সাপের সঙ্গে নাচতে পারলেই খুশি সাপুড়ে মিনু ঢালী! (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),শরীয়তপুরের জেলার ভেদরগঞ্জ  প্রতিনিধি,শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১ : রীতিমতো তাজ্জব ব্যাপার! বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার নিয়ে যেখানে দেশের একটি বড় অংশের মানুষরা আতঙ্কে আছেন তখন এক ব্যক্তি সাপের সঙ্গে রীতিমতো সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। যে কোনো ধরনের সাপকেই নিমিষেই বশে আনতে পারেন তিনি। অনায়াসে হানা দিতে পারেন সাপের বাসাতেও।

Advertisement

বলা হচ্ছে সাপুড়ে মিনু ঢালীর কথা। ৫৫ বছর বয়সি ঢালীর বাড়ি শরীয়তপুরের জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার ডিমএম খালী ইউনিয়নের কাজী কান্দি গ্রাম। পেশায় একজন কৃষক হলে ঢালী এখন পর্যন্ত দশ হাজারের বেশি সাপ উদ্ধার করেছেন। আর এখন রাসেলস ভাইপারেই ব্যস্ত বেশি তিনি।

প্রায় ৩৬ বছর আগে সাপ ধরার কৌশল রপ্ত করেন মিনু ঢালী। এরপর থেকে কোথাও সাপ দেখা গেলে মিনু ঢালীর ডাক পড়ে। মিনু ঢালীও দক্ষতার সঙ্গে সাপ উদ্ধার করে মানুষকে আতঙ্কমুক্ত করেন। একই সঙ্গে তিনি সাপের খেলা দেখিয়ে ছেলে-বুড়ো সবাইকে আনন্দ দিয়ে থাকেন। সাপ তার কাছে খেলার মতোই।

dhali 2

এই বর্ষায় শরীয়তপুরের চরাঞ্চলে বেড়েছে সাপের উপদ্রব। সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে রাসেলস ভাইপার। তবে আশপাশের এলাকার মানুষের কাছে এখন ভরসার নাম সাপুড়ে মিনু ঢালী। প্রতিদিন একাধিক সাপ উদ্ধার করে চরের বাসিন্দাদের অনেকটাই আতঙ্ক মুক্ত করেছেন এই  কৃষক।

Advertisement

সাপ উদ্ধার করতে গিয়ে মিনু ঢালী একাধিকবার বিষধর কোবরা-কেউটেসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপের ছোবলও খেয়েছেন। তবে তাঁকে কাবুল করতে পারেনি সাপ। উল্টো সাপের উপর চড়াও হয়ে ধরে ফেলেন। সাপের সঙ্গে এখন হেসে খেলে মজাও করতে পারেন মিনু ঢালী, তা দেখতে মানুষজন ভিড়ও করে।

সাপুড়ে ঢালী বলেন, গেল পাঁচ বছরে সখিপুরে রাসেলস ভাইপারসহ বিষধর বিভিন্ন প্রজাতির সাপের উপদ্রব বেড়েছে। এসব সাপ মানুষের বসত-বাড়িসহ ফসলি জমিতে বাস করে। সাপ দেখে মানুষ ভয় পেয়ে আমাকে মোবাইলে খবর দিলে আমি গিয়ে সাপ উদ্ধার করে দেই।

dhali 3

তিনি জানান, এ বছরই রাসেলস ভাইপারসহ বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক সাপ ডিমসহ উদ্ধার করেছেন তিনি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে সাপ উদ্ধার করেছেন তিনি। সাপের কামড়ে যখন মানুষ মারা যায়, তখন তার খুব খারাপ লাগে। দাই  সাপ ধরে সাপের সঙ্গে কোমর দুলিয়ে নাচতে পারলেই তিনি খুশি।

তিনি আরো বলেন, অনেক সময় বিষাক্ত সাপের ছোবলও খেয়েছি। আমি নিজের চিকিৎসা নিজেই করেছি। বর্তমান সময়ে কৃষিকাজ রেখে প্রায় প্রতিদিনই সাপ উদ্ধার করে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। সাপ উদ্ধারের পর আমার গাড়ি ভাড়া ও সম্মানী হিসেবে কেউ এক হাজার আবার কেউ দুই হাজার টাকা দেয়।

মিনু ঢালী জানান, সাপ উদ্ধারের পর সাপের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হয়। এরপর যারা সাপের খেলা দেখায়, তাদেরকে সাপগুলো দিয়ে দেন। তার উদ্ধার করা একটি সাপ ভেনম রিসার্চ সেন্টারে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সাপের উপদ্রব বাড়লেও ভয়ের কিছু নেই, সচেতন থাকলেই কোন ভয়ও থাকে না।

Advertisement

সখিপুরের চরাঞ্চলের বাসিন্দারা জানান, বছরের পর বছর ধরে তাদের এলাকায় সাপের উপদ্রব থেকে তাদের মতে, মিনু ঢালী যদি সখিপুরের বাসা-বাড়ি ও ফসলি জমি থেকে সাপ উদ্ধার না করতো, তাহলে আরও বহু মানুষের প্রাণহানি হতে পারতো। তাই তাদের ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন সাপুড়ে মিনু ঢালী।