন্তর্বর্তী সময় নিয়ে কথা হয়েছে। রোববার সকালে আল আরাবিয়া চ্যানেল প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেছে, বাশার আল আসাদের সঙ্গে তার সর্বশেষ যোগাযোগ হয়েছে ‘গতকাল সন্ধ্যায়’। আসাদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে তার কাছে কোনো তথ্য নেই।
এদিকে রোববার ভোরে প্রধানমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক বক্তব্যে বলেছেন, তিনি জনগণের জন্য সর্বোত্তম কাজটি করতে প্রস্তুত। আল জালালি বলেন, তিনি দামেস্কে অবস্থান করছেন এবং জনগণের জন্য যা ভালো তা করতে সহায়তা করতে প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, সিরিয়া একটি স্বাভাবিক দেশ হতে পারে, যা তার প্রতিবেশী দেশগুলো এবং বিশ্বের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে পারে।
দেশে ফিরতে সীমান্তে সিরীয়দের ভিড় : আসাদের পতনের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মানুষজন সীমান্তে জড়ো হচ্ছে। তারা অপেক্ষা করছেন কখন সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে, তারা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে পারবেন। তাদের মধ্যে অনেকেই দামেস্কের আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। তারা আসাদ সরকারের কারণে নিজের বাড়িতে এতদিন ফিরতে পারেননি।
২০১১ সালে আরব বসন্তের জেরে সিরিয়ার বিক্ষোভ শুরু হয়। ক্রমে তা রূপ নেয় গৃহযুদ্ধে। রাশিয়া আর ইরানের সমর্থনপুষ্ট আসাদ ক্ষমতা অনেকটা সংহত করে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া নতুন লড়াইয়ে একের পর এক বড় বড় শহরের নিয়ন্ত্রণ হারায় সেনাবাহিনী।
১৯৭০ সালে সামরিক বাহিনীর জেনারেল হাফিজ আল আসাদ সিরিয়ায় ক্ষমতা দখল করেন। হাফিজ শক্ত হাতে তিন দশকের বেশি সময় সিরিয়া শাসন করেন। তিনি সিরিয়াকে ক্রমেই মুক্তবাজার অর্থনীতির দিকে নিতে থাকেন। ২০০০ সালে তার মৃত্যু হয়। এরপর থেকে হাফিজ আল আসাদের ছোট ছেলে বাশার আল আসাদ প্রায় দুই যুগ স্বৈরাচারী কায়দায় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখেন।
আসাদের বাসভবনে লুটপাট, সিরীয়দের উল্লাস : সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পালিয়ে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে জনতা। এদিকে, আসাদের পতনে কেবল সিরিয়াতেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও সিরীয়রা উল্লাসে মেতেছে।
দামেস্ক থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জানিয়েছেন, আসাদের পালিয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই দামেস্কের রাজপথে নেমে উল্লাসে মেতে ওঠে সিরিয়াবাসী। এর মধ্যেই দলে দলে মানুষ আসাদের প্রাসাদে ঢুকে প্রায় সবই লুট করে নিয়ে গেছে। তছনছ করে দিয়েছে গোটা ভবন।
লুটপাট চালানো এই মানুষদের বেশির ভাগই এসেছে গ্রামাঞ্চল থেকে। তারা প্রতিশোধের আগুন নিয়ে প্রসাদের দিকে ছুটে যাচ্ছে। আর সেখানে ঢুকতে পেরে আনন্দে ফেটে পড়ছে। ভেতরের পরিস্থিতি খুবই বিশৃঙ্খল।
মানুষজন ভেতরে যাচ্ছে। হাতে করে যা পারে তাই-ই নিয়ে যাচ্ছে।
Advertisement
সিরিয়ার বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও সিরীয়রা এই উল্লাসে একাত্মতা প্রকাশ করে রাস্তায় নেমেছে। বার্লিনে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে নগরীর বিভিন্ন স্থানে পতাকা উড়িয়ে উল্লাস করেছে। তুরস্কের ইস্তাম্বুলেও সিরীয়রা ‘সিরিয়ার বিপ্লবের সঙ্গে একাত্মতা’ প্রকাশ করে রাস্তায় নেমে উল্লাস করেছে। একই দৃশ্য দেখা গেছে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতেও।