ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),টাঙ্গাইলের বাসাইল প্রতিনিধি,বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ : টাঙ্গাইলের বাসাইলের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আজ ২০ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অদালতের বিচারক মো. মাহমুদুল মোহসীন এ আদেশ দেন।
Advertisement
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২১ জুন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী বাদী হয়ে বাসাইলের সাবেক ওই ইউএনওর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। আদালত এ মামলায় পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর মো. মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে ৩৯৩ ধারা প্রমাণিত হয়েছে মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। এর আগে গত মাসের ১৭ তারিখ তিনি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। আজ আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এ সময়ও তিনি অনুপস্থিত থাকায় আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
Advertisement
এর আগে ওই কলেজছাত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি লিখিত অভিযোগে বলেন, ২০২১ সালে বাসাইলের ইউএনও মো. মনজুর হোসেনের সঙ্গে তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। বিয়ের কথা বলে ইউএনও তাঁর সরকারি বাসভবনে ডেকে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন। পারিবারিকভাবে তাঁর (ছাত্রীর) বিয়ে অন্য জায়গায় ঠিক হলে, তিনি (ছাত্রী) বিয়ের জন্য ইউএনওকে বলতে থাকেন। ইউএনও বিয়ের কথা বলে তাঁকে বাড়ি থেকে চলে আসতে বলেন এবং টাঙ্গাইল শহরের পাওয়ার হাউসের কাছে একটি বাসা ভাড়া নেন। সেই বাসায় তাঁরা দুই মাস থাকেন।
Advertisement
এ ছাড়া, ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে বেনাপোল হয়ে তাঁকে (ছাত্রীকে) নিয়ে ইউএনও ভারতের কলকাতায় যান। সেখান থেকে উড়োজাহাজে করে হায়দ্রাবাদে যান। সেখানে তাঁরা দুজন চিকিৎসা নেন। পাসপোর্ট দেখে তিনি জানতে পারেন মনজুর হোসেন বিবাহিত। সেখানে থাকার সময় তাঁর মুঠোফোন থেকে দুজনের ভিডিও ও কথোপকথন মুছে ফেলেন ইউএনও। ভারতে ১২ দিন অবস্থানের পর ৫ অক্টোবর তাঁরা দেশে ফিরে আসেন। তারপর থেকে ইউএনও তাঁকে এড়িয়ে চলতে থাকেন।
Advertisement
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় বিষটি জেলা প্রশাসনকে তদন্তের নিদের্শ দেয়। পরে জেলা প্রশাসন গত বছরের ৭ এপ্রিল ওই কলেজছাত্রী, সাবেক ইউএনও মো. মনজুর হোসেন, তাঁর গাড়িচালক বুলবুল মোল্লাসহ ছয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে প্রতিবেদনটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠায়।
Advertisement
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম রিপন বলেন, আদালত আজ এ মামলায় বাদীর সাক্ষী গ্রহণ করেছেন। ওই সময় বিবাদী মনজুর হোসেন আদালতে অনুপস্থিত থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী ২০২২ সালের ২১ জুন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলি আদালতে মামলা করেন। এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ইউএনও মো. মনজুর হোসেনকে বাসাইল থেকে ঢাকায় বদলি করা হয়। সর্বশেষ তিনি নদী রক্ষা কমিশনের উপপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কলেজছাত্রীর অভিযোগের বিষয়টি গণমাধ্যমে এলে এবং মন্ত্রিপরিষদের তদন্তের তাঁর দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।