গাজীপুরে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ (ভিডিও)

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি) ,গাজীপুর প্রতিনিধি , সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ :

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৪নং ওয়ার্ডের হাজীপুকুর-জাঝড় বাইপাস সড়ক নির্মাণে জোরপূর্বক বাউন্ডারি ওয়াল ভাংচুর ও জমি দখল করে ড্রেন নির্মাণের অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

Advertisement

মামলায় বিবাদী করা হয়েছে সিটি কর্পোরেশনের ৩৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো জাহাঙ্গীর হোসেন ও ওই ওয়ার্ডের সচিবসহ অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জনকে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, গাজীপুরে আলী হোসেনের পক্ষে মামলাটি করেন হোসেন গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির মহাব্যবস্থাপক মো. ফজলুল হক। পরে প্রথম পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক ওই নালিশি জমিতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করেন।

বাদী পক্ষের অভিযোগ, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিবাদী পক্ষ জোরপূর্বক জমি দখল করে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে। বাদী মো. ফজলুল হক মামলার আরজিতে বলেন, বিবাদীরা প্রচলিত আইন-কানুনের কোনো ধার ধারেন না। কোনোভাবে অন্যের বিষয়-সম্পত্তির ওপর অন্যায়ভাবে চাপ প্রয়োগ করে অর্থ আত্মসাৎ করাই তাদের নেশা। আরজিতে আরও বলা হয়, ১৯৮১ সালের ২৩ জুন টঙ্গী সাবরেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত ২৫৫নং এবং ১৯৮১ সালের ১৭ আগস্ট ৩১৯৬ ও ৪৩৬৯ নং দলিলে ক্রয়সূত্রে ওই প্লটের মালিক হন হোসেন গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান আলী হোসেন।

পরে ওই প্লটের দক্ষিণ পাশে মসজিদ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে শর্তহীনভাবে জায়গা দেয়া হয়। পরবর্তীতে মসজিদের উত্তর ও প্লটের দক্ষিণ পাশ দিয়ে রাস্তা নির্মাণের জন্য ১৬০ ফিট লম্বা ও প্রায় ১৫ ফিট প্রশস্ত (কমবেশি) জায়গা জনস্বার্থে ছেড়ে দেয়া হয়। যে জমির পরিমাণ ১.৩৫ কাঠা। পরে প্লটের দক্ষিণ পাশ দিয়ে প্রায় দশ লাখ টাকা খরচ করে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে।

আরজিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্র ও সমাজ উন্নয়নের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে কোনো বাধা নেই। রাষ্ট্র বা সমাজের কার্যক্রম উন্নয়নে পদ্ধতি আছে। জায়গার বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান আছে। জনস্বার্থে ওই উন্নয়নের জন্য জমির মালিকের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ না করে বিনা নোটিশে সীমানা প্রাচীর ভাঙার হুমকি দেয়া হয়। ১৯ জানুয়ারি শনিবার সকাল ৮টার দিকে বুলডোজার, হেমার ও শাবলসহ যন্ত্রপাতি নিয়ে দ্বিতীয় পক্ষের ১০০ থেকে ১৫০ জন লোক দেয়াল ভাংচুর করে ৩০ ফুট রাস্তা নির্মাণ করতে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। পরবর্তীতে দেয়াল ভেঙে ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়।

Advertisement

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ওই জমির পূর্বপাশের জমিতে একজন বিদেশিসহ কয়েকজন শ্রমিক ড্রেন নির্মাণের কাজ করছে। এছাড়া কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ ছাড়াই অনেকের পাকা বিল্ডিং, দোকান, মার্কেট, ঘর-বাড়ি ভাঙা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বা কষ্ট থাকলেও মুখ খুলে প্রকাশ্যে কিছু বলাতে পারছেন না।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন গাছা থানার ওসি মো. ইসমাইল হোসেন জানান, হাজীরপুকুর-জাঝড় বাইপাস সড়ক নির্মাণ কাজের বিরুদ্ধে আদালতের একটি আদেশ থানায় এসেছে। আদেশের দখলীয় প্রতিবেদন দেবেন এসি ল্যান্ড (টঙ্গী রাজস্ব সার্কেল) এবং শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আমাকে (ওসি গাছা) বলা হয়েছে। আদেশের কপি পেয়ে আমি সরেজমিন নোটিশ জারি করেছি।

এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এলাকার উন্নয়নে জমির মালিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে জমি ছেড়ে দিয়েছে। ঘর-বাড়ি নিজ খরচে ভেঙে দিয়েছে। কারো জমি জোরপূর্বক দখল বা ভাংচুর করা হয়নি। এছাড়া ওই সড়কে যাদের জমি, ঘর-বাড়ি পড়েছে তারা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে তার বাসায় কয়েকবার বসেছিলেন। সবার সম্মতিতেই রাস্তাটি প্রশস্ত করা হচ্ছে।

Advertisement

মামলায় ৩৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে বিবাদী করা হলেও তিনি আদালতের আদেশের কপি পাননি বলে যুগান্তরকে জানিয়েছেন।