মুনাফিকদের জানাজা না পড়ার নির্দেশ (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),ইসলামী প্রতিনিধি  ,শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ : ৮৪. তাদের (মুনাফিকদের) মধ্যে কারো মৃত্যু হলে তুমি কখনো তার জন্য জানাজার নামাজ পড়বে না এবং তার কবরের পাশে দাঁড়াবে না। [সুরা : তাওবা, আয়াত : ৮৪ (প্রথমাংশ)]

Advertisement

তাফসির : আলোচ্য আয়াতে মহানবী (সা.)-কে মুনাফিকদের জানাজা না পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই আয়াত মদিনার মুনাফিকদের সরদার আবদুল্লাহ বিন উবাই বিন সালুলের মৃত্যু ও তার জানাজা সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। বিশুদ্ধ হাদিসের আলোকে প্রমাণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) তার জানাজার নামাজ আদায় করেছেন।

নামাজ পড়ার পরই এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। এরপর আর কখনো তিনি কোনো মুনাফিকের জানাজার নামাজ পড়েননি।

 

আলোচ্য আয়াতের অবতরণ প্রেক্ষাপট

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, যখন আবদুল্লাহ বিন উবাই বিন সালুল মারা যায়, তখন তার পুত্র আবদুল্লাহ (তিনি নিষ্ঠাবান সাহাবি ছিলেন) মহানবী (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে নিবেদন করে, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আপনার জামাটি দান করুন, যাতে আমি তা আমার পিতার কাফন হিসেবে পরিধান করাতে পারি।’ রহমতের নবী নিজের জামা মুবারক দিয়ে দেন।

তারপর আবদুল্লাহ নিবেদন করল, ‘আপনি তার জানাজার নামাজও পড়াবেন।’ সাহাবির সন্তুষ্টির জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) তাও কবুল করেন। জানাজার নামাজ আদায় করার পর আলোচ্য আয়াত অবতীর্ণ হয়। (মুসলিম শরিফ)

Advertisement

কাফির, মুনাফিক ও মুরতাদের জানাজার বিধান

মানুষের মৃত্যু-পরবর্তী তার লাশকেন্দ্রিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় ওই ব্যক্তির মৃত্যুর আগের বিশ্বাস অনুযায়ী।

এ বিষয়ে সব ধর্মের স্বতন্ত্র বিধিবিধান রয়েছে। কোনো ধর্মই তার অনুসারীর লাশের ওপর অন্য ধর্মের বিধিবিধান প্রয়োগের অনুমতি দেয় না। ইসলাম ধর্ম মতে, এমন মৃত ব্যক্তির জানাজা পড়া ফরজে কিফায়া, যিনি মুসলমান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। মুসলমান পরিবারের কোনো সদস্য যদি আল্লাহ ও রাসুলকে অস্বীকার করে অথবা আল্লাহ ও তাঁর রাসুল, কোরআন শরিফ বা শরিয়তের অকাট্য কোনো বিধিবিধান অস্বীকার করে কিংবা তা নিয়ে কটূক্তি করে, তবে সে মুরতাদ ও কাফির। এমন অবিশ্বাসী ও মুরতাদের জানাজায় অংশগ্রহণ করা, জানাজায় ইমামতি করা হারাম।
একইভাবে যে প্রকাশ্যে নিজেকে মুসলমান বলে, কিন্তু বাস্তবে সে কাফির, ইসলামের পরিভাষায় এমন ব্যক্তিকে মুনাফিক বলা হয়। কোনো মুনাফিকের মুনাফিকি যদি প্রকাশ পায় এবং তা যদি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়, তাহলে তার জানাজা পড়ার সুযোগ নেই। মুসলমানদের কবরস্থানে তার দাফন করারও সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে সব যুগের সব মুফতি একমত।

Advertisement

সাধারণ যুক্তিতেও দেখা যায়; অমুসলিম, অবিশ্বাসী, মুরতাদদের মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা, তাদের জানাজা পড়া এবং তাদের জন্য দোয়া করা অন্যায় ও অযৌক্তিক। কেননা জীবদ্দশায় তারা যা ঘৃণা করত, অবিশ্বাস করত বা যা নিয়ে কটাক্ষ করত, সে বিষয়গুলো মৃত্যুর পর তাদের ওপর আরোপ করা জাগতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অন্যায়। এটা তো তাদের ‘বিশ্বাসে’র অবমাননা ছাড়া আর কিছুই নয়। ইমাম আহমদ (রহ.) মুসলমানদের কবরস্থানে অমুসলিম, অবিশ্বাসী ও মুরতাদদের সমাহিত না করার তাত্পর্য বর্ণনা করে বলেছেন, ‘মুসলমানদের কবরস্থানে তাদের দাফন করা যাবে না, যাতে মৃত মুসলমানদের আত্মা এদের কারণে কষ্ট অনুভব না করে।’ (আল-মুগনি, ইবনে কুদামা ৩/৫১৩)

গ্রন্থনা : মাওলানা কাসেম শরীফ