মো. মামুন ইসলাম (৩০), একজন ওয়ার্কশপ কর্মচারী হলেও ফেসবুকে পরিচয় দিতেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে। এ পরিচয়ে ৫০ এর অধিক তরুণীর সঙ্গে গড়ে তোলেন প্রেমের সম্পর্ক। ভিডিওকলে কথা বলার সময় স্ক্রিন রেকর্ড করে পরবর্তীসময়ে নগ্ন ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে তরুণীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি।
Advertisement
এমন একজন তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে দিনাজপুরের খানসামা থানাধীন আমতলী বাজার এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার ইনভেস্টিগেশন ও অপারেশনস টিম। তার কাছ থেকে পাঁচটি নকল নিকাহনামা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রশাসনিক কর্মকর্তার বদলির ভুয়া অফিস আদেশের অনুলিপি ও দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম।
মামুনের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, মামুনের আসল নাম মো. মমিনুল ইসলাম। তিনি প্রতারণার মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় ১২ নারীকে বিয়ে করেছেন। বিয়ে করা সবার কাছ থেকে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তার মোবাইল ফোনে ৫০ এর অধিক মেয়ের সঙ্গে ভিডিওকলে কথোপকথন ও অসংখ্য ন্যুড ভিডিও পাওয়া গেছে।
এস এম আশরাফুল আলম বলেন, মামুন কখনো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী উপ-সচিব, কখনো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, কখনো ব্যাংক কর্মকর্তা আবার কখনো ইঞ্জিনিয়ার পরিচয়ে একাধিক চাকরিজীবী ও সাধারণ তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। পরে ওই তরুণীদের সুবিধাজনক স্থানে বদলি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে বিদেশ গমনসহ নানান সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ করতেন।
‘নিজের আসল পরিচয় গোপন করে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতেন মামুন। ইন্টারনেট বা ফেসবুক থেকে তার শরীর ও চেহারার সঙ্গে মিলে যায় এমন শারীরিক গঠনের মুখে মাস্ক পরা কিংবা মুখাবয়ব অস্পষ্ট এমন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ছবি নিজের ছবি হিসেবে ব্যবহার করে নারীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন তিনি।’